জুমবাংলা ডেস্ক : আগামী ১০ মার্চ থেকে পবিত্র রমজান মাস শুরু হচ্ছে। যুদ্ধবিরতির পাশাপাশি বন্দিবিনিময়ও হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আগেই জানিয়েছিলেন, আগামী সোমবারের মধ্যে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি হতে পারে।
অ্যামেরিকার ব্রডকাস্টার এনবিসি-কে বাইডেন বলেছেন, ”রমজান আসছে। ইসরায়েল এই সময় সামরিক অভিযান বন্ধ করতে পারে। সেই সময় পণবন্দিদের মুক্ত করার কাজও চলবে।”
যুদ্ধবিরতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, মিশর ও কাতারের মধ্যে যে আলোচনা চলছে, তাতে ছয় সপ্তাহের জন্য যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব আছে। সেই সঙ্গে হামাস ও ইসরায়েল দুই পক্ষই কিছু বন্দিকে মুক্তি দেবে। হামাসকে জার্মানি, যুক্তরাষ্ট্র, ইইউ-সহ কয়েকটি দেশ সন্ত্রাসবাদী সংগঠন বলে ঘোষণা করেছে।
যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব হামাসকে দেওয়া হয়েছে
বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানাচ্ছে, হামাসকে প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। এই প্রস্তাবের মধ্যে আছে, ৪০ দিনের জন্য যুদ্ধবিরতি হবে। হামাস যদি একজন বন্দিকে মুক্তি দেয়, তাহলে ইসরেয়েল ১০ জন ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেবে।
যুদ্ধ থেমেছে৷ আর ইসরায়েল থেকে উড়ে আসছে না রকেট৷ নতুন করে প্রাণ বা সম্পদ হানির আশঙ্কা এই মুহূর্তে নেই৷ তবে যুদ্ধের এমন সব চিহ্ন আছে যেসব মুছে গাজাবাসীর জন্য স্বাভাবিক জীবনে ফেরা খুব কঠিন৷ দেখুন ছবিঘরে…
টানা ১১ দিন চলেছে ফিলিস্তিনের হামাস শাসিত গাজার সঙ্গে ইসরায়েলের যুদ্ধ৷ যুদ্ধ বিরতির ঘোষণার পর গাজার উত্তরাঞ্চলের বাইত হানুন এলাকায় নিজের বাড়িতে ফিরে এক নারীর মাথায় হাত! তার বাড়িটা পুরোপুরি ধ্বংস, এখন থাকবেন কোথায়!
দুই সন্তানকে নিয়ে নিজের বাড়িতে এসে ফিলিস্তিনি এই তরুণেরও দিশেহারা অবস্থা৷ তার পরিবারকেও আশ্রয়হীন করেছে ১১ দিনের যুদ্ধ৷
‘‘আছে দুঃখ, আছে মৃত্যু, বিরহদহন লাগে/ তবুও শান্তি, তবু আনন্দ, তবু অনন্ত জাগে’’ কবির এ কথাগুলোই যেন মনে করিয়ে দেয় এই ছবি৷ তাদের বাড়ি-ঘর নেই৷ ধ্বংস হয়ে গেছে সব৷ তবু প্রতিবেশীকে দেখে একটু ভালো লাগা, একটু শুভেচ্ছা বিনিময়৷ জীবন তো বয়ে চলে!
নিজের বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে যেতে দেখে হতাশায় ভেঙে পড়েছেন এক নারী৷ তাকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন তার সন্তান৷
১১ দিনের যুদ্ধের সময় গাজার অনেক মানুষকেই আশ্রয় নিতে হয়েছিল সীমান্ত থেকে দূরের কোনো স্কুলে৷ এই শিশুটিও তার পরিবারের সঙ্গে আশ্রয় নিয়েছিল জাতিসংঘ পরিচালিত এক স্কুলে৷ এখন তার বাড়ি ফেরার পালা৷
এখানে বিশাল এক টাওয়ার ছিল৷ এলাকাবাসী এখন আর সেই টাওয়ার খুঁজে পাচ্ছেন না৷ ইসরায়েলের ছোঁড়া মিসাইলের আঘাতে সেই টাওয়ার পুরোপুরি ধ্বংস৷ ওপর থেকে তোলা ছবি৷
গাজার উত্তরাঞ্চলের বাইত হানুন এলাকায় নিজের বাড়িতে ফিরে যা দেখলেন, তা মানতে পারছিলেন না তারা৷দেয়ালে মাথা ঠেকিয়ে স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করছেন একজন, পেছনে- দূরে আরেকজন মাথায় হাত দিয়ে কাঁদছেন৷
ধ্বংস হয়ে যাওয়া বাড়ির নীচ থেকে যা কিছু ব্যবহারযোগ্য সব খুঁজে বের করে জড়ো করছেন এক নারী৷ গাজায় ক্ষতিগ্রস্ত হাসপাতাল ও বেকারি মেরামত করে দেয়া হবে। দরকার হলে আবার নির্মাণ করে দেয়া হবে। প্রতিদিন সেখানে ত্রাণসামগ্রী নিয়ে পাঁচশটি ট্রাক ঢুকবে।
কাতারের বক্তব্য
যুদ্ধবিরতি নিয়ে বাইডেনের মন্তব্যের কোনো প্রতিক্রিয়া দিতে চায়নি কাতার। কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি বলেছেন, ”এখনো পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি ও বন্দিদের মুক্তি দেয়া নিয়ে কোনো মতৈক্য হয়নি।”
তিনি জানিয়েছেন, ”মতৈক্যের জন্য কাতার চেষ্টা করে যাচ্ছে। প্যারিসে একটা খসড়া চুক্তি তৈরি হয়েছে। ইসরায়েল ও হামাস যাতে এই চুক্তি মেনে নেয়, তার চেষ্টা চলছে। কিন্তু কবে যুদ্ধবিরতি হবে, তা নিয়ে কোনোরকম জল্পনা করতে কাতার রাজি নয়। তবে কাতার যুদ্ধবিরতি নিয়ে আশাবাদী।”
দুর্ভিক্ষের মুখে
গাজা ভূখণ্ডের চারভাগের মধ্যে একভাগ মানুষ দুর্ভিক্ষের মুখে আছেন বলে জাতিসংঘ জানিয়েছে। নিরাপত্তা পরিষদে জাতিসংঘের এক কর্মকর্তা বলেছেন, গাজায় পাঁচ লাখ ৭৬ হাজার মানুষ দুর্ভিক্ষের মুখে আছেন।
দুই বছরের নিচে ছয়জন বাচ্চার মধ্যে একজন সেখানে ভয়ংকর অপুষ্টিতে ভুগছে। বস্তুত এই ভূখণ্ডের ২৩ লাখ মানুষ উপযুক্ত পরিমাণ খাবার পাচ্ছেন না।
যদি যুদ্ধবিরতি হয়, তাহলে ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম দ্রুত সেখানে গিয়ে মানুষের হাতে খাবার তুলে দেয়ার চেষ্টা করবে বলে জানিয়েছে।
তবে বর্তমান অবস্থা চলতে থাকলে উত্তর গাজায় দুর্ভিক্ষ অনিবার্য বলে জাতিসংঘের মত।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।