Close Menu
Bangla news
    Facebook X (Twitter) Instagram
    Bangla news
    • প্রচ্ছদ
    • জাতীয়
    • অর্থনীতি
    • আন্তর্জাতিক
    • রাজনীতি
    • বিনোদন
    • খেলাধুলা
    • শিক্ষা
    • আরও
      • লাইফস্টাইল
      • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
      • বিভাগীয় সংবাদ
      • স্বাস্থ্য
      • অন্যরকম খবর
      • অপরাধ-দুর্নীতি
      • পজিটিভ বাংলাদেশ
      • আইন-আদালত
      • ট্র্যাভেল
      • প্রশ্ন ও উত্তর
      • প্রবাসী খবর
      • আজকের রাশিফল
      • মুক্তমত/ফিচার/সাক্ষাৎকার
      • ইতিহাস
      • ক্যাম্পাস
      • ক্যারিয়ার ভাবনা
      • Jobs
      • লাইফ হ্যাকস
      • জমিজমা সংক্রান্ত
    • English
    Bangla news
    Home রাশিয়ায় মৃত্যুমুখে আরো ১৮ বাংলাদেশি যুদ্ধদাস
    জাতীয় স্লাইডার

    রাশিয়ায় মৃত্যুমুখে আরো ১৮ বাংলাদেশি যুদ্ধদাস

    Soumo SakibFebruary 3, 202510 Mins Read
    Advertisement

    রাশিয়ায় মৃত্যুমুখে আরো জুমবাংলা ডেস্ক : ইউরোপের উন্নত দেশে পা ফেললেই ঘুরে যাবে ভাগ্যের চাকা—দালালের এমন প্রলোভনে পড়েন নাটোরের সিংড়া উপজেলার হুলহুলিয়া গ্রামের হুমায়ুন কবির। জমি বন্ধক রেখে ১৮ লাখ টাকা তুলে দেন দালালের হাতে। কালের কণ্ঠের অনুসন্ধানী প্রতিবেদন থেকে বিস্তারিত-

    ভাগ্যবদলের যে স্বপ্ন বুকে নিয়ে দেশ ছেড়েছিলেন, তা স্বপ্নই থেকে গেল। ইউরোপে পা ফেলার আগেই দালালচক্র তাঁকে বিক্রি করে দেয় রাশিয়ায়।

    সে দেশে গিয়ে তাকে বরণ করতে হয় যুদ্ধদাসের জীবন। শেষ পর্যন্ত আর প্রাণে বাঁচতে পারেননি। অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে এই নির্মম তথ্য।

    অনুসন্ধানে জানা গেছে, কবিরের সঙ্গে গিয়েছিলেন তাঁর ভগ্নিপতি রহমত আলী।

    গত ২৮ জানুয়ারি দেশের একটি শীর্ষ স্থানীয় দৈনিকে ‘রাশিয়ায় যুদ্ধে আট বাংলাদেশি’ শিরোনামে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এ খবর দেখার পর দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে অনেক অভিযোগ আসতে শুরু করে। চার দিন ধরে এসব তথ্য যাচাই-বাছাই করে এ পর্যন্ত ছয় জেলার অন্তত ১৮ জন যুদ্ধদাসের বিস্তারিত তথ্য মিলেছে। ভুক্তভোগী কয়েকজনের সঙ্গে কথাও বলা হয়েছে।

    যাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি, তাদের পরিবারের সদস্যদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়েছে। ইউরোপের স্বপ্ন দেখা ব্যক্তিরা কিভাবে রাশিয়ায় বিক্রি হয়ে যুদ্ধদাসের জীবন বরণ করে নিয়েছেন, তা সবিস্তারে উঠে এসেছে সবার বক্তব্যে।

    তাদের বক্তব্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, দেশের বিভিন্ন জেলায় মানবপাচারের একটি বড় ধরনের ফাঁদ পেতেছে ড্রিম হোম ট্রাভেলস নামে ঢাকার একটি প্রতিষ্ঠান। গ্রাম পর্যায় থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন স্তরে তাদের একটি চক্র সক্রিয় রয়েছে। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশ থেকে রাশিয়া পর্যন্ত পৌঁছাতে প্রায় প্রতিটি পয়েন্টে এই চক্রের সদস্যরা কাজ করছেন।

