রংপুর মেডিকেলের দুটি খাতেই ৫ কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ

রংপুর মেডিকেলের দুটি

রংপুর মেডিকেলের দুটিজুমবাংলা ডেস্ক : রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালের আর্থিক ব্যয়ের দুটি খাতেই তিন বছরেই ৫ কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। হাসপাতালের বিভিন্ন খাতের বরাদ্দ করা অর্থের মধ্যে শুধুমাত্র পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থাপনা ও রোগীদের ব্যবহৃত বিছানাপত্র পরিষ্কার করার নামে অতিরিক্ত ব্যয় দেখিয়ে ওই বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। যুগান্তরের করা প্রতিবেদন থেকে বিস্তারিত-

অডিট আপত্তি প্রতিবেদনে এই আত্মসাতের তথ্য উঠে এসেছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, হাসপাতালের মেঝে, ওয়াল, টয়লেট, ড্রেন, আবর্জনা ও পয়ঃনিষ্কাশনের জন্য গত ৩ বছরে সাড়ে ৯ কোটি ৯১ লাখ ৭৪ হাজার ৫৩০ টাকার ব্যয় দেখানো হয়েছে। এর মধ্যে ৫ কোটি টাকা অতিরিক্ত ব্যয় দেখিয়ে আত্মসাৎ করা হয়েছে।

জানা গেছে, ২০২০-২১ অর্থ বছরে রামেক হাসপাতালের অবকাঠামোর অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনায় মেঝে, দেয়ালসহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন ঝোপঝাড় পরিষ্কারের জন্য উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়। প্রয়োজনীয় জনবল সরবরাহের মাধ্যমে ২ কোটি ৮৬ লাখ ৬৮ হাজার ১৫ টাকা, ২০২১-২২ অর্থ বছরে ৩ কোটি ৭৬ লাখ ৯৩ হাজার ৫৩ টাকা ও ২০২২-২৩ অর্থ বছরে ৩ কোটি ২৮ লাখ ১৩ হাজার ৪৬২ টাকা ব্যয় দেখানো হয়েছে। সব মিলিয়ে গত ৩ বছরে সাড়ে ৯ কোটি ৯১ লাখ ৭৪ হাজার ৫৩০ টাকার ব্যয় দেখানো হয়েছে।

একইভাবে ২০২০-২১ অর্থ বছরে হাসপাতালের লিনেন সামগ্রী ধোয়ার নামে ১ কোটি ৭৩ লাখ ২ হাজার ৭১ টাকা, ২০২১-২২ অর্থ বছরে ১ কোটি ৩২ লাখ ৪৫ হাজার ৯৫৮ টাকা ও ২০২২-২৩ অর্থ বছরে ১ কোটি ৪৬ লাখ ২৬ হাজার ৯৫১ টাকাসহ ৩ বছরে ৪ কোটি টাকা ব্যয় দেখিয়ে বিল পরিশোধ করা হয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছে। কিন্তু প্রকৃত পক্ষে ৩ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। ১ কোটি টাকা অতিরিক্ত ব্যয় দেখিয়ে আত্মসাৎ করা হয়। যা সব মিলিয়ে ১৩ কোটি ৯১ লাখ ৭৪ হাজার ৫৩০ টাকা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে প্রদান করা হয়। যা প্রকৃত ব্যয়ের প্রায় চল্লিশ ভাগ অধিক ব্যয় হিসাব দেখিয়ে তিন বছরেই এই দুটি খাতে প্রায় ৫ কেটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমঝোতা করে হাসপাতালের সাবেক পরিচালক, অতিরিক্ত পরিচালক ও হাসপাতালের ঠিকাদারি সিন্ডিকেট চক্র ওই বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাৎ করেছে।

সরকারি অডিট প্রতিবেদনে এই লুটপাটের চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। নিরীক্ষা ও হিসাবরক্ষণ অফিসার মো. ওবায়েদুল হক ভুইয়া স্বাক্ষরিত অডিট প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে হাসপাতালের ভেতরে আগাছা, ড্রেন, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন না করা সত্ত্বেও ঠিকাদারকে এই বাবদ বিল দেওয়া হয়েছে। এতে সরকারের বিরাট আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। হাসপাতালে ওষুধ সামগ্রী কেনাসহ বিভিন্ন খাতে কোটি কোটি টাকার অনিয়মও পরিলক্ষিত হয়েছে প্রতিবেদনে। গত ৩ বছরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক পদে দায়িত্বে ছিলেন ডা. ইউনুছ আলী। তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, অনেক দিনের ঘটনা এসব এখন মনে নেই।

‘গাজা উপত্যকা দখল না করলে সরকার উৎখাত করা হবে’