আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যৌন অপরাধের শাস্তি হিসেবে তুরস্কের এক টেলিভিশন উপস্থাপককে ১০৭৫ বছরের বেশি জেল দেওয়া হয়েছে। তিনি নারীদের ‘বিড়ালছানা’ বলে সম্বোধন করতেন। তার নাম আদনান ওকতার। নারী ও শিশুদের ওপর যৌন অত্যাচার, গুপ্তচরগিরি ও জালিয়াতির একাধিক অভিযোগে তাকে তুরস্কের ফৌজদারি আদালত এ রায় দিলেন।
বিবিসি সূত্রের খবর, তুরস্কের বিতর্কিত ধর্ম প্রচারক ও বিভিন্ন ধর্মীয় গ্রন্থের লেখক আদনান ওকতার ওরফে হারুন ইয়াহিয়া টিভিতে ধর্মীয় বিষয়ে বিতর্কিত বক্তব্য রাখতেন। বিভিন্ন টক শোতেও আলোচনা করতেন ‘ধর্মীয় মূল্যবোধ’ নিয়ে। তবে এসব আলোচনার ভেতরেই সেখানে উপস্থিত থাকতেন স্বল্পবসনা নারী। চড়া মেকাপে যারা তার সঙ্গে এসময় নাচতেনও। এই নারীদেরকেই তিনি তার পোষা ‘বিড়ালছানা’ বলেও পরিচয় দিতেন।
গত ২০১৮ সালে ফের তার নামে অপরাধমূলক সংগঠনের নেতৃত্ব দেওয়া, মহিলা ও শিশুদের যৌন নিপীড়ন, অস্ত্র দিয়ে মানুষকে হুমকি, ব্যক্তিগত তথ্য সংরক্ষণ, মানুষকে শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা, নির্যাতন, পাচার, সামরিক গুপ্তচরবৃত্তি, জালিয়াতি এবং প্রতারণার অভিযোগ ওঠে।
এরপরই ইস্তানবুল-এর বাড়ি থেকে আদনান ওকতারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে মোট ২৩৬ জনকে আটক করা হয়েছিল। পরে তাদের মধ্যে ৭৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। জেরায় নিজের অপরাধের কথা স্বীকার করার পাশাপাশি তার হাজারের বেশি বান্ধবী রয়েছে বলেও জানায় আদনান। তাদের সঙ্গে যৌন সম্পর্কের কথাও স্বীকার করে। এরপরই তাকে ১০৭৫ বছরের কারাদণ্ড দেন বিচারক।
তুরস্কের প্রধান সংবাদমাধ্যম আদানলু জানায়, ২০১৬ সালে ওকতার যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি সংগঠনকে সঙ্গে নিয়ে তুরস্কের ‘ক্যু’ ঘটানোর ব্যর্থ চেষ্টা করেছিল। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে প্রিজাইডিং বিচারককে ওকতার বলেন, আমার এক হাজারেরও বেশি প্রেমিকা আছে। আমি বিশেষভাবে যোগ্য। আমার মনে নারীদের জন্য বিশেষ জায়গা রয়েছে।
১৯৯০ সালে ওকতার প্রথমবারের মতো তার কাল্টসহ যৌন অপরাধের অভিযুক্ত হন। তিনি ডারউইনের বিবর্তনবাদের সূত্র তিরস্কার করে ৭৭০ পৃষ্ঠার একটি বই লিখেছেন। বইটির নাম ‘দি এটলাস অফ ক্রিয়েশন’। তবে বইটি তিনি হারুন ‘ইয়াহইয়া’ নামে লিখেছেন। পুলিশ তার আখড়া থেকে ৬৯ হাজার গর্ভনিরোধক পিল উদ্ধার করেছে। তবে তিনি দাবি করেছেন এগুলো চর্মরোগ মেয়েদের ঋতুঃস্রাব নিয়ন্ত্রণের কাজে আসে। সূত্র: গার্ডিয়ান।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।