    পাচারের রুট সম্পর্কেও বিস্তারিত তথ্য পাওয়া গেছে। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, প্রাথমিক সমঝোতার পর দিনক্ষণ চূড়ান্ত হয়। এর মধ্যে সম্পন্ন হয়ে যায় আর্থিক লেনদেন। বেশির ভাগ ব্যক্তিকেই বলা হয় পাঠানো হবে ইতালি বা সাইপ্রাস। সৌদি আরবে ওমরাহ ভিসার মধ্য দিয়ে শুরু হয় ইউরোপযাত্রা।

    তথ্য মতে, সৌদি আরবে ভুক্তভোগীদের এক মাস রাখা হয়। এর মধ্যে রাশিয়ার চক্রের সঙ্গে বেচাকেনার সমঝোতা হয়ে যায়। আকাশপথে রাশিয়ায় পাঠাতে তাদের জন্য এক মাস মেয়াদি ভ্রমণ ভিসা ইস্যু করা হয়। তখনো ভুক্তভোগীরা জানতে পারেন না কী নির্মমতা অপেক্ষা করছে তাদের সামনে। ওমরাহ শেষে তাদের বিমানে করে নেওয়া হয় সংযুক্ত আরব আমিরাতে। দুবাই হয়ে রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গে পাঠানো হয়। এর পরই মূলত তাদের জীবনে ধেয়ে আসতে শুরু করে অনিশ্চিত অন্ধকার। বিমানবন্দর থেকে দেড় ঘণ্টার সড়কপথে ট্যাক্সিতে করে তাদের নেওয়া হয় ক্যাম্পে।

    ভুক্তভোগীদের বয়ানে জানা গেছে, ক্যাম্পে নেওয়ার পর ধীরে ধীরে তাদের কাছে সব কিছু স্পষ্ট হতে থাকে। ক্যাম্পে নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে দালালচক্র তাদের জানায়, তাদের কেবল আত্মরক্ষার কৌশল রপ্ত করানো হবে। কিন্তু এক থেকে দেড় মাস সশস্ত্র প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় তাদের। এরপর সড়কপথে বাসে করে নেওয়া হয় রোস্তভ অন ডন এলাকায়। এখানে পৌঁছাতে অন্তত আড়াই দিন লাগে। সেখান থেকে বিভিন্ন এলাকায় যুদ্ধের মাঠে ঠেলে দেওয়া হয় তাদের।

    নথিপত্র থেকে দেখা যায় এদের বেশির ভাগই ইউরোপের যাত্রী ছিলেন। কিন্তু তারা আটকে গেছেন রাশিয়ায়। যুদ্ধের মাঠে এক অনিশ্চিত জীবন এখন। তবে চারজনের সঙ্গে চুক্তি হয় রাশিয়ায় মালি বা বাবুর্চির কাজ দেওয়া হবে। রাশিয়ার ক্ষেত্রে সাত থেকে আট লাখ টাকা নেওয়া হয়। তবে ইউরোপ গমনেচ্ছু ব্যক্তিদের কাছ থেকে নেওয়া হয় ১৫ থেকে ১৮ লাখ টাকা পর্যন্ত। রাশিয়া গমনেচ্ছুদের চুক্তিপত্র ঘেঁটে দেখা যায়, সেখানে স্পষ্ট লেখা থাকে, রাশিয়ায় কোনো যুদ্ধক্ষেত্রে তাদের পাঠানো যাবে না।

    অনুসন্ধানে ভুক্তভোগী এক যুদ্ধদাসের বোর্ডিং পাস পাওয়া যায়। ফ্লাই দুবাইয়ের এফজেড ৯৯১ বিমানে সৌদি আরব থেকে প্রথমে দুবাই যান তিনি। পরে রাশিয়ায় নেওয়া হয় তাকে। একই ফ্লাইটে বাংলাদেশি আরো পাঁচজনকে নেওয়া হয়। ২০২৪ সালের ২২ ডিসেম্বর এফজেড ৯৯১ বিমান দুবাই থেকে স্থানীয় সময় ৫টা ৪৫ মিনিটে উড্ডয়ন করে। একই দিন স্থানীয় সময় রাত ১১টা ২৫ মিনিটে রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গে পৌঁছায় বিমানটি।

    অনুসন্ধানে জানা যায়, রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গ বিমানবন্দরে নামার সঙ্গে সঙ্গে বিমানবন্দরের কর্মকর্তারা যাত্রীদের মোবাইল ফোন ও অন্য ইলেকট্রিকসামগ্রী জব্দ করে আইএমইআই নম্বর নিয়ে নেন। পাশাপাশি বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেন। বিমানবন্দর থেকে বের হওয়ার পর দালালচক্রের স্থানীয় রাশিয়ান সদস্য ও বাংলাভাষী সুলতান ভুক্তভোগীদের রিসিভ করেন। সুলতানের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।

