জুমবাংলা ডেস্ক : হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে বুধবার গভীর রাতে ৮টি লাশের কফিন দেখে কান্নায় ভেঙ্গে পড়লেন স্বজনরা। বুকভরা স্বপ্ন নিয়ে এসব রেমিট্যান্স যোদ্ধা বিদেশে পাড়ি জমিয়ে ছিলো। সৌদি থেকে ৫ জনের লাশ আর মালয়েশিয়া থেকে ৩ জনের লাশ দেশে পৌঁছেছে। বিমান বন্দর কল্যাণ ডেক্স থেকে লাশের ছাড়পত্র নিয়ে চোখের পানি মুছতে মুছতে স্ব স্ব গ্রামের বাড়িতে এসব লাশ দাফন কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে। বিমান বন্দর কল্যাণ ডেক্স এসব তথ্য জানিয়েছে।
এছাড়া সৌদি আরব থেকে ২০ নারীসহ আরও ১৮৩ বাংলাদেশি কর্মী দেশে ফিরেছেন। গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ১১টায় সাউদিয় এয়ারলাইন্স (এসভি-৮০৪) বিমানে ৮৯ জন আর রাত ১.১০ মিনিটে (এসভি-৮০৮) বিমানে ফিরেছে ৯৪ বাংলাদেশি কর্মী।
প্রবাসী কল্যাণ ডেক্সের সহযোগীতায় গতকালও ফেরত আসা কর্মীদের ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম থেকে জরুরি সহায়তা প্রদান করা হয়। গতকাল সৌদি ফেরত আসা সাথী বেগম (৩০) এতোটাই অসুস্থ ছিলেন যে বিমানবন্দর থেকে প্রবাসী কল্যাণ ডেক্সের সহায়তায় উত্তরার একটি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়। সাথী জানান, সৌদি আরবে নিযোগকর্তার হাতে নির্যাতনের শিকার হন।
সাথীর সাথে একই সমস্যা নিয়ে দেশে ফিরেছে ঢাকার হিরা খাতুন, বি-বাড়িয়ার আবেদা খাতুন,সুনামগঞ্জের আমিরুন বেগম, মৌলভিবাজারের ফারজানা আক্তারসহ ২০ নারী।
ফেরত আসা পাবনার শরিফ জানান, মাত্র এব বছর আগে গিয়েছিলেন সৌদি আরবে। সেখানে কাগজপত্র থাকা সত্বেও শুণ্য হাতে দেশে ফিরতে হয়। কিশোরগঞ্জের শাকিল, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার খাইরুল ইসলামেরও একই অবস্থা। আরো ফিরেছে পিরোজপুরের শামিম, ময়মনসিংহের আমিন,কুমল্লার বাবুল ও রশিদসহ ১৮৩ কর্মী।
চলতি বছরের জানুয়ারিতেই সৌদি থেকে দেশে ফিরেছেন ১৭৫ নারীসহ ৩ হাজার ৬৩৫ বাংলাদেশি। আর প্রবাসী কল্যাণ ডেক্সের তথ্য অনুযায়ী ২০১৯ সালে সৌদিসহ বিভিন্ন দেশ থেকে মোট ৬৪ হাজার ৬৩৮ কর্মী খালি হাতে দেশে ফিরেছেন ।
সৌদি দেড় বছর ধরে কাজ করছিলেন সুনামগঞ্জের রিপা আক্তার। চাকরি করে স্বামী সন্তানদের জন্য টাকাও পাঠাতেন নিয়মিত। কিন্তু হঠাৎ একদিন সৌদি থেকে ফোন করে তার বাড়িতে জানানো হয়, সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে রিপা।
রিপার বড় ভাই আব্দুল হক কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, স্বামীর আয় ভালো ছিল না। সন্তানদের সুখ-শান্তির চিন্তা করেই সৌদি গিয়েছিল রিপা। কিন্তু তার এমন মৃুত্য কিছুতেই মানতে পারিছ না।
একই ফ্লাইটে রোকসানা বেগমের লাশ দেশে আসে। তার ভাই রাসেল বলেন, ১০-১১ মাস আগে রোকসানা সৌদি আরবে যান কাজ করতে। কিন্তু সেখানে গিয়ে কিছুদিন কাজ করার পরে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। এ সময় তাকে আর কাজে রাখতে রাজি হয়নি সৌদি মালিক। তিনি বলেন, দেশে ফেরার জন্য রোকসানা দূতাবাসের সেল্টারহোমে আশ্রয় নেন। কিন্তু সেখানে বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে দূতাবাস থেকে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তিনি মারা যায়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।