জুমবাংলা ডেস্ক : চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২৪ মার্চ থেকে শুরু হতে যাচ্ছে পবিত্র রমজান মাস। এ পুরো মাস সিয়াম সাধন ও ইবাদত বন্দেগিতে ডুবে থাকবেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। রোজায় হাইস্কুল ও কলেজে ছুটি থাকলেও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে ক্লাস চলবে। আগামী ২৩ মার্চ (বৃহস্পতিবার) থেকে সরকারি-বেসরকারি হাইস্কুল ও কলেজে শুরু হচ্ছে রোজার ছুটি। কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও রোজার ছুটি শুরু হবে এদিন। আর মাদরাসায় রোজার ছুটি শুরু হবে একদিন আগেই, ২২ মার্চ (বুধবার) থেকে। তবে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রোজার ছুটি শুরু হবে আগামী ৭ এপ্রিল। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হাইস্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটির তালিকা থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
এ পরিস্থিতিতে শিক্ষকরা রোজায় প্রাথমিক বিদ্যালয় ছুটি দেয়ার দাবি জানিয়েছেন। শিক্ষকরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ নানা উপায়ে এ দাবির পক্ষে সরব হয়েছেন। সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অভিন্ন ছুটি নির্ধারণের দাবি জানাচ্ছে শিক্ষক সংগঠনগুলো।
রোজায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছুটি নিশ্চিত করতে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অভিন্ন ছুটি নির্ধারণের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশে প্রাথমিক শিক্ষক সমাজ। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মিল রেখে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছুটি নির্ধারণের দাবি জানিয়েছে শিক্ষক সংগঠনটি।
সংগঠনের সভাপতি শাহিনুর আল-আমিন ও সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ ইলিয়াছ হোসেন বলেন, প্রায় ৬০ ভাগ অভিভাবকের সন্তান প্রাথমিক, মাধ্যমিক বা উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ালেখা করেন। ছুটি ভিন্ন হওয়ায় পারিবারিক ভ্রমণ, ভ্রাতৃত্বের বন্ধন ও সম্প্রীতির বিঘ্ন ঘটে। বেশ কিছু মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রাথমিক শাখা আছে, তাদের পাঠদানে বিঘ্ন ঘটে ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীর মধ্যে মনোপিড়ার সৃষ্টি হয়। কিছু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত চালু আছে। এসব বিদ্যালয়েও পাঠদানে সমস্যা দেখা দেয়। যসব অভিভাবকের সন্তান প্রাথমিক ও মাধ্যমিক দুই শাখাতেই পড়ে তাদের যাতায়াত ব্যয় বেড়ে যায়। আবার একটি সন্তান বাগিতে রেখে অপরকে নিয়ে অভিভাবকদের বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হয়। পবিত্র রমজান মাসে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। প্রাথমিকের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা রোজা রাখেন। এদেশের অধিকাংশ মানুষ ধর্মপ্রাণ মুসলিম। তাই, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সঙ্গে মিল রেখে প্রাথমিকের ছুটি নির্ধারণ করা যৌক্তিক হবে।
তারা আরো বলেন, সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অভিন্ন ছুটি নির্ধারণ খুবই জরুরি। এ দাবির পক্ষে আমাদের যুক্তিগুলো উপস্থাপন করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মহোদয়ের কাছে লিখিত আবেদন দাখিল করা হয়েছে। ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫৪দিন ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৭৬ দিন ছুটি রয়েছে। তাই, সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অভিন্ন ৭৬দিন ছুটি নির্ধারণের দাবি জানিয়েছে লিখিত আবেদনে।
এদিকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো পবিত্র রমজান মাসে বন্ধ রাখার দাবি জানিয়েছে বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদ। একইসঙ্গে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছুটির তালিকা প্রণয়নকারীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন সংগঠনটির নেতারা।