    তথ্য মতে, দালালচক্র শুরুতেই পাঁচজনের মধ্যে চারজনকে আলাদা করে ফেলে। এই চারজন হলেন—আকরাম হোসেন, সোহান মিয়া, আরমান মণ্ডল ও জাফর হোসেন। অন্য যাত্রী আমির হামজাকে অন্য একটি দলের সঙ্গে নিয়ে যায় দালালচক্র। এর মধ্যে দালালচক্রের রাশিয়ান সদস্য তাঁর সঙ্গে থাকা প্রাইভেট কারে করে চারজনকে নিয়ে যান। তাদের বিমানবন্দর থেকে প্রায় দেড় ঘণ্টার দূরত্বে সেন্ট পিটার্সবার্গের একটি আর্মি ক্যাম্পে নিয়ে যান। সেই ক্যাম্পে অন্যান্য কয়েক শ যুদ্ধদাসের সঙ্গে রাখা হয় তাদের। এই ভুক্তভোগীরা তখন সেখানে আরো বেশ কয়েকজন বাংলাদেশিকে দেখতে পান। তবে তাঁদের বিষয়ে কোনো তথ্য তাঁরা দিতে পারেননি।

    ভুক্তভোগীরা জানান, সেন্ট পিটার্সবার্গের সেনা ক্যাম্প থেকে প্রায় এক হাজার ৯০০ কিলোমিটার দূরের রোস্তভ অন ডনের একটি ক্যাম্পে নেওয়া হয় তাঁদের। আড়াই দিনের যাত্রায় খেতে দেওয়া হয় মাত্র একবার।

    নিঃস্ব পরিবারগুলোতে কান্না, উদ্বেগ আর হতাশা

    ভাগ্যবদলের স্বপ্ন বুকে নিয়ে সব হারিয়ে যুদ্ধদাসে পরিণত হওয়া এই ব্যক্তিদের পরিবারে নেমে এসেছে চরম হতাশা। ভাগ্যান্বেষণে ইউরোপের দেশ সাইপ্রাসে যাওয়ার জন্য ড্রিম হোম ট্রাভেলসে যান নরসিংদীর আকরাম হোসেন ও সোহান মিয়া। ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি ১৪ লাখ টাকায় মৌখিক চুক্তি হয় প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান এম এম আবুল হাসান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাবিয়া তামান্না জেরিনের সঙ্গে। দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও সাইপ্রাসে যাওয়ার কোনো বন্দোবস্ত করতে পারেনি এজেন্সিটি। এর মধ্যে দুই সহোদরকে সাড়ে তিন লাখ টাকা বেতনে রাশিয়ায় মালি বা বাবুর্চির কাজের প্রস্তাব দেয় প্রতিষ্ঠানটি। উচ্চ বেতনের প্রস্তাবে রাজিও হয়ে যান তারা। কিন্তু চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে রাশিয়ায় যুদ্ধদাস হিসেবে বিক্রি করে দেওয়া হয় তাদের।

    ভ্যাগ সহায় হওয়ায় রাশিয়া থেকে দেশে ফিরেছেন আকরাম। কিন্তু ছোট ভাই সোহান মিয়া এখনো রাশিয়ার যুদ্ধক্ষেত্রে। তার অপেক্ষায় পরিবার। রাশিয়া থেকে দেশে ফিরলেও এখনো মৃত্যুভয়ে রয়েছেন আকরাম।

    আকরামের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘রাশিয়ায় যাওয়ার জন্য ড্রিম হোম ট্রাভেলসের সঙ্গে আট লাখ টাকায় চুক্তি হয়। প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান আবুল হাসান আমাদের জানান, বাংলাদেশ থেকে রাশিয়ার ভিসা হচ্ছে না, তাই ওমরাহ পালনের জন্য সৌদি আরবের ভিসা দেওয়া হবে। সেখান থেকে রাশিয়ার ওয়ার্ক পারমিট দেওয়া হবে। কিন্তু আমাদের ওয়ার্ক পারমিট না দিয়ে এক মাসের ট্রাভেল পাস দেওয়া হয়। ’

    রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গ বিমানবন্দরে পৌঁছার পর থেকে শুরু হয় দালালচক্রের অত্যাচার। যুদ্ধে যেতে না চাইলে দেওয়া হয় হত্যার হুমকি। করা হতো মারধর, দেওয়া হতো না খাবার।

    এদিকে নরসিংদীর মরজাল ইউনিয়নের মোবারক হোসেন ভূইয়া ওরফে সাদ্দামও রাশিয়ার যুদ্ধক্ষেত্রে আটকে পড়েছেন। তিন শিশুসন্তান নিয়ে বিপাকে পড়েছে তাঁর পরিবার। এ প্রসঙ্গে মোবারক হোসেনের বোন সম্পা আক্তার বলেন, ‘সাত লাখ টাকার চুক্তিতে আমার ভাইকে সাড়ে তিন লাখ টাকা বেতন দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে জেরিন রাশিয়া পাঠান। ওই সময় তিনি বলেন, তাঁর ভাই নাজমুল হোসেন তুহিনও তাঁদের সঙ্গে যাবে। যেহেতু ট্রাভেল এজেন্সির মালিকের ভাই যাচ্ছে, তাই আমরাও রাজি হই। কিন্তু রাশিয়ায় যাওয়ার পর আমার ভাইকে অস্ত্র দিয়ে ট্রেনিং দেওয়া হয়। প্রথমে বলা হয় আত্মরক্ষার জন্য ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে। পরে বুঝতে পারি তাকে যুদ্ধে পাঠাবে। এখন আমার ভাই যুদ্ধে আছে, আপনারা আমার ভাইকে বাঁচান। ’

    তিনি বলেন, ট্রেনিংয়ে থাকা অবস্থায় আমার ভাই বাবাকে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট করতে বলে। সে জানায়, কিছু টাকা পাঠাবে। কিন্তু পরে সে জানায়, ২০ লাখ টাকা দিয়েছে। কিন্তু দালাল টাকার কোডটি তাকে দেয়নি। কোড চাইতে গেলে তাকে গুলি করে হত্যার হুমকি দিচ্ছে।

    ২৫ দিন আগে মোবারক হোসেনের ঘরে জন্ম নিয়েছে তৃতীয় সন্তান। কান্নারত অবস্থায় মোবারকের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার বলেন, চাকরির কথা বলে আমার স্বামীকে ২০ থেকে ২১ দিনের অস্ত্রসহ ট্রেনিং দেওয়া হয়। এর পর ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধের জন্য তাকে যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠানো হয়। সর্বশেষ যখন কথা হয়েছিল তখন সে কান্না করতে করতে বলেছিল, আমাকে বাঁচাও। ওপর থেকে বোমা বর্ষণ করা হচ্ছে। এখানে থাকলে আমি বাঁচব না। যুদ্ধে না গেলে আমার স্বামীকে মারধর করে, গুলি করে হত্যা করার হুমকি দেয়। তারা বলে, তোদের এক কোটি টাকা দিয়ে কিনে এনেছি, তোদের যুদ্ধে যেতে হবে।

    রাশিয়ার যুদ্ধক্ষেত্রে রয়েছেন কেরানীগঞ্জের বাসিন্দা আমিনুল ইসলাম। তার স্ত্রী জুমা আক্তার বলেন, সাত লাখ টাকায় ক্লিনার ভিসায় রাশিয়ায় যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তাঁকে যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠানো হয়েছে। যুদ্ধে যেতে না চাইলে গুলি করে হত্যা করা হবে বলে ভয় দেখানো হয়। তাই বাধ্য হয়ে যুদ্ধে গেছে।

    তিনি বলেন, ‘স্থানীয় দালাল চান মিয়া আমাদের ড্রিম হোম ট্রাভেলসে নিয়ে যায়। পরে প্রতিষ্ঠানটির এমডি ও চেয়ারম্যান উচ্চ বেতনে চাকরি দেবে বলে জানায়। কিন্তু আমার স্বামীকে এখন রাশিয়ায় যুদ্ধ করতে বাধ্য করা হচ্ছে। আমি আমার স্বামীকে ফেরত চাই। ’

