নিজস্ব প্রতিবেদক: দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর আজ (২০ আগস্ট) সকাল থেকে শুরু হয়েছে স্বপ্নের পদ্মা সেতুতে রেললাইন বসানোর কাজ। দুপুর ১২টা ৫ মিনিটে পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তে রেললাইন বসানোর কার্যক্রম উদ্বোধন করেন রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন।
পদ্মা লিংক রেল প্রকল্পের পিডি আফজাল হোসেন জানান, গত জুলাইয়ে সেতু কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমাদের চুক্তি হয়। তারা আগস্টের প্রথমার্ধে আমাদের কাজ করার অনুমতি দেন। সে অনুযায়ী গত জুলাইয়ে বিভিন্ন প্রযুক্তিগত দিক খতিয়ে দেখে আজ শনিবার সকাল থেকে রেল ট্রাক, স্লিপার এসব বসানোর কাজ শুরু করেছি আমরা।
তিনি আরও বলেন, আশা করি আগামী চার-পাঁচমাসের মধ্যে মাওয়া হয়ে পদ্মা সেতু দিয়ে জাজিরা পয়েন্ট থেকে ভাঙা পর্যন্ত রেল লাইন বসানোর কাজ শেষ করতে পারবো।
রেলপথ মন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, পদ্মা সেতুতে রেল লাইন বসানোর কাজ শুরু হলো আগস্ট মাসেই। সেতু কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বাংলাদেশ রেলওয়ের এ বিষয়ে আগেই বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, আগস্টে রেল লাইন বসানোর কাজ শুরু হবে।
আগামী ২০২৩ সালের জুনে ঢাকা থেকে ভাঙা পর্যন্ত পদ্মা সেতু দিয়ে রেল চলাচল শুরু হবে বলে জানান তিনি।
পদ্মা সেতু ও এর দুই প্রান্তে রেললাইন নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে ২০১৮ সালে। প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল ২০১৬ সালে। শুরুতে যানবাহন চলাচলের সঙ্গে একই দিনে রেল চালুর পরিকল্পনা ছিল সরকারের। কিন্তু রেললাইন বসানোসহ সংশ্লিষ্ট অবকাঠামো নির্মাণের কাজ পিছিয়ে আছে। পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছে সরকারের সেতু বিভাগ। সেতু দিয়ে ট্রেন চলাচল নিশ্চিত করার দায়িত্ব বাংলাদেশ রেলওয়ের।
ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে যশোর পর্যন্ত ১৬৯ কিলোমিটার রেললাইন বসানো এবং স্টেশন ও অন্য অবকাঠামো নির্মাণের জন্য আলাদা প্রকল্প নেয় রেলওয়ে। জিটুজি পদ্ধতিতে এ প্রকল্পে অর্থায়ন করছে চীন। প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত। রেল সংযোগের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৯ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা। গত ৪ আগস্ট পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা থেকে মাওয়া অংশের কাজ ৬২ শতাংশ শেষ হয়েছে। মাওয়া থেকে ভাঙ্গা অংশের কাজ হয়েছে ৮১ শতাংশ। ভাঙ্গা থেকে যশোর পর্যন্ত অংশের কাজ হয়েছে ৫২ শতাংশ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পদ্মা সেতুর রেল প্রকল্পের কাজ সব অংশে পুরোদমে চলছে। কাজ নিয়ে ব্যস্ত এ প্রকল্পের শ্রমিকরা। বিভিন্ন স্টেশন নির্মাণের কাজও চলছে। চলছে রেললাইন বসানোর কাজ। পদ্মা সেতু দিয়ে রেললাইন (ট্র্যাক) আনা হচ্ছে মাওয়া প্রান্তে।
বর্তমানে দেশের ৪৩টি জেলা রেলযোগাযোগের আওতায় আছে। ২০৩৫ সালে সরকার ৬৪ জেলায় রেলপথ সম্প্রসারণের মহাপরিকল্পনা করেছে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ঢাকা–যশোর পদ্মা সেতু রেললিংক প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, বরিশাল বিভাগের পুরোটাই রেলযোগাযোগের আওতার বাইরে। সরকার এই বিভাগকে রেলের আওতায় আনতে পায়রা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত রেল সংযোগ করতে চায়। ঢাকা–যশোর রেললাইন হলে এই কাজ সহজ হয়ে যাবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।