জুমবাংলা ডেস্ক : গাইবান্ধার সাঘাটায় যৌথবাহিনীর অভিযানে গ্রেপ্তারের পর মৃত্যু হওয়া দুই ব্যক্তিসহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।
এদিকে গ্রেপ্তারের পর নির্যাতনের কারণে মৃত্যুর ঘটনায় বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে স্বজন ও এলাকাবাসী।
বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকালে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গাইবান্ধার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এডমিন এন্ড ফিন্যান্স) ইবনে মিজান।
তিনি জানান, যৌথ বাহিনীর অভিযানে গ্রেপ্তার পাঁচ জনের বিরুদ্ধে সাঘাটা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) দীপক কুমার রায় বাদী হয়ে ‘অস্ত্র ও বিস্ফোরকদ্রব্য’ আইনে এই মামলা দায়ের করেছেন।
মামলায় আসামিরা হলেন, সাঘাটা ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি ও ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন সুইট (৪৫), গোবিন্দী বাঁশহাটি এলাকার সেরায়েত আলীর ছেলে শাহাদাৎ হোসেন পলাশ (৪৫), উত্তর সাথালিয়া গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে রিয়াজুল ইসলাম রকি (২৮), গোবিন্দী এলাকার রোস্তম আলীর ছেলে সোহরাব হোসেন আপেল (৩৫) ও একই এলাকার মালেক উদ্দিনের ছেলে শফিকুল ইসলাম (৪৫)।
আসামিদের মধ্যে সোহরাব হোসেন আপেল ও শফিকুল ইসলামকে যৌথ বাহিনী গ্রেপ্তারের পর তারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) বেলা ১২ টার দিকে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে আপেলের মৃত্যু হয় এবং একইদিন সকাল সাড়ে ৯টার দিকে শফিকুল ইসলাম শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান।
গত সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) গভীর রাতে সাঘাটা উপজেলার সাঘাটা ইউনিয়নের ভরতখালীর গোবিন্দী এলাকা থেকে তাদের পাঁচজনকে গ্রেফতার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
মৃত ব্যক্তির নামে মামলা প্রসঙ্গে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইবনে মিজান বলেন, ‘মামলার চার্জশিটে তাদের নাম বাদ পড়বে।’
তবে, মৃত ব্যক্তির নামে মামলা প্রসঙ্গে এই মামলার বাদী ও সাঘাটা থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) দীপক কুমার রায়ের দাবি, ওই দুই ব্যক্তির মৃত্যুর আগেই মঙ্গলবার সকালে পাঁচজনের বিরুদ্ধেই মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এদিকে, গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে আপেলের মৃত্যুর পর চিকিৎসাধীন দুইজনের একজন শাহাদাৎ হোসেনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
অপরজন চেয়ারম্যান মোশাররফ সুইট আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাহারায় গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এছাড়া রিয়াজুল ইসলাম রকি বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
অপরদিকে, গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে মারা যাওয়া সোহরাব হোসেন আপেল ও বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু হওয়া শফিকুল ইসলামের ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এদিকে, গ্রেপ্তারের পর নির্যাতনের কারণে সোহরাব হোসেন আপেল ও শফিকুল ইসলামের মৃত্যুর ঘটনায় বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে স্বজন ও এলাকাবাসী।
বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টার দিকে সাঘাটা উপজেলার ভরতখালি বাজার এলাকার সড়কে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনের নিহত ও আহতদের স্বজন ছাড়াও বিভিন্ন পেশার মানু্ষ অংশ নেয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, গ্রেপ্তারের পর চেয়ারম্যান সুইটসহ ৫ জনকে বেদম মারধর ও নির্যাতন করে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা। তাদের নির্যাতনের কারণেই আপেল ও শফিকুলের মৃত্যু হয়েছে।
এই ঘটনার সুষ্ঠ বিচারসহ জড়িতদের শাস্তির দাবি জানান তারা।-বিবিসি বাংলা
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।