    উন্নত জীবনের খোঁজে ইউরোপে যাওয়ার স্বপ্ন দেখে রাশিয়ার যুদ্ধদাসে পরিণত হয়েছেন যশোরের যুবক জাফর হোসেন। খেয়ে না-খেয়ে রাশিয়ানদের পক্ষে যুদ্ধ করতে বাধ্য হচ্ছেন তিনি। তার স্ত্রী খোদেজা আক্তার বলেন, সাইপ্রাস যাওয়ার উদ্দেশে ড্রিম হোম ট্রাভেলসে টাকা জমা দিয়েছিলেন জাফর। কিন্তু বিভিন্ন ছলছাতুরি করে তাঁকে রাশিয়ায় ওয়ার্ক পারমিট দিয়ে কাজ দেওয়ার কথা বলে এজেন্সিটি। কিন্তু তাঁকে এখন যুদ্ধ করতে বাধ্য করা হচ্ছে। যুদ্ধ না করলে হত্যা করা হবে বলে হুমকি দেওয়া হচ্ছে।

    মাগুরার একটি উপজেলার ছয়জনের তথ্য পাওয়া গেছে। তাঁদের সবাইকে ইতালি বা জার্মানিতে পাঠানোর কথা বলে ১৫ থেকে ১৮ লাখ টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিয়েছে দালালচক্র। উন্নত জীবনের স্বপ্ন দেখিয়ে তাঁদেরও রাশিয়ার যুদ্ধক্ষেত্রে বিক্রি করে দেওয়া হয়। তবে দালালচক্রের ভয়ে তাঁরা কেউ নাম প্রকাশ করতে চাননি। তাঁরাও যেকোনো উপায়ে দেশে ফিরে আসতে ব্যাকুল হয়ে আছেন।

    ড্রিম হোম ট্রাভেলসের কার্যালয় তালাবদ্ধ

    এ পর্যন্ত রাশিয়ায় যুদ্ধদাস বানানোর কারিগর হিসেবে যে দালালচক্রের অনুসন্ধান মিলেছে, তা হলো ড্রিম হোম ট্রাভেলস। এটি জননী গ্রুপের একটি অঙ্গপ্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশিদের রাশিয়ার যুদ্ধক্ষেত্রে দাস বানিয়ে দেওয়ার লোমহর্ষক ঘটনাগুলোর নাটের গুরু এই প্রতিষ্ঠানটি। প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান নড়াইলের বাসিন্দা এম এম আবুল হাসান। তিনি নড়াগাতী থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। এ বিষয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাঁর মোবাইল ফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।

    রাজধানীর বনানীর এফ ব্লকের ৪ নম্বর সড়কের মির্জা ভবনের (৪ নম্বর বাড়ি) নিচতলায় দুই কক্ষের একটি কার্যালয় রয়েছে ড্রিম হোম ট্রাভেলসের। গতকাল শনিবার বিকেল ৪টায় সরেজমিনে গেলে কার্যালয়টি বন্ধ পাওয়া যায়। ভবনের দায়িত্বরত নিরাপত্তারক্ষী শহীদুল্লাহ জানান, প্রায় ১৫ দিন ধরে অফিসটি বন্ধ রয়েছে। আর মালিক এম এম আবুল হাসান এখানে সর্বশেষ এসেছিলেন কমপক্ষে এক মাস আগে। কয়েক দিন ধরে বিভিন্ন এলাকা থেকে তাঁদের খুঁজতে লোকজন আসছে। সবাই তাদের স্বজনদের বিষয়ে খোঁজ নিতে আসে।

    গত ২৮ জানুয়ারি মঙ্গলবার ‘রাশিয়ায় যুদ্ধে আট বাংলাদেশি’ শিরোনামে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে তোলপাড় শুরু হয়। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে দালালচক্র ধরতে মাঠে নামে প্রশাসন। তবে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের কোনো তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি।

    প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মো. শিবলী সাদিক বলেন, ‘এরই মধ্যে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, ড্রিম হোম ট্রাভেলস আমাদের নিবন্ধিত রিক্রুটিং এজেন্সি নয়। এটি একটি ট্রাভেল এজেন্সি। গত বৃহস্পতিবার এ বিষয় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি দিয়েছি। কারণ ট্রাভেল এজেন্সি আমাদের আওতার মধ্যে পড়ে না। ’

    তিনি আরো বলেন, ‘চিঠি পাঠানোর পাশাপাশি আমরা ভুক্তভোগীদের বিস্তারিত তথ্য জানার জন্য কালুখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তাঁর কাছ থেকে বিস্তারিত তথ্য পাওয়ার পর আমরা মিশনে এ ব্যাপারে যোগাযোগ করব। ’

