চলতি অর্থবছরে যেসব প্রবাসী ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে বাংলাদেশে রেমিটেন্স পাঠাবেন তাদের সকলকে ২ শতাংশ প্রণোদনা দেওয়া হবে। অবৈধ চ্যানেলকে রুখে দিতে এবং বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স উৎসাহিত করতে ভবিষ্যতে প্রয়োজনে আরো সুবিধা দেওয়ার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
তিনি বলেন, আমি চাই ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে সম্পূর্ণ অর্থ যেন বাংলাদেশে আসে। এ জন্য যা কিছু করা প্রয়োজন তা করব।
আজ সোমবার ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইডিইবি) ভবনে বাংলাদেশ ব্যাংক রেমিটেন্স অ্যাওয়ার্ড ২০১৮ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয় আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব আসাদুল ইসলাম।
অর্থমন্ত্রী বলেন, আপনারা আমাদের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। আমি বিশ্বাস করি দেশের সকল খাত ঋণাত্মক দিকে প্রবাহিত হলেও রেমিটেন্স খাত কখনো পিছনের দিকে যাবে না। এছাড়াও এবছর ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিটেন্স আহরণের আশা ব্যক্ত করেন তিনি।
প্রবাসী বাংলাদেশিদের উদ্দেশ্যে অর্থমন্ত্রী বলেন, অন্য দেশে টাকা রাখতে গেলে সুদ দিয়ে ব্যাংকে টাকা রাখতে হয়। কিন্তু আমরা টাকার বিপরীতে আপনাদের সুদ প্রদান করি। ব্যাংকে টাকা রেখে দুর্ভাবনার কোন কারণ নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির বলেন, এই মুহূর্তে আমরা শক্তিশালী অর্থনৈতিক ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে আছি। আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৮ শতাংশ অতিক্রম করেছে। দিন দিন আমাদের রেমিটেন্স আহরণ বাড়ছে এবং ভবিষ্যতে আরও বাড়বে। রেমিটেন্স এর বিপরীতে ২ শতাংশ প্রণোদনা সরকারের একটি যুগান্তকারী উদ্যোগ বলেও মনে করেন তিনি। রেমিট্যান্স প্রবৃদ্ধিতে দেশের জনগণকে ভাষাগত এবং একাধিক কাজে প্রশিক্ষণ নিয়ে বিদেশে যাওয়ার পরামর্শও দেন তিনি।
ব্যাংকিং চ্যানেলে বৈদেশিক মুদ্রা প্রচলনের জন্য সম্মানিত ও অনুপ্রাণিত করতে ৩৬ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে প্রবাসী-আয় পুরস্কার ২০১৮ প্রদান করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এবছর মোট পাঁচ ক্যাটাগরিতে প্রবাসী আয় পুরস্কার বা রিমিটেন্স অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়। ক্যাটাগরিগুলো হলো; সাধারণ পেশাজীবী, বিশেষজ্ঞ পেশাজীবী, ব্যবসায়ী, রেমিটেন্স আহরণকারী ব্যাংক ও রেমিটেন্স প্রেরণকারী অনিবাসী বাংলাদেশি মালিকানাধীন এক্সচেঞ্জ হাউজ।
পেশাজীবী ক্যাটাগরিতে পুরস্কার প্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন- কুয়েত প্রবাসী জাকির হোসেন, এবি ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিটেন্স প্রেরণ করেছেন তিনি। কুয়েত প্রবাসী সিকদার বাচ্চু, সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ডাক্তার আফতাব হোসেন, সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিটেন্স প্রেরণ করেন। জার্মান প্রবাসী মো. কামরুজ্জামান, ঢাকা ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সুকেশ রায়, সোনালী ব্যাংক। মালয়েশিয়া প্রবাসী আহমেদ রায়হান সামসি, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক। সিঙ্গাপুর প্রবাসী দেওয়ান মাসুদ কামার, ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড। কাতার প্রবাসী ইকবাল হোসেন, ট্রাস্ট ব্যাংক। নাইজেরিয়া প্রবাসী নওশাদ আহমেদ, বেসিক ব্যাংক ও যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ডাক্তার ইশা খোশনু, এবি ব্যাংক।
জেনারেল ক্যাটাগরিতে পুরস্কার প্রাপ্ত প্রবাসীরা হলেন- সিঙ্গাপুর প্রবাসী মো. ইমরান হোসেন ভূঁইয়া, প্রাইম ব্যাংক। ওমান প্রবাসী রফিকুল ইসলাম, ন্যাশনাল ব্যাংক। কানাডা প্রবাসী মোস্তফা কামাল, ট্রাস্ট ব্যাংক। সিঙ্গাপুর প্রবাসী সুভাষ চন্দ্র মজুমদার, প্রাইম ব্যাংক। কাতার প্রবাসী নির্মল কান্তি ঘোষ, সোনালী ব্যাংক। কুয়েত প্রবাসী তৌহিদ আহমেদ, সিটি ব্যাংক। সোমালিয়া প্রবাসী নাসির আহমেদ, ট্রাস্ট ব্যাংক। আফগানিস্তান প্রবাসী মো. রেজাউল বারী চৌধুরী, ট্রাস্ট ব্যাংক।
ব্যবসায়ী ক্যাটাগরিতে পুরস্কার প্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন- সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রবাসী মো. অলিউর রহমান, জনতা ও এনআরবিসি ব্যাংক। সিঙ্গাপুর প্রবাসী আবু তাহের মো. আমানুল্লাহ, এনআরবি ব্যাংক। সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রবাসী আব্দুল করিম, জনতা ব্যাংক। সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রবাসী মাহবুব আলম, জনতা ব্যাংক। সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রবাসী মোহাম্মদ শাহজাহান বাবলু, জনতা ব্যাংক। সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রবাসী মোহাম্মদ আবদুন নূর কাউসার, জনতা ব্যাংক। যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী মঞ্জুরুল আলম, ইস্টার্ন ব্যাংক। সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রবাসী মোহাম্মদ ইমাদ উর রহমান, এনআরবি ব্যাংক। সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রবাসী মাহবুবুল হাদী ফজলে রব, এনআরবি ব্যাংক। সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রবাসী নুর মোহাম্মদ, জনতা ব্যাংক।
রেমিটেন্স আহরণকারী শীর্ষ পাঁচ ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে ইসলামী ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক, ডাচ বাংলা ব্যাংক এবং জনতা ব্যাংক লিমিটেড।
রেমিটেন্স প্রেরণকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলাদেশি মালিকানাধীন তিনটি এক্সচেঞ্জ হাউজকে পুরস্কার দেয়া হয়েছে। তারা হল ন্যাশনাল এক্সচেঞ্জ কোম্পানি (এসআরএল), এনইসি মানি ট্রান্সফার লিমিটেড ও প্লাসিড এনকে কর্পোরেশন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।