জুমবাংলা ডেস্ক: কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো: মেসবাহুল ইসলাম বলেছেন, চলতি বছর রংপুর থেকে দু’লাখ মেট্টিক টন আলু মালয়েশিয়ায় রপ্তানি করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
তিনি শনিবার বিকালে রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার তিন নম্বর পায়রাবন্দ ইউনিয়নে উত্তম চাষাবাদ পদ্ধতিতে উৎপাদিত আলু রপ্তানি কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও), কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর (ডিএই), বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) এবং সারা বাংলা কৃষক সোসাইটি যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে আলু উৎপাদনকারী, রপ্তানিকারক, সরকারি কর্মকর্তা, এফএও বাংলাদেশের প্রতিনিধি এবং মিঠাপুকুর, বদরগঞ্জ, পীরগাছা উপজেলাসহ বিভিন্ন এলাকার আলু চাষীরা উপস্থিত ছিলেন।
এসময় কৃষি সচিব বলেন, বর্তমান সরকার কৃষক ও কৃষিকে বাঁচাতে নিরলসভাবে কাজ করছে। উৎপাদিত কোনো ফসলই যেন নষ্ট না হয়, সে ব্যাপারে কৃষি বিভাগ সজাগ রয়েছে। এফএও আলু রপ্তানি কার্যক্রম আরও শক্তিশালীকরণের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। এখন আমাদেরকে উদ্বৃত্ত আলু নিয়ে কাজ করতে হবে। আলু রপ্তানির প্রক্রিয়াকে প্রতিযোগিতায় রুপান্তরিত করতে হবে। যাতে সবার মধ্যে রপ্তানিকারক হবার আগ্রহ তৈরি হয়। একই সঙ্গে আলুর রপ্তানি ও প্রক্রিয়াজাতকরণ উপযোগী আলুর জাত উদ্ভাবিত করতে হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ প্রতি বছর এক কোটি ১০ লক্ষ মেট্রিক টনের অধিক আলু উৎপাদন করে। যার মধ্যে প্রায় ৪০ লক্ষ মেট্রিক টন আলু উদ্বৃত্ত। এই উদ্বৃত্ত আলুর ব্যবহারের উপায় বের করার সাথে সাথে মূল্য সংযোজন ধারায় সম্পৃক্ত কৃষক এবং অন্যদের জন্য বিশাল সমৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। এর গুরুত্ব সম্পর্কে কৃষি মন্ত্রনালয় অবহিত রয়েছে। একারণে সরকার আলু রপ্তানির ওপর গুরুত্ব বাড়িয়েছে ।
তিনি আরও বলেন, আলু চাষীরা করোনা মহামারীর মধ্যেও সফলভাবে তাদের ফসল ছায়াবাদ ও উত্তোলন করেছেন। অনেকে তাদের বিনিয়োগ থেকে লাভ করতে পারবেন কিনা বা তাদের আলু নষ্ট হবে কিনা, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন। কিন্তু আলু রপ্তানীকারকদের সাথে তাদের অংশীদারিত্ব এবং উত্তম কৃষি চর্চা অনুযায়ী মানসম্পন্ন আলু উৎপাদনের ফলে তাদের সকল আশঙ্কা এবার ভুল প্রমানিত হয়েছে।
কৃষি সচিব বলেন, এফএও এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর আলু চাষীদের সংগঠনগুলোকে রফতানিকারক, রিটেইল চেইন শপ এবং কোল্ড স্টোরেজের সাথে যুক্ত করেছে। রপ্তানীকারকদের সাথে সংযোগের মাধ্যমে গত বছর সংগঠনগুলো মোট এক হাজার মেট্রিক টন আলু রপ্তানী করেছিল। এ বছর আরও অধিক রপ্তানিকারকদের সাথে সংযোগ স্থাপন করা সম্ভব হয়েছে। এতে ন্যায্য মূল্যে আলু বিক্রি ও রপ্তানি করা হবে। রংপুর থেকে এবার দু’লাখ মেট্টিক টন আলু মালয়েশিয়ায় যাবে। এছাড়াও, নেপাল ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে আলু রপ্তানির পরিকল্পনা রয়েছে।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে এফএও প্রতিনিধি রবার্ট সিম্পসন বলেন, এফএও রপ্তানির পাশাপাশি দেশীয় ভোক্তাদের জন্য মানসম্পন্ন আলু উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাতকরণে ক্ষুদ্র এবং প্রান্তিক কৃষকদের সহায়তা প্রদান করছে। বীজ আলুর ল্যাব স্থাপনের পাশাপাশি খামার স্তরের স্টোরেজ সুবিধা স্থাপনে বেসরকারি খাতকে নিযুক্ত করে চলেছে। ২০১৮ সাল হতে রংপুরে তিনটি আলু উৎপাদনকারী সমবায় সংগঠনকে নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। সমবায় সংগঠনগুলোকে আলু উৎপাদনের জন্য ‘উত্তম কৃষি চর্চা’ বিষয়ের পাশাপাশি আর্থিক ও ডিজিটাল প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।
এফএওর সিনিয়র উপদেষ্টা মাহমুদ হোসেনের সভাপতিত্বে আয়োজিত উক্ত অনুষ্টানে আরও বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান ড. অমিতাভ সরকার, বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষনা ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালক ড. এছরাইল হোসেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের রংপুর অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ খন্দকার আব্দুল ওয়াহেদ, রংপুরের জেলা প্রশাসক মো: আসিব আহসান এবং সারাবাংলা কৃষক সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল হক সর্দার।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।