জুমবাংলা ডেস্ক : রাজশাহীতে ছাত্রাবাসে ঢুকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সমন্বয়ক নুরুল ইসলাম শহীদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। দুর্বৃত্তরা তাকে লাঠি ও লোহার রড দিয়ে মারধর করে।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) রাত ১০টার দিকে রাজশাহী নগরীর ষষ্ঠীতলা এলাকার “কিউট ছাত্রাবাসে” এই হামলার ঘটনা ঘটে। পরে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
আহত নুরুল ইসলাম রাবির ক্রপ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের লেভেল-২ এর দ্বিতীয় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী। তার গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৭ সদস্যবিশিষ্ট সমন্বয়ক কমিটির অন্যতম সদস্য। তিনি চার বছর ধরে “কিউট ছাত্রাবাসে” থাকেন।
হামলার বিষয়ে নুরুল ইসলাম শহীদ জানান, রাতে তিনি তার কক্ষে বসে খাবার খাচ্ছিলেন। তখন অজ্ঞাত এক ব্যক্তি ছাত্রাবাসে এসে প্রতিটি কক্ষের দরজা ধাক্কা দিয়ে কাউকে খুঁজতে থাকেন।
এরপর শহীদ খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, ছাত্রাবাসে বাইরে থেকে এক ব্যক্তি এসে লুকিয়েছেন। ওই ব্যক্তিকেই খোঁজা হচ্ছে। এরপর তিনি বের হয়ে নিজেও খুঁজতে শুরু করেন। এরপর চারতলার রান্নাঘরে শামিম নামের ওই ব্যক্তিকে পাওয়া যায়। যারা শামিমকে খুঁজতে এসেছিলেন তাদের কাছে তাকে হস্তান্তর করার জন্য ডাকছিলেন তিনি। এরইমধ্যে ছাত্রাবাসে ঢুকে পড়েন শামিমের পক্ষের ২০-২৫ জন ব্যক্তি। তারা কোনোকিছু না শুনেই সমন্বয়ক নুরুল ইসলাম ও ছাত্রাবাসের মালিক রোকন উদ্দীনকে মারধর শুরু করেন।
নুরুল ইসলাম শহীদ বলেন, “আমার মেসের (ছাত্রাবাস) ছাদের ওপর ২০ থেকে ২৫ জন অজ্ঞাত ব্যক্তি ঢুকে রড ও পাইপ দিয়ে আমার ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়েছে। মাথা থেকে শুরু করে পুরো শরীরে তারা মারধর করেছে। এতে আমি হাতে গুরুতর আঘাত পেয়েছি।”
মারধর শেষে দুর্বৃত্তরা তাকে প্রাণনাশের হুমকিও দিয়েছে বলে জানিয়েছেন নুরুল ইসলাম শহীদ।
রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী মাসুদ বলেন, “হৃদয় ও মোস্তক মিল্টন নামের দুই তরুণের দ্বন্দ্ব আছে প্রেমঘটিত বিষয়ে। রাতে হৃদয় ওই এলাকায় মিল্টনকে ধরে আনে। সেখানে হৃদয়ের দুলাভাই শামিমও আসেন। খবর পেয়ে মিল্টনের লোকজন তাদের ধাওয়া দেয়। এ সময় শামিম গিয়ে ওই ছাত্রাবাসে লুকিয়ে পড়েন। পরে শামিমের লোকজন তাকে উদ্ধারে ছাত্রাবাসে ঢুকে দেখেন, সমন্বয়ক নুরুলের কাছে শামিম। নুরুলই তাকে আটকে রেখেছেন, এই ধারণা করে তাকে মারধর করা হয়েছে। আসলে এটা ভুল বোঝাবুঝি।”
ওসি মেহেদী মাসুদ আরও বলেন, “খবর পেয়ে আমরা সমন্বয়ক নুরুলের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। ঘটনাস্থলে পুলিশও গিয়েছিল। নুরুল চাইলে মামলা করতে পারেন। মামলা করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে রাবিতে মানববন্ধন হয়েছে। বুধবার দুপুর দেড়টায় রাবির প্যারিস রোডে এ কর্মসূচির আয়োজন করে স্টুডেন্টস রাইটস অ্যাসোসিয়েশন। মানববন্ধন থেকে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানানো হয়।
মানবন্ধনে রাবি সমন্বয়ক আকিল বিন তালেব বলেন, “এই কাপুরুষোচিত হামলা কেবল একজন ব্যক্তির ওপর আঘাত নয়, এটি ন্যায়ের সংগ্রামের চেতনাকে স্তব্ধ করার গভীর ষড়যন্ত্র। আমরা এই ন্যক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই এবং সংশ্লিষ্ট দুর্বৃত্তদের দ্রুত শনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোরালো দাবি জানাই।”
মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।