জুমবাংলা ডেস্ক : লক্ষ্মীপুরের সয়াল্যান্ড থেকে কৃষকের উৎপাদিত সয়াবিন গাছ কাটার ধুম পড়েছে। ক্ষেত থেকে সয়াবিন গাছ কেটে সেগুলো মাড়াই করে ঘরে তোলার ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষকেরা।
এবার ফলনও ভালো হয়েছে বলে জানিয়েছে চাষিরা৷ আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে সময় মতো ফলন ঘরে তুলতে পারবেন বলে আশাবাদী তারা।
কৃষি বিভাগ বলছে, এ মৌসুমে জেলায় এবার যে পরিমাণ সয়াবিন উৎপাদন হয়েছে- যার বাজারমূল্য প্রায় ৫০০ কোটি টাকার মতো হবে। তাদের হিসেব মতে, সারাদেশে যে পরিমাণ সয়াবিন উৎপাদন হয়, এরমধ্যে ৭০-৮০ শতাংশ সয়াবিন চাষাবাদ হয় লক্ষ্মীপুরে।
লক্ষ্মীপুরের মেঘনা নদীর উপকূলীয় এলাকা মাটি ‘সয়াল্যান্ড’ হিসেবে পরিচিত। জেলার সদর উপজেলার দক্ষিণ এবং পশ্চিম অঞ্চল ও রায়পুর, রামগতি ও কমন নগর উপজেলায় সবচেয়ে বেশি সয়াবিনের চাষাবাদ হয়। নদীমাতৃক হওয়ার মেঘনার বিভিন্ন চরেও এখন ফলানো হয় সয়াবিন।
কৃষকরা জানায়, ধান বা অন্যকোন ফসলের চেয়ে সয়াবিনে লাভ বেশি। গত কয়েক বছর ধরে ভালো দামে বিক্রি হচ্ছে সয়াবিন। তবে বীজ, সার, ওষুধ, চাষাবাদ এবং শ্রমিক খরচ বৃদ্ধি পাওয়ার উৎপাদন খরচও বেড়ে গেছে। তবে জমি উর্বর থাকায় সয়াবিনের পর পরবর্তীকালে ধানের ফলন ভালো হয় সেখানে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, জেলায় এবার ৪১ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে সয়াবিনের আবাদ হয়েছে। গত মৌসুমে আবাদ হয়েছে ৩৮ হাজার হেক্টর জমিতে। আবাদ জমির মধ্যে জেলার রামগতিতে সবচেয়ে বেশি সয়াবিনের চাষাবাদ করা হয়। এ উপজেলাতে এবার সয়াবিনের চাষ হয়েছে সাড়ে ১৬ হাজার হেক্টর জমিতে। এরপরের অবস্থান কমলনগর। এ উপজেলাতে আবাদ হয়েছে সাড়ে ১২ হাজার হেক্টর জমিতে। সদর উপজেলায় ৬ হাজার ৩০০, রায়পুরে ৬ হাজার ২০০ এবং রামগঞ্জে ১০০ হেক্টর জমিতে সয়াবিন চাষাবাদ হয়েছে।
জেলায় এবার ৮৩ হাজার ২০০ মেট্রিক টন সয়াবিনের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ। এরই মধ্যে মাঠ থেকে প্রায় ৮০ শতাংশের বেশি সয়াবিন কাটা হয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. জাকির হোসেন বলেন, চলতি মৌসুমে কৃষি বিভাগ থেকে জেলাতে ৬ হাজার ৭০০ জন সয়াবিন চাষিকে প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। তাদের বীজ এবং সার দেওয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, সয়াবিনের উৎপাদন বাড়াতে আমরা কৃষকদের সঠিক পরামর্শ দিয়েছি। এবার ফলন ভালো হয়েছে। প্রতি হেক্টরে গড়ে ২.২ টন করে ফলন এসেছে। বর্তমানে কেজিপ্রতি সয়াবিনের দাম ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। সে হিসেবে জেলাতে প্রায় ৫০০ কোটি টাকার সয়াবিন উৎপাদন হয়েছে। আর সয়াবিন কেন্দ্রীক ৬০০ কোটি টাকার বাণিজ্য হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, এখানকার উৎপাদিত সয়াবিন দিয়ে পশু এবং মাছের খাদ্য তৈরী হয়। ফলে বিভিন্ন ফিড কোম্পানির কাছে সয়াবিনের চাহিদা রয়েছে। তারা কৃষকদের কাছ থেকে সয়াবিন কিনে নিচ্ছে। এতে ভালো দাম পাচ্ছে চাষিরা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।