    চিঠির বিষয়ে কোনো উত্তর আসছে কি না জানতে চাইলে শিবলী সাদিক বলেন, ‘আমরা চিঠিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছি। আমরা বৃহস্পতিবার চিঠিটি পাঠিয়েছি। রবিবার (আজ) আমরা এ বিষয়ে তাদের কাছ থেকে তথ্য নেব। ’

    যুদ্ধকে কেন্দ্র করে মানবপাচার উদ্বেগজনক

    ব্র্যাকের সহযোগী পরিচালক (মাইগ্রেশন ও ইয়ুথ প্ল্যাটফর্ম) শরীফুল হাসান বলেন, ‘বিশ্বকাপ বা অলিম্পিকের মতো বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট ঘিরে মানবপাচারের ঘটনা অতীতে ঘটেছে। কিন্তু যুদ্ধকে কেন্দ্র করে এ ধরনের ঘটনা একেবারেই নতুন। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর কিছু তথ্য শুনেছি। এখন তথ্য-প্রমাণ যা দেখছি, সংখ্যায় কম হলেও এটি অত্যন্ত উদ্বেগের ঘটনা। ’

    তিনি আরো বলেন, বিদেশ গমনেচ্ছু ব্যক্তিরা খুবই অসচেতন। তাঁরা দালালের প্রলোভন পেয়েই মরিয়া হয়ে যান। তিনি যে যুদ্ধ করতে যাবেন, সেটি কোথাও লেখা থাকে না। ফলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর জন্য আগে থেকে এ বিষয়ে জানার কোনো সুযোগও কম থাকে। ঘটনার পর নিশ্চিত করতে হবে ট্রাভেল এজেন্সি কারা, স্থানীয় দালাল কারা।

    যেকোনো মানুষ বিদেশ গমনের আগে তার অতীত রেকর্ড যাচাই করে দেখা উচিত। বিশেষ করে যদি ওই ব্যক্তির এটাই প্রথম বিদেশ গমন হয়ে থাকে সে ক্ষেত্রে গুরুত্বের সঙ্গে ঘেঁটে দেখা যে তিনি কেন বিদেশ যেতে চাচ্ছেন। তাহলে এ ধরনের ঘটনা কিছুটা হলেও রোধ করা সম্ভব।

    প্রবাসীদের জন্য বড় সুখবর! রেমিট্যান্স প্রবাহ ধরে রাখতে নীতিমালায় ছাড়

    জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।
    ‘জাতীয় ১৮ আরো বাংলাদেশি মৃত্যুমুখে যুদ্ধদাস রাশিয়ায়; স্লাইডার
    Related Posts

    রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে মালয়েশিয়াকে কাজে লাগাতে চায় বাংলাদেশ

    August 17, 2025
    Rain

    মহাশক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় এরিনের সর্বশেষ অবস্থান জানা গেল

    August 17, 2025
    বৃষ্টি

    দেশের ছয় বিভাগে তুলনামূলক বেশি বৃষ্টি হতে পারে

    August 17, 2025
    সর্বশেষ খবর
    Sophie Rain Leaves MrBeast

    Sophie Rain Leaves MrBeast Speechless in Record-Breaking TeamWater Livestream Moment

    ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ইসলামিক উপদেশ

    ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ইসলামিক উপদেশ: সুস্থ জীবন

    অল্প সময়ে কুরআন তিলাওয়াত শেখার সহজ কৌশল

    অল্প সময়ে কুরআন তিলাওয়াত শেখার সহজ কৌশল

    ভ্রমণের আগে কী কী লাগবে

    ভ্রমণের আগে কী কী লাগবে? জেনে রাখুন জরুরি

    hurricane erin update

    Where Will Hurricane Erin Go? Florida and East Coast Brace for High Surf and Rip Currents

    denzel washington cancel culture

    Denzel Washington Dismisses Cancel Culture Fears: “Who Cares?”

    Dan Tana, Hollywood Restaurant Namesake Owner, Passes at 90

    Dan Tana Death: Hollywood Mourns Late-Night Dining Icon and Restaurant Founder

    Free Fire

    Free Fire Madara Ring Event Ignites Player Frenzy with Exclusive Naruto-Themed Rewards

    Coolie Movie

    Coolie Breaks Global Box Office Record in 4 Days

    Gal Gadot

    Gal Gadot Breaks Silence on Snow White Flop, Israel Backlash, and Entourage Regrets

    • About Us
    • Contact Us
    • Career
    • Advertise
    • DMCA
    • Privacy Policy
    • Feed
    • Banglanews
    © 2025 ZoomBangla News - Powered by ZoomBangla

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.