জুমবাংলা ডেস্ক: প্রথম বিয়ে করেছেন রেল কর্মচারী পরিচয়ে। সেই সংসারে রয়েছে দুই সন্তান। পরের বিয়ে করেন র্যাব সদস্য পরিচয়ে। পরেরবার ডিএসবি পরিচয়ে করেন এসএসসি পরীক্ষার্থী এক তরুণীকে বিয়ে। তাঁর কোলে দেড় মাসের সন্তান। এক স্ত্রীর কাছ থেকে টাকা নিয়ে পাঠাতেন অন্য স্ত্রীকে। এটাই তাঁর ‘চাকরি’র বেতন বলে চালাতেন সংসার।
তবে কথায় আছে ধান খেয়ে ঘুঘু বারবার পালিয়ে গেলেও এক সময় ধরা পড়ে ফাঁদে। তেমনই ধরা খেয়েছেন প্রতারক সাব্বির হোসেন সাকিব। একটি মেমোরি কার্ড উদ্ধারের পর তাঁর প্রতারণার বিষয়টি ধরে ফেলেন তৃতীয় স্ত্রী তাসমিম।
সাব্বির হোসেন সাকিব রাজশাহীর দুর্গাপুর থানার সুখান দিঘি গ্রামের মৃত ইসমাইলের ছেলে। তাঁকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ। ভুক্তভোগী তাসমিম নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার চাংলা গ্রামের মামুন হোসেন পিন্টুর মেয়ে।
পুলিশ ও ভুক্তভোগী পরিবার জানায়, সাকিবের সঙ্গে মোবাইলে পরিচয় ও প্রেম হয় তাসমিমের। এ সময় সাকিব নিজেকে ডিএসবি পরিচয় দেন। ২০২০ সালের মার্চে মৌখিকভাবে তাঁদের বিয়ে হয়। বদলগাছীতে ভাড়া বাসায় সংসার পাতেন তাঁরা। তবে বিয়ের পর থেকে স্ত্রীসহ সবার কাছে নিজের পরিচয় লুকাতেন সাকিব। স্ত্রীকে কখনো নিজের বাড়িতেও নিয়ে যাননি। ব্যক্তিগত ব্যাগে কাউকে হাত দিতে দিতেন না সাকিব। একদিন তাসমিম কৌশলে সাকিবের একটি মেমোরি কার্ড উদ্ধার করে তার মধ্যে আরো দুই স্ত্রী-সন্তানের ছবি দেখতে পান। পরে তিনি বিষয়টি বাবা-মাকে জানান।
এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে বিবাদ শুরু হলে সোমবার (১৭ জানুয়ারি) পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন সাকিব। এ সময় তাঁকে আটকে রাখে শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
ওই রাতেই তাসমিমের মা বাদী হয়ে সাকিবের বিরুদ্ধে থানায় প্রতারণা মামলা করেন। পরে পুলিশ সাকিবকে গ্রেপ্তার করে থানায় নেয়।
থানায় জিজ্ঞাসাবাদে সাকিব স্বীকার করেন, তিনি রেলওয়ে কর্মচারী পরিচয়ে প্রথম বিয়ে করেন নাটোরে। সেখানে দুটি সন্তান রয়েছে তাঁর। র্যাব সদস্য পরিচয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করেন বগুড়ার দুপচাঁচিয়া থানায়। পরে ডিএসবি পরিচয়ে বদলগাছীর তাসমিমকে বিয়ে করেন। এই সংসারে দেড় মাসের একটি কন্যাসন্তান রয়েছে তাঁর।
ভুক্তভোগী তাসমিম দাবি করেন, তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ধারের কথা বলে এক লাখ ২৫ হাজার টাকা নিয়েছেন সাকিব।
তাসমিম বলেন, ‘গ্রেপ্তার হওয়ার পর জানলাম সে প্রথম বউয়ের কাছ থেকে টাকা নিয়ে দ্বিতীয় বউয়ের খরচ দেয় এবং দ্বিতীয় বউয়ের কাছ থেকে টাকা নিয়ে আমাকে চালায়। আবার আমার পরিবারের কাছ থেকে টাকা নিয়ে দ্বিতীয় বউ চালায়। এটাই তার চাকরি। আমি বিশ্বাস করতে পারছি না এভাবে প্রতারণা করবে। আমার কোলে দেড় মাসের কন্যাসন্তান। আমি এবার এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছি। আমি এখন দাঁড়াব কোথায়, কোনো পথ দেখছি না।’
বদলগাছী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতিকুল ইসলাম জানান, সাব্বির প্রতারণা করে তিনটি বিয়ে করেছেন। তাঁর কোনো কর্ম নেই। তিনি এক বউয়ের টাকা দিয়ে অন্য বউকে চালান। তাঁকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। বদলগাছীর বিয়ে রেজিস্ট্রি করেননি। এটাও অপরাধ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।