বেরোবি প্রতিনিধি: রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) সব ধরনের রাজনীতি নিষিদ্ধ হলেও সম্প্রতি শিক্ষার্থী সংসদ নির্বাচনের আলোচনা সভা অছাত্র এবং রাজনৈতিক নেতাদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং আলোচনা সভা হট্টগোলের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে এতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। শিক্ষার্থীরা মনে করেন শিক্ষার্থী সংসদ নির্বাচন পিছিয়ে যাবে এবং শিক্ষার্থীদের একাংশ নির্বাচন না হওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

গত ২৮ অক্টোবর (২০২৪) সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৮তম সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বেরোবিতে সকল ধরনের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছিল আজ থেকে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) লেজুড়বৃত্তি সব ধরনের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এখন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা কোনো রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হতে পারবে না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এত দিন পর্যন্ত সিন্ডিকেট সভার সেই সিদ্ধান্তের প্রতি অনড় থাকলেও সম্প্রতি শিক্ষার্থী সংসদ ইস্যুতে প্রশাসন প্রতিনিয়ত নিজেই ভঙ্গ করছেন নিজেদের তৈরি আইন।
গত ২৮ অক্টোবর ২০২৫ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ বিধিমালা পাশ হওয়ার পর শিক্ষার্থীদের সাথে বেশ কয়েকটি আলোচনা সভা করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এই আলোচনা সভার প্রায় সবগুলোতে অংশ নেন শিবির, ছাত্রদল এবং সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের একাধিক নেতা-কর্মী, যাদের কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান শিক্ষার্থী নন। প্রতিটি আলোচনা সভায় বিভিন্ন বিষয়ে তারা উপাচার্যের সাথে তর্কে জড়িয়েছেন এবং প্রায় সব আলোচনা সভা হট্টগোলের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে। এদের মধ্যে ছাত্রশিবিরের বেরোবি শাখার সেক্রেটারি রাকিব মুরাদ একটি, ছাত্রদলের বেরোবি শাখার আহ্বায়ক আল আমিন ইসলাম ও সদস্য সচিব রাশেদ মন্ডল দুটি এবং ছাত্র ফ্রন্টের বেরোবি শাখার সভাপতি রিনা মুরমু ও রংপুর মহানগর শাখার যুগেশ ত্রিপুরা দুটি সভায় উপস্থিত ছিলেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী হিমু বলেন, “আমি ভিসি স্যারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই, আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা লক্ষ্য করেছি যে, যতবারই আলোচনা সভা ডাকেন ভিসি স্যার, সেখান নাম মাত্র সাধারণ শিক্ষার্থীদের দেখা যায়। আর যারা সেখানে উপস্থিত থাকেন তাদের বেশিরভাগই সাবেক শিক্ষার্থী, রানিং শিক্ষার্থী থাকলেও তাদের মধ্যে বেশির ভাগই রাজনৈতিক পরিচয় ধারি। তাই যেহেতু ছাত্র সংসদ সকল শিক্ষার্থীদের প্লাটফর্ম তাই ডিসিশন মেকিংয়ের সময় অছাত্র, রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীদের প্রধান্য না দিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতামতকে প্রধান্য দিন, কেননা একমাত্র সাধারণ শিক্ষার্থীদেরই কোনো বিশেষ দলের প্রতি লেজুড়বৃত্তি নাই, তারা সব সময় বিশ্ববিদ্যালয়ে সুষ্ঠু শিক্ষাঙ্গন ও গবেষণার পরিবেশ কামনা করে, কোনো লেজুড়ের কাছে মাথা নত করে না।”
মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী শোভন বলেন,”সিন্ডিকেট রুমে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নামে যে মিটিং গুলা হয় সেখানে অবশ্যই প্রতিটা বিভাগ থেকে ২জন করে প্রতিনিধি নেয়া উচিত। এর বাহিরে আর কাউকে ঢুকতে দেয়া উচিত না। তবেই সেটা সাধারণ শিক্ষার্থীদের মিটিং হবে এর বাহিরে না।”
এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা প্রফেসর ড. ইলিয়াছ প্রামাণিক বলেন, আমরা কোনো অছাত্র এবং রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীকে দাওয়াত দেয়নি।তারা নিজ থেকে এসেছে।
এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. ফেরদৌস রহমান বলেন, এবিষয়ে আমি কিছু জানি না। আমি কাউকে দাওয়াত দেয়নি এবং আমার দায়িত্বও ছিল না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো: শওকাত আলী বলেন, এখানে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ডাকা হয়েছে, কোনো দলকে নয়। সাধারণ শিক্ষার্থীরা কেন আসে না, তা ছাত্র উপদেষ্টা ভালো জানেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।


