রাশিয়ায় কখনো ঘুরতে গেলে অদ্ভুত এক বিষয় আপনার চোখে নিশ্চয়ই পড়েছে—লোকজন খুব একটা হাসছে না। তারা প্রায় সব সময়ই গম্ভীর, যেন তাদের জীবনে হাসি কিংবা আনন্দের কোনো জায়গা নেই। মনে কি প্রশ্ন জেগেছে কখনো রাশিয়ানরা কেন এত গোমড়ামুখো? কেন তারা সহজে হাসতে চায় না?
এ ধরনের আচরণ কিন্তু শুধু ব্যক্তিগত বৈশিষ্ট্যের জন্য নয়, বরং এর পেছনে রয়েছে অনেক গভীর সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক কারণ। রাশিয়ার গোমড়ামুখী মানুষদের হাসি না পাওয়ার পেছনে আছে তাদের শতাব্দীর পর শতাব্দীর ইতিহাস ও সংস্কৃতির প্রভাব।
রাশিয়ানদের এই গোমড়ামুখের পেছনের কারণগুলো আরও ভালোভাবে বুঝতে হলে তাদের ইতিহাস ও সংস্কৃতি সম্পর্কেও ধারণা নিতে হবে। চলুন জেনে নেই রাশিয়ানরা কেন সহজে হাসে না।
রাশিয়ায় হাসি সাধারণত প্রকৃত সুখ বা আন্তরিক সম্পর্কের প্রতিফলন। এটি সৌজন্যের জন্য ব্যবহৃত হয় না। যখন একজন রাশিয়ান আপনার সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলে, তখন বুঝতে হবে সে সত্যিই ভালো মেজাজে আছে বা আপনার প্রতি সত্যিকার অর্থেই যত্নশীল।
আমরা যেমন পরিচিত–অপরিচিত সবার সঙ্গে হেসে হেসেই কথা বলি। রাশিয়ানরা এই কাজ করে না। তারা অপরিচিতদের খুব একটা হাসিমুখে অভ্যর্থনা করে না। তবে তারা একেবারেই যে হাসে না তা কিন্তু নয়। তারা পরিচিতদের সঙ্গে হাসাহাসি ঠিকই করে পরিস্থিতি বুঝে। তবে অপরিচিত কোনো রাশিয়ানের দিকে কখনো তাকিয়ে হাসলে কিন্তু তারা মুখ ফিরিয়ে নেবে না কখনোই। বরং তারা এটিকে গুরুত্বসহকারে দেখবে।
রাশিয়ায় পরিস্থিতি বুঝেই আচরণ করাকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। বিশেষ করে তারা কোনো ব্যবসায়িক বৈঠকে যেখানে কোনো আনুষ্ঠানিক আলোচনা হচ্ছে কিংবা কারও সঙ্গে প্রথমবারের মতো পরিচয় হচ্ছে, এ ধরনের পরিস্থিতিতে অতিরিক্ত হাসাহাসিকে সঠিক মনে করে না। তাদের ধারণা, এতে মনে হতে তারা ব্যাপারটি গুরুত্বসহকারে দেখছে না বা প্রতিপক্ষকে সম্মান করছে না।
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন জাতির মধ্যে এই বিষয় বেশ সাধারণ ব্যাপার হলেও রাশিয়ানদের জন্য খানিক ভিন্ন। রাশিয়ায় সৌজন্য প্রকাশে কেউ হাসে না। বরং, তারা মনে করে সব সময় হাসিমুখে থাকা অনেক সময় ভুল বার্তা দিতে পারে। তাদের ধারণা, কেউ কিছু লুকাতে বা আসল অনুভূতি প্রকাশ করতে না চাইলেই অকারণে হাসে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।