আন্তর্জাতিক ডেস্ক : লেবাননের রাজধানী বৈরুতে গত মঙ্গলবার বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত একশ ৩৫ জন নিহত ও চার হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। এ ঘটনার জেরে লেবানন বন্দরের কয়েকজন কর্মকর্তাকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের গৃহবন্দি রাখা হবে।
বৈরুতে বিস্ফোরণের জেরে লেবাননে দুই সপ্তাহের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। লেবাননের প্রেসিডেন্ট মাইকেল আউন বলেছেন, ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় গুদামে রাখা দুই হাজার সাতশ ৫০ টন অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের কারণে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।
লেবাননের কাস্টমস প্রধান বাদরি দাহের বলেছেন, এসব রাসায়নিক পদার্থ সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য তার সংস্থা বারবার বললেও কোনো কাজ হয়নি। কৃষি কাজের জন্য সার এবং বিস্ফোরক বানানোর জন্য অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট ব্যবহার করা হয়।
গতকাল বুধবার লেবাননের মন্ত্রীপরিষদের এক জরুরি বৈঠকে লেবাননের প্রেসিডেন্ট বলেন, বিস্ফোরণের কারণে বৈরুত শহরে যে আতঙ্ক নেমে এসেছিল সেটি ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। পুরো শহর দুর্যোগ কবলিত হয়ে পড়েছিল।
ব্রিটেনের শেফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা বলছেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানের হিরোশিমা শহরে যে পারমানবিক বোমা ফেলা হয়েছিল, তার দশভাগের এক ভাগ শক্তি ছিল বৈরুত বিস্ফোরণে। বৈরুতের এ বিস্ফোরণ ইতিহাসের সবচেয়ে বড় পারমানবিক-বহির্ভূত বিস্ফোরণ।
স্থানীয় গণমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ওই গুদামে যে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট ছিল, সেসব ছয় বছর ধরে অনিরাপদ অবস্থায় সেখানে পড়ে ছিল। ২০১৩ সালে একটি জাহাজে করে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট বৈরুত বন্দরে এসেছিল।
বৈরুত বন্দরের প্রধান এবং কাস্টমস প্রধান স্থানীয় সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, তারা জানতেন যে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট বিপজ্জনক এবং বন্দরের নিরাপত্তার কথা ভেবে সেখানে রাখা রাসায়রিক পদার্থ রপ্তানি কিংবা বিক্রি করে দেওয়ার জন্য আদালতের অনুমতি চেয়ে একাধিকবার চিঠি লেখা হয়েছিল।
লেবাননের সুপ্রিম ডিফেন্স কাউন্সিল জানিয়েছে, এ ঘটনার জন্য যারা দোষী হবে তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া হবে। দেশটির তথ্যমন্ত্রী মানাল আবদেল সামাদ বলেছেন, ২০১৪ সাল থেকে বন্দরের যেসব কর্মকর্তা সেখানে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট মজুদ রাখা, সেগুলো তত্ত্বাবধান করা এবং এর কাগজপত্র যারা দেখাশুনা করেছেন, সবাই গৃহবন্দি থাকবে।
সূত্র : বিবিসি বাংলা
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।