আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইউক্রেনের শক্তিশালী গোয়েন্দা সংস্থা এসবিইউ-এর ২৮ সদস্যকে বহিস্কার করার কথা জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
সোমবার এ কথা জানান জেলেনস্কি। এর একদিন আগেই (রোববার) এসবিইউয়ের প্রধান ইভান বাকানভ ও প্রসিকিউটর জেনারেল ইরিনা ভেনেদিকতোভাকে দায়িত্ব থেকে বরখাস্ত করে দেন জেলেনস্কি।
কি কারণে জেলেনস্কি এমন সব সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা নিয়ে চলছে আলোচনা।
তবে এসবিইউয়ের বাকানভ ও ভেনেদিকতোভার বিরুদ্ধে জেলেনস্কির অভিযোগ, তাদের অধীনে কাজ করা ৬০ জনের বেশি কর্মকর্তা নানা সময়ে রাশিয়ার সঙ্গে যোগসাজশ করেছে। প্রসিকিউটর জেনারেলের কার্যালয়, তদন্তকারী সংস্থা ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ ও রাশিয়াকে সহযোগিতা করার ঘটনায় ৬৫১টি মামলা করা হয়েছে।
এদিকে এই দুই কর্মকর্তার পরিচয় কি আর কেনই বা তাদের বরখাস্ত করা হলো এবং এ ঘটনা ঘিরে ভবিষ্যতে কী হতে যাচ্ছে, তা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, জেলেনস্কির বাল্যবন্ধু ৪৭ বছর বয়সি ইভান বাকানভ। প্রেসিডেন্টের ব্যবসার সাবেক অংশীদারও তিনি। টেলিভিশন অভিনেতা হিসেবে কাজ করার সময় জেলেনস্কির মিডিয়া ব্যবসা সামলাতেন ইভান বাকানভ। এমনকি তার প্রেসিডেন্ট হয়ে ওঠার পেছনে প্রচার-প্রচারণার মূল দায়িত্বে ছিলেন এই বাল্যবন্ধু। বাকানভকে ২০১৯ সালের আগস্টে এসবিইউয়ের প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেন জেলেনস্কি।
এমন পরম বন্ধুকেও ছাড় দেননি জেলেনস্কি। ইভান বাকানভ বাহিনীর সদস্যরা গোপনে রাশিয়াকে সহায়তা করেছে – এ কারণে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
অপরদিকে জানা গেছে, ৪৩ বছর বয়সি ইরিনা ভেনেদিকতোভা ইউক্রেনের প্রথম নারী প্রসিকিউটর জেনারেল। রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের প্রমাণ জোগাড়ে তার প্রচেষ্টা আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসা কুড়িয়েছে। ২০২০ সালে তাকে যখন নিয়োগ দেওয়া হয়, তখন প্রসিকিউটর জেনারেলের অফিসের নানা অদক্ষতা ও দুর্নীতি সামাল দিতে সংস্কার আনার দায়িত্ব পেয়েছিলেন তিনি।
তাকে বহিষ্কারের কারণ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান আটলান্টিক কাউন্সিলের ইউরেশিয়া সেন্টারের গবেষক ডগ ক্লাইন মনে করেন, ভেনেদিকতোভার ওপর প্রসিকিউটর জেনারেলের কার্যালয়ে সংস্কার আনার যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তা পালন করতে তিনি ব্যর্থ হয়েছেন।
তার ভাষ্য, তদন্ত পরিচালনা করতে গিয়ে ঘুষ নিয়েছিলেন ভেনেদিকতোভা অধীনস্থ কর্মকর্তাদের অনেকে। সেখানে তিনি বাধা দেননি।
বাকানভের বিষয়ে গবেষক ডগ ক্লাইন আলজাজিরাকে বলেন, গত ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার অভিযানের শুরু থেকে ইউক্রেনের গোয়েন্দাপ্রধানের ওপর আস্থা হারিয়েছিলেন জেলেনস্কি।
জেলেনস্কির দাবি, ইউক্রেনের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর শীর্ষ কর্মকর্তাদের যারা রাশিয়ার সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন, তাদের একজন ইভান বাকানভ।
তবে বরখাস্ত হওয়া দুজনকে নিয়ে এখন তদন্ত চলছে।
আলজাজিরার প্রতিবেদক অ্যালান ফিসার বলছেন, ওই দুজন সক্রিয়ভাবে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে কাজ করছিলেন কি না, তা এখনো জানা যায়নি। সবকিছু নির্ভর করছে তদন্তে কী বেরিয়ে আসে, তার ওপর।
অভিযোগের সত্যতা মিললে এই দুই কর্মকর্তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে চাকরি থেকে সরিয়ে দিতে পার্লামেন্টে প্রস্তাব আনতে পারেন জেলেনস্কি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।