স্বাস্থ্য ডেস্ক : কমলাপুরে রেলওয়ের জেনারেল হাসপাতালে সারাবছরই কোনো রোগী ভর্তি হয় না, তবু ওই হাসপাতালের জন্য প্রতিবছর ৪৬ লাখ টাকার ওষুধ বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে। সম্প্রতি দৈনিক জাগরণের একটি বিশেষ প্রতিবেদনে এ চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে।
প্রতিবেদন অনুসারে, হাসপাতালের অব্যবস্থাপনার কারণে কমলাপুর রেলওয়ে জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসছেন না রোগীরা। রোগী সংকটের কারণে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালে নেই কোনো হাক ডাক বা কর্মতৎপরতা। এ অভিযোগের বিষয়ে ওই হাসপাতালের চিকিৎসকরাও একমত পোষন করেছেন।
জানা গেছে, রোগী সংকট নয়, আসলে অব্যবস্থাপনার কারণেই হাসপাতালে রোগী আসে না বলে জানিয়েছেন কমলাপুর রেলওয়ে জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসকরা। তারা বলেছেন, এখানে শুধু কিছু জনবল দিয়েই কাজ শেষ করেছে কর্তৃপক্ষ, দেয়নি চিকিৎসা সরঞ্জাম। অথচ বছরে ৪৬ লাখ টাকার ওষুধ বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে রোগীহীন এই হাসপাতালে।
৭৫ শয্যার রেলওয়ে হাসপাতালের প্রতিটি ওয়ার্ডেই তালা। হাসপাতালের সব বিভাগের জন্যই আছেন নিয়োগপ্রাপ্ত ডাক্তার। কিন্তু তাদের কোনো কাজ নেই। কারণ হাসপাতালটিতে কোনো রোগী আসেন না। তাই বেশিরভাগ সময়ে বন্ধ থাকে জরুরি বিভাগ ও বহির্বিভাগসহ অন্য বিভাগগুলো।
অপরদিকে রাজধানীতে যতগুলো হাসপাতাল আছে, সেই হাসপাতালোর বেশিরভাগেই রোগীদের এতো ভিড় বা চাপ থাকে এবং হাসপাতালগুলো তাদের সক্ষমতার বাইরে সেবা শুশ্রুষা বা চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকে। কিন্তু রেলওয়ে জেনারেল হাসপাতালের বহির্বিভাগে দিনের বেলাতেও ভূতুরে পরিবেশ বিরাজ করছে। হাসপাতালটির এমন পরিস্থিতি মানতে পারছেন না এখানকার ডাক্তাররাও। তারা চান অন্য সব হাসপাতালের মতো এটিও চিকিৎসা সেবায় প্রানোবন্ত হোক। এছাড়া হাসপাতালে দায়িত্বপ্রাাপ্ত ডাক্তাররা বলছেন, এখানে কাজহীন বসে থাকতে থাকতে তারা ভুলতে বসেছেন চিকিৎসা বিদ্যা। তাই তদবির করে অনেকে বদলি হতে চাইছেন ডাক্তারদের অনেকে। তবে শুধু ডাক্তার আর কর্মচারী দিয়েই তো চিকিৎসা সেবা হয় না। দরকার আনুষাঙ্গিক আরো অনেক কিছু। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, চিকিৎসার কার্যক্রম শুরুর জন্য হাসপাতালটিতে প্যাথলজিক্যাল বিভাগ, এক্সরে মেশিনসহ সব রকমের চিকিৎসার সরঞ্জাম দরকার। সব সুবিধা নিশ্চিত করলেই কেবল রোগীরা এখানে চিকিৎসা নিতে আসবেন।
এবিষয়ে রেলওয়ে জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ফিরোজ আলমগীর বলেন, আমাদের ওখানে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কোনো পদ নেই। যারা আসছেন, হেল্থ থেকে। আমার মনে হয়, হেল্থএ থাকলে যে সার্ভিসটা দেন, এখানে সেরকম সার্ভিসটা ওনারা দিতে পারছেন না।
রেলওয়ে জেনারেল হাসপাতালের ডিএমও আই এস আব্দুল আহাদ বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নিজস্ব কিছু নীতিমালা দিয়ে এটাকে উন্নত না করলে অর্থাৎ বাজেট না দিলে কোনো ভাবেই আমরা রোগী বাড়াতে পারবো না। অথচ হাসপাতালটিতে বছরে কেবল বরাদ্দই হয় ৪৬ লাখ টাকা। রোগীদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালটিকে উপযোগী করে তোলা হয়নি। সেটি করা হলে এই হাসপাতালেও চিকিৎসার জন্য রোগীর অভাব হতো না।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।