পূর্বে সোভিয়েত ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত আরাল সাগর ছিল বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম হ্রদ। পরবর্তী সময়ে তাদের উচ্চভিলাসী প্রকল্পের কারণে আরাল সাগরটিকে শুকিয়ে ফেলা হয়। লেক ভিক্টোরিয়া, লেক সুপেরিয়র এবং কাস্পিয়ান সাগর যথাক্রমে প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্থানে অবস্থান করেছিল।
বর্তমানে আরাল সাগরকে মৃত বললে কোন অংশে ভুল হবে না। এই হ্রদটি শুকিয়ে যাওয়ার কারণে আশেপাশের প্রকৃতি এবং মানব জীবনের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছিল।
মরুভূমির বুকে হ্রদটি অবস্থান করার কারণে বাষ্পীভবনের হার বেশি ছিল। তবে নিকটবর্তী দুটি নদী থেকে পর্যাপ্ত পানি পাওয়ার কারণে হ্রদটি কখনো শুকিয়ে যায়নি।
জোসেফ স্ট্যালিন ক্ষমতায় আসার পর থেকে রাশিয়ার উন্নয়ন কার্যের জন্য ভূ-প্রকৃতিকে নিজের মত বদলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কৃষি এবং শিল্পের উন্নয়নের জন্য তখন বড় কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়।
১৯৬০ সাল বা ওই সময়ে তুলা চাষ সোভিয়েত ইউনিয়নের অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল। পরবর্তী সময়ে পর্যাপ্ত পানির অভাবে ধীরে ধীরে আরাল সাগর শুকিয়ে যাচ্ছিল।
ওই সময়ে উজবেকিস্তান এবং তুর্কমেনিস্তানে তুলা চাষের পরিমাণ অনেক বৃদ্ধি পাওয়ায় আরাল সাগরের উপরে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করে। শুধুমাত্র তুলা চাষের জন্য আরাল সাগরের পার্শ্ববর্তী দুটি নদীর পানিও শুকিয়ে যাচ্ছিল।
পরবর্তী সময়ে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সূর্যের তাপে আরাল সাগরে বাষ্পীভবনের হার বৃদ্ধি পেতে থাকে। ১৯৬০ সালের তুলনায় ২০১৪ সালে আরাল সাগরে পানির পরিমাণ কমে গিয়েছিল ৯৫ শতাংশ।
এক সময়ের সুবিশাল আরাল সাগর আজ প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। বর্তমানে উজবেকিস্তান এবং তুর্কমেনিস্তানের অর্থনীতি তুলা চাষের উপর নির্ভর করায় আরাল সাগরকে নবজীবন দেওয়া সম্ভব নয়।
পূর্বে যখন আরাল সাগরে পানি ছিল তখন পর্যাপ্ত পরিমাণে মাছ শিকার করা হতো। পরবর্তী সময়ে বাণিজ্যিকভাবে মাছ ধরা বন্ধ হয়ে যায়। যেসব জেলেরা আরাল সাগরের উপর নির্ভর করত তারা পরবর্তী সময়ে পেশা পরিবর্তন করতে এবং অন্য অঞ্চলে থিতু হতে বাধ্য হয়েছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।