চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: রোহিঙ্গাদের ভোটার করা ও জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) পাইয়ে দেওয়ার মাধ্যমে অবৈধ অর্থ আদায়ের অভিযোগে চট্টগ্রাম ও বান্দরবানে কর্মরত নির্বাচন কমিশনের দুই অস্থায়ী কর্মচারীকে গ্রেফতার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সকালে নগরীর ডবলমুরিং থানার বাদামতলী মোড় থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রামের দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়-২ এর উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন।
গ্রেফতারকৃত দুজন হলেন, চট্টগ্রামের সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে কর্মরত অফিস সহকারী ঋষিকেশ দাশ এবং বান্দরবান জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে কর্মরত ডাটা এন্ট্রি অপারেটর নিরূপম কান্তি নাথ।
উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন বলেন, দুজন নির্বাচন কমিশনের প্রকল্পভুক্ত অস্থায়ী কর্মচারী। অবৈধভাবে রোহিঙ্গাদের এনআইডি সরবরাহ করে তারা অবৈধ অর্থ উপার্জন করেছেন অভিযোগ পেয়ে আমরা তদন্ত শুরু করেছিলাম। তদন্তে এর সত্যতা পাওয়া গেছে। এছাড়া তারা অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ বিভিন্নভাবে স্থানান্তর করে মানিলন্ডারিং আইনেও অপরাধ করেছেন।
দুজনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের বিধি মোতাবেক মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপ-সহকারী পরিচালক শরীফ।
রোহিঙ্গাদের ভোটার করা ও এনআইডি পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগে নগরীর কোতোয়ালী থানায় দায়ের হওয়া একটি মামলা বর্তমানে তদন্ত করছে সিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। ওই মামলায় এরইমধ্যে ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
রোহিঙ্গাদের এনআইডি দেওয়ার বিষয়টি জানাজানির পর গত ১৬ সেপ্টেম্বর রাতে চট্টগ্রাম নগরীর ডবলমুরিং থানা নির্বাচন কার্যালয়ের অফিস সহায়ক জয়নাল আবেদিনসহ তিনজনকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেন জেলা নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তারা। বাকি দুজন হল- জয়নালের বন্ধু বিজয় দাশ ও তার বোন সীমা দাশ ওরফে সুমাইয়া। জয়নালের হেফাজতে থাকা নির্বাচন কমিশনের লাইসেন্সকৃত একটি ল্যাপটপও উদ্ধার করা হয়, যেটি বিজয় ও সীমার কাছে রেখেছিলেন জয়নাল। ওই ল্যাপটপের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের এনআইডি দেওয়া হত বলে অভিযোগ করা হয় জয়নালের বিরুদ্ধে।
ওই রাতেই ডবলমুরিং থানা নির্বাচন কর্মকর্তা পল্লবী চাকমা বাদি হয়ে কোতোয়ালী থানায় পাঁচজনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় গ্রেফতার ১৩ জনের মধ্যে আছেন- নির্বাচন কমিশনের এনআইডি উইংয়ের কর্মী শাহনূর মিয়া, সাগর চৌধুরী ও সত্যসুন্দর দে, নির্বাচন কমিশনের অস্থায়ী কর্মী মোস্তফা ফারুক, মো. শাহীন, মো.জাহিদ হাসান এবং পাভেল বড়ুয়া, চট্টগ্রামের জ্যেষ্ঠ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ের উচ্চমান সহকারী মো. আবুল খায়ের ভূঁইয়া ও অফিস সহায়ক নাজিম উদ্দিন এবং মিরসরাই উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ের অফিস সহকারী আনোয়ার হোসেন।
মামলাটি দায়েরের পর রোহিঙ্গাদের এনআইডি সরবরাহ করে অবৈধ অর্থ উপার্জনের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে দুদক। এরইমধ্যে চট্টগ্রামের সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসার মো. মুনীর হোসাইন খান ও পাবনা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ শেখসহ পাঁচ কর্মকর্তার সম্পদের হিসাব চেয়ে নোটিশ পাঠিয়েছে দুদক।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।