জুমবাংলা ডেস্ক : রমজান মাসকে সামনে রেখে আগে থেকে বাজারে যেসব পণ্যের দাম বাড়ান অসাধু ব্যবসায়ীরা তার মধ্যে একটি হচ্ছে লেবু। এবার বাজার অনেকটাই স্থিতিশীল থাকলেও হঠাৎ লেবুর দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন সরবরাহকারীরা। খুচরায় এক লাফে দাম বেড়ে প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা পর্যন্ত। এক হালির দাম পড়ছে ৮০ টাকা পর্যন্ত।
ভোক্তাদের অভিযোগ, কয়েক দিন আগেও যে লেবুর হালি ২০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে, এখন সে লেবুর একটির দামই ২০ টাকা। এক লাফে কীভাবে এতটা দাম বাড়ে- তা তারা বুঝে উঠতে পারছেন না। দোকানিদের কাছে কারণ জানতে চাইলে তাদের একটাই জবাব, আড়তে দাম বেড়ে যাওয়ায় খুচরাতেও বাড়াতে হয়েছে।
গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে বড় সাইজের এলাচি লেবু ৮০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা যায়। সেই সঙ্গে মাঝারি সাইজের বিক্রেতারা যেটাকে সিলেটি লেবু বলছেন সেটিও একই দামে বিক্রি হচ্ছে।
বিক্রেতারা জানান, কয়েকদিন আগেও এলাচি লেবুর হালি সর্বোচ্চ ৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এখন বেড়ে ৭০ থেকে সর্বোচ্চ ৮০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। পাইকারিতে দাম হঠাৎ বেড়ে গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক খিলগাঁও বাজারের এক বিক্রেতা জানান, রমজানে লেবুর শরবত তৈরির জন্য চাহিদা বেশি থাকায় বরাবরই এর দাম বাড়তি থাকে। এবার আগেভাগেই দাম বেড়েছে। আড়তদাররা তাদের বলছেন, যেখান থেকে আনা হচ্ছে সেখানেই দাম বেশি। অন্যদিকে মৌসুম না হওয়ায় দাম আরও বেড়েছে। এ অজুহাতেই দাম বাড়ানো হচ্ছে বলে মনে করেন এ খুচরা বিক্রেতা।
এদিকে দীর্ঘ সময় ধরে স্বস্তি বিরাজ করলেও মৌসুম শেষ হয়ে আসায় কয়েক পদের তরিতরকারির সরবরাহ কমে এসেছে। এতে সবজির দামও আগের চেয়ে কিছুটা বেড়েছে। এর মধ্যে রয়েছে শিম, বেগুন, ফুল কপি ও বাঁধা কপি।
খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, আড়তে সরবরাহ কমতির দিকে থাকায় সপ্তাহের ব্যবধানে এগুলোর দাম বেড়েছে। নতুন মৌসুমের কিছু সবজি উঠতে শুরু করেছে। তবে সেগুলোর সরবরাহ কম।
বিক্রেতারা জানান, গত সপ্তাহের চেয়ে চলতি সপ্তাহে শিম কেজিতে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। একইভাবে বাড়তি বেগুনের দামও। অন্যান্য সবজির দাম স্থিতিশীল রয়েছে।
গতকাল রাজধানীর খুচরা বাজারে শিম সর্বোচ্চ ৫০ টাকা, বেগুন সর্বোচ্চ ৮০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। মুলার কেজি ৩০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ থেকে ৫০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, টমেটো ২০ থেকে ৩০ টাকা, শসা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, কাঁচামরিচ ৬০ টাকা করে বিক্রি হয়েছে। লাউ প্রতিটি আগের মতোই ৫০ থেকে ৬০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। গ্রীষ্মকালীন সবজির মধ্যে করলার কেজি ৮০ টাকা, ধুন্দল ৬০ থেকে ৭০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা।
এদিকে বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহ স্বাভাবিক হয়নি। বোতলজাত সয়াবিন তেলের সন্ধানে ভোক্তাদের এখনও ঘুরতে হচ্ছে দোকানে দোকানে। খুচরা বিক্রেতারাও জানেন না কবে নাগাদ সরবরাহ ঠিক হবে।
গত নভেম্বর মাস থেকেই বোতলজাত সয়াবিন তেলের সংকট চলছে। এর মধ্যে ব্যবসায়ীদের প্রস্তাবনায় সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ৮ টাকা বাড়ানোও হয়। কিন্তু সরবরাহ বাড়েনি। সম্প্রতি সংকট আরও তীব্র হয়েছে।
গত ১২ ফেব্রুয়ারি সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্য উপদেষ্টা সেখ বশির উদ্দিন আশ্বাস দিয়ে বলেছিলেন, পরবর্তী ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে ভোজ্যতেলের বাজার স্থিতিশীল হবে।
এদিকে ভোজ্যতেল পরিশোধন ও বাজারজাতকারী কোম্পানিগুলো গত রবিবার জানায়, রমজান সামনে রেখে বাজারে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বেশি ভোজ্যতেল সরবরাহ করা হচ্ছে। তাই সংকটের আশঙ্কা নেই। তবে বাজারের চিত্র বলছে ভিন্ন কথা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।