আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইউক্রেন সীমান্তে দুই মাস ধরে রাশিয়ার সেনাদের উপস্থিতি নিয়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে পশ্চিমা বিশ্বে। এদিকে রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করলে পরিস্থিতি মোকাবিলায় ভারতকে পাশে চায় যুক্তরাষ্ট্র। আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হওয়ায় এ ইস্যুতে নয়াদিল্লি পাশে থাকবে বলে আশাপ্রকাশ করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র নেড প্রাইস। বার্তা সংস্থা পিটিআইয়ের বরাতে বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) এ তথ্য জানিয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়া।
নেড প্রাইস বলেছেন, সম্প্রতি মেলবোর্নে অনুষ্ঠিত কোয়াডের মন্ত্রিপর্যায়ের সম্মেলনে রাশিয়া-ইউক্রেন ইস্যুতে আলোচনা হয়েছে। ওই সম্মেলনে অংশ নিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, ভারত ও জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা।
মার্কিন মুখপাত্র বলেন, ওই বৈঠকে দৃঢ় ঐকমত্য হয়েছিল যে, কূটনৈতিকভাবে এর (রাশিয়া-ইউক্রেন সংকট) শান্তিপূর্ণ সমাধান দরকার। কোয়াডের মূল লক্ষ্যগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে, আন্তর্জাতিক আইনের ওপর ভিত্তি করে শাসনব্যবস্থাকে শক্তিশালী করা। আর এই আইননির্ভর ব্যবস্থা ইউরোপ বা অন্য জায়গাগুলোর মতো ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের জন্যেও সমানভাবে প্রযোজ্য।
তিনি বলেন, আমরা জানি, আমাদের ভারতীয় অংশীদাররা আইননির্ভর আন্তর্জাতিক শাসনব্যবস্থার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এতে যেসব নীতি রয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম হলো, জোর করে সীমানা বাড়ানো যাবে না। বড় দেশগুলো ছোট দেশগুলোকে হয়রানি করতে পারে না। কোনো দেশের জনগণই কেবল তাদের পররাষ্ট্রনীতি, তাদের অংশীদারত্ব, তাদের জোট বা মিত্র নির্বাচন করার অধিকার রাখে। এসব নীতি ইউরোপের মতো ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলেও সমানভাবে প্রযোজ্য।
নেড প্রাইস জানান, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ও ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর প্রতিরক্ষা সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করেছেন। তবে প্রতিপক্ষের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা আইনে পদক্ষেপ সংক্রান্ত কোনো কথা হয়েছিল কি না, তা বলতে রাজি হননি তিনি।
এর আগে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, মস্কো ‘অপ্রয়োজনীয়ভাবে’ যে সংকট ডেকে এনেছে, তার শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য যুক্তরাষ্ট্র সাধ্যের মধ্যে সবকিছু করছে। তবে নেড প্রাইস বলেছেন, রাশিয়া যদি উত্তেজনা কমাতে আগ্রহী থাকে, কেবল তখনই ওইসব প্রচেষ্টা কাজে আসবে।
তিনি বলেন, পরিষ্কারভাবে বললে, আমরা তা দেখিনি। প্রকৃতপক্ষে, আমরা সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে, এমনকি গত কয়েকদিনে এর বিপরীত চিত্রই লক্ষ্য করেছি। কমানোর বদলে রাশিয়া আরও বেশি সৈন্য ইউক্রেন সীমান্তে পাঠিয়েছে এবং তারা যুদ্ধে দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এটি খুবই উদ্বেগের বিষয়। একইসঙ্গে, আমরা আগে যেমনটা সতর্ক করেছিলাম, কয়েক সপ্তাহ ধরে রুশ কর্মকর্তা ও মিডিয়াগুলো অসংখ্য গল্প ছড়াচ্ছে। এর মধ্যে যেকোনো একটিকে আক্রমণের অজুহাত হিসেবে দেখানো হতে পারে।
মার্কিন এ কর্মকর্তা বলেন, এটি যেকোনো সময় ঘটতে পারে এবং তার জন্য বিশ্বের প্রস্তুত থাকা উচিত। এতে ডনবাসে ইউক্রেনের সামরিক তৎপরতার দাবি করা হতে পারে, সমুদ্র, আকাশ বা স্থলে মার্কিন বা ন্যাটো বাহিনীর তৎপরতার মিথ্যা অভিযোগ উঠতে পারে, এমনকি রুশ ভূখণ্ডে ইউক্রেনীয় বা ন্যাটো বাহিনী অনুপ্রবেশের দাবিও করা হতে পারে।
মার্কিন মুখপাত্রের কথায়, আমরা প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনসহ অন্য রুশ কর্মকর্তাদের বিষয়ে বিশেষভাবে উদ্বিগ্ন। তারা ডনবাসে ‘গণহত্যা’র কথা বলছেন। তবে এসব অভিযোগের একটিরও ভিত্তি নেই।
ক্রেমলিন অবশ্য বরাবরই বলে আসছে, তাদের ইউক্রেন আক্রমণের কোনো পরিকল্পনা নেই। তবে সেই দাবি মিথ্যা বলে উড়িয়ে দিয়েছে পশ্চিমারা। তারা বলছে, রাশিয়া এখনো ইউক্রেন সীমান্তে সেনার সংখ্যা বাড়াচ্ছে। আক্রমণ যেকোনো সময় হতে পারে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।