গত শুক্রবার ঢাকার সবুজবাগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় সংগঠনের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, রমজান মাসকে নিয়ে প্রাথমিকে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকদের মাঝে চলছে চরম ক্ষোভ। কেবলমাত্র প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা ছাড়া রমজান মাসে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। প্রাথমিকের বার্ষিক ছুটি ৫৪ দিন। উচ্চবিদ্যালয়সহ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি ৭৬ দিন। এ বৈষম্যমূলক ও অমানবিক কর্মকাণ্ড, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ ও শিশু অধিকারের পরিপন্থি। উচ্চবিদ্যালয়ের প্রাথমিক শাখা, কিন্ডারগার্টেন বিদ্যালয় পবিত্র রমজান মাসে বন্ধ। প্রাথমিকের তৃতীয় শ্রেণি থেকে বেশিরভাগ শিক্ষার্থী রোজা রাখেন। প্রচন্ড গরমে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের রোজার মধ্যে ক্লাস করা কষ্টকর।
জানা গেছে, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছুটির তালিকা অনুযায়ী এ প্রতিষ্ঠানগুলোতে ৭ এপ্রিল থেকে ছুটি হয়ে চলবে ২৬ এপ্রিল (বুধবার) পর্যন্ত। ২৭ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) থেকেই এ প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্লাস শুরু হবে। পবিত্র রমজান, ইস্টার সানডে, চৈত্র সংক্রান্তী, বাংলা নববর্ষ, শব-ই-কদর, জুমাতুল বিদা ও ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে এ প্রতিষ্ঠানগুলোতে সাপ্তাহিক ছুটির দিন ছাড়া ক্লাস বন্ধ থাকবে ১৪ দিন।
২০২৩ খ্রিষ্টাব্দে সরকারি বেসরকারি হাই স্কুল, নিম্নমাধ্যমিক স্কুলের ছুটির তালিকা অনুযায়ী এসব প্রতিষ্ঠানের ছুটি ২৩ মার্চ (বৃহস্পতিবার) শুরু হয়ে চলবে ২৭ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) পর্যন্ত। শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি। এ প্রতিষ্ঠানগুলো ক্লাস শুরু হবে ৩০ এপ্রিল (রোববার) থেকে। পবিত্র রমজান, স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস, ইস্টার সানডে, বৈসাবি, বাংলা নববর্ষ, শব-ই-কদর, জুমাতুল বিদা ও ঈদ-উল-ফিরত উপলক্ষে এ সময়ে সাপ্তাহিক ছুটি ছাড়া ২৬ দিন ক্লাস বন্ধ থাকবে।
সরকারি বেসরকারি কলেজ, সরকারি আলিয়া মাদরাসা ও টিটি কলেজের ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের ছুটির তালিকা অনুযায়ী এসব প্রতিষ্ঠানের ছুটি ২৩ মার্চ (বৃহস্পতিবার) শুরু হয়ে চলবে ২৭ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) পর্যন্ত। শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি। এ প্রতিষ্ঠানগুলো ক্লাস শুরু হবে ৩০ এপ্রিল (রোববার) থেকে। পবিত্র রমজান, স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস, পূণ্য শুক্রবার, ইস্টার সানডে, বৈসাবি, বাংলা নববর্ষ, শব-ই-কদর, জুমাতুল বিদা ও ঈদ-উল-ফিরত উপলক্ষে এ সময়ে সাপ্তাহিক ছুটি ছাড়া ২৬ দিন ক্লাস বন্ধ থাকবে।
২০২৩ খ্রিষ্টাব্দে মাদরাসার ছুটির তালিকা অনুযায়ী এ প্রতিষ্ঠানগুলোতে ছুটি ২২ মার্চ (বুধবার) শুরু হয়ে চলবে ২৭ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) পর্যন্ত। শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি। এ প্রতিষ্ঠানগুলো ক্লাস শুরু হবে ৩০ এপ্রিল (রোববার) থেকে। পবিত্র রমজান, স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস, বাংলা নববর্ষ, শব-ই-কদর, জুমাতুল বিদা ও ঈদ-উল-ফিরত উপলক্ষে এ সময়ে সাপ্তাহিক ছুটি ছাড়া ২৭ দিন ক্লাস বন্ধ থাকবে।
এসএসসি ও দাখিল ভোকেশনাল এবং জেএসসি ভোকেশনাল শিক্ষাক্রমের প্রতিষ্ঠানগুলোর ছুটির তালিকা অনুয়ায়ী এসব প্রতিষ্ঠানে ছুটি ২৩ মার্চ (বৃহস্পতিবার) শুরু হয়ে চলবে ২৭ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) পর্যন্ত। শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি। এ প্রতিষ্ঠানগুলো ক্লাস শুরু হবে ৩০ এপ্রিল (রোববার) থেকে। পবিত্র রমজান, স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস, পূণ্য শুক্রবার, ইস্টার সানডে, বৈসাবি, বাংলা নববর্ষ, শব-ই-কদর, জুমাতুল বিদা ও ঈদ-উল-ফিরত উপলক্ষে এ সময়ে সাপ্তাহিক ছুটি ছাড়া ২৬ দিন ক্লাস বন্ধ থাকবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।