লাইফস্টাইল ডেস্ক : কখনও এমন হয়েছে, আপনি এত খেয়েছেন যে আর নড়তে পারছেন না, মনে হচ্ছে এক্ষুণি গিয়ে না শুয়ে পড়লে আর চলবেই না? এর থেকে আপনার বদহজম, বুকজ্বালা, এসিডিটি, ওজন বৃদ্ধি এমনকি স্ট্রোক পর্যন্ত হতে পারে। আপনি হয়তো দেখেছেন অনেকেই খাওয়ার পর কিছুটা হাঁটাহাঁটি করেন। কিছুই না, বিছানায় ওঠার আগে তাড়াতাড়ি শেষ খাবার হজম করার জন্যই তারা এটা করেন। সর্বত্র ডাক্তাররা কেন খেয়ে সাথে সাথেই শুয়ে পড়তে বারণ করেন? খাওয়া আর শোয়ার মধ্যে কতটা সময়ের ব্যবধান হওয়া উচিত জানুন আমাদের কাছে।
হজমে বাধা দেয়
প্রাথমিকভাবে এর প্রভাব আপনার হজমশক্তির ওপরেই পড়বে। ঘুমাবার সময় আমাদের শরীরকে খাবার হজম করতে বেশী কষ্ট করতে হয়। নিউট্রিশনিস্ট রূপালী দত্ত বলেছেন, ‘খাবার পরেই শুয়ে পড়লে আপনার খাবার হজম হতে দেরি হয়। ইন্টেস্টাইনের দেওয়ালের ভিতর দিয়ে খাবার প্রবেশ করতে পারে না। ফলে গ্যাস, এসিড, বুকজ্বালা ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দেয়। ঘুমের বিভিন্ন সমস্যা দেখা যায় এবং অপর্যাপ্ত ঘুমের ফলে ওজন ও বৃদ্ধি পায়।’
অপর্যাপ্ত ঘুম
ঘুমানোর অল্প সময়ে আগে খাবার খেলে ঘুমের সমস্যা দেখা দেয়। বিশেষত, যখন আপনি কোনো মিষ্টি জাতীয় খাবার খান, তখন তার ফলে আপনার শরীরে যে অহেতুক এনার্জি বুস্ট হয়, তা আপনার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়।
ওজন বেড়ে যেতে পারে
হজমের দেরী আর অপর্যাপ্ত ঘুম- ওজন বৃদ্ধির অন্যতম প্রধান কারণ। দিনের শেষে মেটাবলিজম কম হয়, ফলে আপনি যা কিছুই খান না কেন, তা বার্ন করা কঠিন হয়ে পড়ে। হজম ভালো হওয়ার জন্য একটু আগে ডিনার করা ভালো। আমরা যা কিছু খাই, তা থেকে যদি ক্যালরি তৈরি না হয়, তবে তা ফ্যাট হিসেবে আমাদের শরীরে জমা হতে থাকে। আমাদের শরীর সূর্যের গতিবিধির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। তাই আমরা যত তাড়াতাড়ি খাবো তত তাড়াতাড়ি খাবারের পুষ্টিগুণ আমাদের শরীরে শোষিত হবে। খেতে দেরী হলে খাবারের সমস্ত পুষ্টিগুণ শরীরে শোষিত না হয়ে ফ্যাট আকারে জমতে থাকবে।
বুকে জ্বালা
খাবার খাওয়ার সাথে সাথেই শুয়ে পড়লে বুকজ্বালা এবং এসিডিটির সমস্যা বাড়তে থাকে। খাবার পরেই পেটে চাপ দিয়ে শুয়ে থাকলে এই অবস্থা আরো বাজে আকার ধারণ করবে।
সমীক্ষায় জানা গেছে, এসিডিটির ফলে স্লিপ অপনিয়া হতে পারে, যার থেকে স্ট্রোক পর্যন্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বদহজমের ফলে ব্লাড কোলেস্টেরল ও ব্লাড প্রেসার বেড়ে যায়, যা হার্টের পক্ষে ক্ষতিকর।
খাওয়া আর ঘুমের মধ্যে মিনিমাম কতক্ষণ গ্যাপ থাকা দরকার?
ডিনার এবং ঘুমের মধ্যে অন্তত ৩ ঘণ্টা গ্যাপ থাকা প্রয়োজন। এর ফলে বদহজম, বুকজ্বালা এবং অন্যান্য স্লিপ ডিসঅর্ডারের হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায়। ভরা পেটে ঘুমালে শরীরে মেটাবলিজম কমে যায়, ফলে ওজন বৃদ্ধি ও ওবেসিটি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ঠিক একারণেই ডিনার এবং ঘুমের মধ্যে কমপক্ষ্যে ২ ঘণ্টা গ্যাপ থাকা বাধ্যতামূলক।
সেই কারণেই, পরেরবার যখনই আপনি কোনও ভারী খাবার খাবেন, খেয়াল রাখবেন ডিনার খাওয়ার আর ঘুমানোর মধ্যে যথেষ্ট সময়ের ব্যবধান যেন থাকে। একটা পরামর্শ: পারলে তাড়াতাড়ি ডিনার করবেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।