জুমবাংলা ডেস্ক : রংপুরে আজ সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত ৩দিন পর আজ শুক্রবার সকাল ১০টার পর একটু সূর্যের দেখা মিললেও হিমেল হাওয়া ও শৈত্য প্রবাহের কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
জরুরী প্রয়োজন ছাড়া অনেকে ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। শীত বস্ত্রের অভাবে কষ্টে দিন কাটছে অসহায় দরিদ্র মানুষগুলোর। আঞ্চলিক সড়ক মহাসড়কে দিনের বেলায় হেডলাইট জালিয়ে যান চলাচল করছে। শীতের দাপটে গ্রামাঞ্চলের অনেকেই খড়কুটে দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টাও করছেন।
তবে জেলা আবহাওয়া অফিস সুত্রে জানা গেছে, আজ সকাল ৯টায় জেলায় ৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। গত এক মাস ধরে এই অঞ্চলের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ থেকে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে মধ্যে ওঠানামা করছে। আগামীতে আরো তাপমাত্রা কমে এ জেলায় শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানায় আবহাওয়া অফিস ।
রংপুর বিভাগের পঞ্চগড় জেলায় আগামী কয়েক দিনের মধ্যে তাপমাত্রা ৪-৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে যেতে পারে বলে মনে করছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
রংপুরসহ বিভিন্ন জেলায় ফুটপাত দখল করে শীতের পোশাক বিক্রি করা হচ্ছে। চলতি মাসে দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল, মধ্যাঞ্চল ও নদ-নদী অববাহিকায় মাঝারি বা ঘন কুয়াশা এবং অন্যান্য স্থানে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। ঘন কুয়াশার কারণে দিন ও রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য কমে আসতে পারে, এতে শীতের অনুভূতি বাড়তে পারে।
জেলা শহরের জুম্মাপাড়া এলাকার শাহিনুর রহমান জানান, সকাল থেকে রাত পর্যন্ত শীত আর কুয়াশা পড়ছে। তবে ৩দিন ধরে শীত বাড়ছে। আবার সকালে ঘন কুয়াশা হিমেল হাওয়ার ঠান্ডা বাতাস বইছে।
তথ্য অনুযায়ী আবহাওয়া অধিদপ্তরের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে জানাগেছে, চলতি মাসে দেশে ৮ থেকে ১০টি মৃদু (৮-১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা) ও মাঝারি (৬-৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) এ ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। তবে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে দুই থেকে তিনটি তীব্র শৈত্যপ্রবাহ হতে পারে। এ সময় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৪ থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে আসার সম্ভবনা রয়েছে।
জেলা আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজার রহমান জানান, উত্তরবঙ্গের লোকজন তীব্র শীতে কাবু হচ্ছে। সকাল থেকে কুয়াশা পড়ছে এ অঞ্চলে। দেশের উত্তর-পূর্ব ও উত্তর-পঞ্চিমাঞ্চলে শীতের দাপট বাড়ছে। তিনি আরও বলেন, জানুয়ারি মাসে ১০-১২ তারিখের মধ্যে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।
এদিকে শীতজনিত নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্ট, পেটব্যথা, জন্ডিস, সর্দি-জ্বরে ভুগছে শিশু ও বৃদ্ধরা। এ কারণে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উত্তরাঞ্চলের বহু মানুষ প্রতিদিন চিকিৎসা নিতে আসছেন।
রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আশিকুর রহমান জানান, আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণে চেষ্টা করতে গিয়ে অনেকেই অগ্নিদগ্ধ হয়ে হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন ৪ জন। গত একমাসে মারা গেছে ২ জন। এছাড়া শীতের সময়টাতে এমন রোগব্যাধী বাড়বে।আতঙ্কিত না হয়ে চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল জানান, জেলার ৮ উপজেলায় শীতে গরীব ও অসহায় মানুষের মাঝে শীত বন্ত্র বিতরণ করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত ১৮ হাজার ৫৮১টি কম্বল বিতরণ করা হয়েছে।এর মধ্যে সরকার থেকে বরাদ্দ পাওয়া ২৭ লাখ টাকার কম্বল কেনা হয়েছে বলে জানান জেলা প্রশাসক। এ ছাড়া কম্বল চেয়ে আরও চাহিদা পাঠানে হয়েছে।-বাসস
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।