জুমবাংলা ডেস্ক: মনে করুন আপনার মায়ের প্রচুর জায়গা জমি আছে, তার মৃত্যুর পর সে সম্পত্তির উত্তরাধিকার আপনি না, বরং তা পাবে আপনার খালা, মামাতো বোন, খালাতো বোন বা মায়ের বংশের অন্যান্য আত্মীয়রা। খবর-বিবিসি বাংলা।
শুনতে অবাক লাগলেও, বাংলাদেশের গারো সমাজের সম্পত্তি উত্তরাধিকারী হওয়ার নিয়মটা এমনই। যেখানে মেয়েরাই পরিবারের প্রধান, সম্পত্তির মালিক এবং বিয়ের পর পুরুষরা এসে ওই নারীর ঘর সংসার করবেন।
প্রাচীনকাল থেকে গারো সমাজের এই রীতি চলে আসছে, ফলে কারও বাড়িতে গেলে আপনি দেখতে পাবেন, মা আর মেয়েরা তাদের স্বামী নিয়ে সংসার করছেন, ভাই বা ছেলেকে অন্য গ্রামের কোন মেয়ে বিয়ে করে নিয়ে গেছে।
প্রশ্ন জাগতে পারে প্রাচীনকাল থেকে কেন এই রীতি মেনে আসছেন গারো সমাজের লোকজন?
গারোদের নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করা উন্নয়ন কর্মী ও চিকিৎসক ডাক্তার রুৎ লুসি দারিং জানান, আদিকাল থেকেই গারো পুরুষেরা শিকারের জন্য বনে জঙ্গলে ঘুরে বেড়াতো, অনেকে আর ফিরে আসতেন না। ফলে নারীদেরকেই সংসার ও সম্পত্তির দেখাশোনা, চাষাবাদ করাসহ সব কাজ করতে হতো।
এভাবেই মাকে কেন্দ্র করে গারো সমাজের মাতৃতান্ত্রিক পারিবারিক ব্যবস্থা গড়ে উঠে। যেখানে পুরুষরা বিয়ে করে স্ত্রীর সংসার করবে। তাদের সন্তানেরা বেড়ে উঠবে মায়ের পরিচয়ে। স্বামী তার স্ত্রীর সম্পত্তি রক্ষার দায়িত্ব পালন করবে।
যেহেতু গারোদের জীবিকা অন্যতম মাধ্যম চাষাবাদ, আর পুরুষরা সম্পত্তির উত্তরাধিকার হন না তাই বাধ্য হয়েই তারা বিয়ের পর স্ত্রীর বাড়িতেই ঘর সংসার করেন।
তবে বর্তমানে বিয়ে করে বউয়ের বাড়িতে জামাই হিসেবে যাওয়ার রীতি কমে আসছে। অনেক গারো পুরুষই বিয়ের পর স্ত্রীকে মায়ের বাড়িতে নিয়ে আসছেন। কারণ কৃষি কাজ ছেড়ে অনেকে এখন বিভিন্ন শহরে চাকরি করে উপার্জন করছেন, চাষাবাদ করার জন্য স্ত্রীর জমির উপর নির্ভর করতে হচ্ছে না।
তবে যে কোন গারো পুরুষ বিয়ে করে স্ত্রীকে ঘরে তুলতে চাইলে মায়ের অনুমতি নিতে হয়, এবং কিছু সম্পত্তি মায়ের কাছ থেকে লিখে নিতে হয়। তা না হলে মায়ের মৃত্যুর পর সম্পত্তি বোনদের দখলে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
চিকিৎসক ডাক্তার রুৎ লুসি দারিং মনে করেন বিভিন্ন সংস্কৃতির মানুষের সাথে মেলামেশার পরে গারো পুরুষরা ঘর-জামাই হয়ে থাকতে সংকোচ বোধ করে, এই কারণেও গারোদের মাতৃতান্ত্রিক পারিবারিক প্রথায় ছেদ পড়ছে।
পুরনো দামে তেল বিক্রি করে ডিপো খালি, প্রশংসায় ভাসছেন ফিলিং স্টেশনের মালিক
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।