জুমবাংলা ডেস্ক : রোহিঙ্গাদের জরুরি মানবিক সহায়তা দিতে দাতা দেশগুলো জরুরি বৈঠকে বসছে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২২ অক্টোবর)। তবে বাংলাদেশের দাবি, শুধু তহবিল নয়, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে এসব দেশকে এগিয়ে আসতে হবে। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী এবং কক্সবাজারের স্থানীয় অধিবাসীদের জন্য সাহায্যের গুরুত্ব তুলে ধরতে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর যৌথভাবে আয়োজন করেছে দাতা সম্মেলনের। সম্মেলনে দাতা দেশগুলো দীর্ঘমেয়াদি মানবিক সাহায্যের বিষয়ে আলোচনা করবে বলে জানা গেছে। তবে বাংলাদেশ মনে করে, শুধু মানবিক সাহায্য দিলেই হবে না যেকোনও মূল্যে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরাতে হবে।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, বাংলাদেশ চাইবে এই সম্মেলন যাতে শুধু মানবিক সাহায্যই নয়, এই সমস্যার সমাধানও যাতে হয়। রোহিঙ্গারা এদেশে আসার তিন বছর হয়েছে, তাই তাদের ফিরিয়ে নিতে কি পদক্ষেপ নেয়া যায় সেই বিষয়েও আলোচনা করার আহ্বান জানানো হবে।
বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে দিতে দ্বিপাক্ষিক, চীনকে সাথে নিয়ে ত্রিপাক্ষিক এবং বহুপাক্ষিক কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। যদিও তাতে দৃশ্যত কোনও অগ্রগতি নেই।
পররাষ্ট্র সচিব আরও বলেন, আমরা আশাবাদী তাদের ফিরিয়ে দিতে। আমরা সবভাবেই চেষ্টা করছি। এই সমস্যা সমাধানে আমরা যে সচেষ্ট রয়েছি এই জিনিসটা তাদেরকে জানাতে হবে। রোহিঙ্গাদের কারণে বাংলাদেশের যে অর্থনৈতিক, পরিবেশগত এবং সামাজিক ক্ষতি হচ্ছে তা নিরুপণেরও উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব।
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বাংলাদেশ ও মিয়ানমারকে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে সহযোগিতার কথা বলেছেন। তিনি উভয় দেশ সফর শেষে তিন ধাপে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়ে একটা প্রস্তাবের রূপরেখা প্রণয়ন করেছেন। চীনের প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে তাঁর সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন। জুলাই ২০১৯ সালে প্রধানমন্ত্রী বেইজিং সফরের সময় চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং এবং প্রধানমন্ত্রী লি খোয়াছিয়াং বাংলাদেশকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। সে সময় রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে চীনের ভূমিকার কথা প্রথমবারের মতো এসেছে, যা একটা বড় কূটনৈতিক সাফল্য। প্রধানমন্ত্রীর এই সফরের পর রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিষয়ে চীনের ভূমিকা জোরালো হয়েছে। কমিউনিস্ট পার্টি অব চায়নার (সিপিসি) অভ্যন্তরীণ বিষয়ক মন্ত্রী সং তাও বেইজিংয়ে প্রধানমন্ত্রীকে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে তাঁদের ইতিবাচক ভূমিকার ব্যাপারে আশ্বস্ত করেছেন। চীন মিয়ানমারের রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়টা সৌহার্দপূর্ণভাবে শুরু করার বিষয়ে তাদের ইচ্ছার কথা বলে।
এদিকে- চীন, বাংলাদেশ ও মিয়ানমারকে নিয়ে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক অব্যাহত রাখার পাশাপাশি রাখাইন প্রত্যাবাসনের সহায়ক পরিবেশ তৈরিতে কাজ করে যাওয়ার কথা বলেছে চীন। চীন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এশিয়া বিভাগের মহাপরিচালক উ জিং হাউ বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের জানিয়েছে যে চীন মিয়ানমারকে রাখাইনে প্রত্যাবাসনের উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি করতে বলেছে। বাংলাদেশ এবং মিয়ানমার উভয় দেশে চীনের বাণিজ্যিক কার্যক্রম রয়েছে। চীন এই সমস্যা সমাধানে মিয়ানমারকে চাপ দেওয়ার ক্ষমতা রাখে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।