জুমবাংলা ডেস্ক : স্ত্রীর সঙ্গে অভিমান করে বাড়ি ছাড়েন মুর্শিদ মিয়া (৭০)। এরপর কেটে যায় দীর্ঘ ৩২ বছর। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টের মাধ্যমে তাকে চিনতে পারেন স্বজনেরা। পরে পুলিশ প্রশাসনের সহায়তায় বাড়ি ফেরেন মুর্শিদ মিয়া। তবে দুঃখের বিষয়, যার সঙ্গে অভিমান করে ছেড়েছিলেন বাড়ি, সেই মানুষটি এখন আর তার বাড়িতে নেই।
স্বজনদের কথা বলে জানা যায়, মুর্শিদ মিয়ার নিখোঁজের বেশকিছু দিন পর তার স্ত্রী শেফালি খাতুন বাবার বাড়িতে চলে যান। পরে তাকে অন্য জায়গায় বিয়ে দেয় পরিবার।
মুর্শিদ মিয়া কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার দক্ষিণ চরটেকী গ্রামের মৃত শাহিদ ব্যাপারীর ছেলে। রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পাকুন্দিয়া পুলিশের সহযোগিতায় বাড়ির স্বজনরা তাকে পার্শ্ববর্তী নরসিংদীর বেলাবো উপজেলা থেকে বাড়িতে নিয়ে আসেন।
পাকুন্দিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান টিটু তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে এ-সংক্রান্ত একটি পোস্ট দিলে বিষয়টি জানাজানি হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পাকুন্দিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোবারক হোসেনের বাড়ি নরসিংদীর বেলাবো উপজেলার ধুকুন্দি গ্রামে। সেই গ্রামের সাহাজ উদ্দিন মাস্টারের বাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে শ্রমিকের কাজ করতেন মুর্শিদ মিয়া। সম্প্রতি অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। এরইমধ্যে নিজের বাড়িতে ফেরার ইচ্ছার কথা জানান। বাড়ির ঠিকানা বলেন কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া উপজেলা। ঠিকানা অনুযায়ী খোঁজখবর শুরু করেন ওই এলাকার লোকজন ও পাকুন্দিয়া থানার পরিদর্শক মোবারক হোসেন।
এরই ধারাবাহিকতায় ধুকুন্দি গ্রামের একজন ফেসবুকে মুর্শিদ মিয়াকে নিয়ে একটি পোস্ট করেন। ফেসবুকে মুর্শিদ মিয়াকে দেখতে পেয়ে স্বজনরা চিনতে পারেন। রবিবার মুর্শিদের ভাতিজাসহ বেশ কয়েকজন সেখানে গিয়ে তাকে বাড়িতে নিয়ে আসেন।
পাকুন্দিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কর্মকর্তার মোবারক হোসেন জানান, সেখানে মুর্শিদ মিয়া শ্রমিকের কাজ করতেন। তা থেকে জমানো সাড়ে চার লাখ টাকায় কিছুদিন আগে পাশের গ্রামের একটি মসজিদে দান করেন। এরপর থেকে ওই এলাকায় সবার কাছে পরিচিত হয়ে ওঠেন তিনি।
ভাতিজা আবদুল হাকিম জানান, প্রায় ৩২ বছর আগে স্ত্রীর সঙ্গে পারিবারিক বিষয়ে অভিমান করে বাড়ি ছাড়েন মুর্শিদ মিয়া। পরে বাড়ির লোকজন অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তার খোঁজ পাননি। একপর্যায়ে বাড়ির লোকজন ও তার স্ত্রী তাকে পাওয়ার আশা ছেড়ে দেন। একসময় স্ত্রীও চলে যান।
তিনি বলেন, সম্প্রতি নরসিংদীর বেলাবো উপজেলার এক ব্যক্তি ফেসবুকে মুর্শিদ নিয়ার ছবিসহ পোস্ট করেন। পোস্টটি আমাদের গ্রামের কয়েকজনের নজরে পড়ে। পরে যোগাযোগ করা হয় পোস্টদাতার সঙ্গে। দীর্ঘদিন পর চাচাকে ফিরে পেয়ে আমরা আনন্দিত।
‘চাচার বউ-সন্তান কেউ নেই। রয়েছে অনেক জমাজমি। চাচা যাতে জীবনের শেষ সময়টা ভালো করে কাটাতে পারেন আমরা সেই চেষ্টা করছি’, যোগ করেন ভাতিজা আবদুল হাকিম।
ভারত-বাংলাদেশ সুসম্পর্কের পথে বড় বাধা সীমান্ত হত্যা: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
পাকুন্দিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি (ওসি) আসাদুজ্জামান টিটু বলেন, ফেসবুকের কল্যাণে নিখোঁজের ৩২ বছর পর নিজ বাড়িতে ফিরে এসেছেন মুর্শিদ মিয়া। রবিবার দুপুরে তিনি বাড়িতে ফেরেন। মূলত ফেসবুকে পোস্ট করার পর ঘটনাটি সবার নজরে আসে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।