আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচনের জন্য কংগ্রেস গতকাল শনিবার চতুর্থ দফার প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে। প্রথম দফার লোকসভা নির্বাচনের এক মাসের কম সময় আগে কংগ্রেস ৪৫ জন প্রার্থীর এই তালিকা প্রকাশ করল।
তালিকায় থাকা বড় কিছু নাম হলো মধ্যপ্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী দিগ্বিজয় সিং, কার্তি চিদাম্বরম ও দানিশ আলী। দানিশ গত বুধবারই কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন।
ঘোষিত তালিকা অনুযায়ী, কংগ্রেসের উত্তর প্রদেশের সভাপতি অজয় রাই টানা তৃতীয়বারের মতো বরানসি থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। খবর এনডিটিভি
আসন্ন নির্বাচনের জন্য কংগ্রেস প্রথমবারের মতো উত্তর প্রদেশ থেকে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আমেথি ও রায়বেরেলি আসনে কারা প্রার্থী হবেন, সে রহস্য রয়েই গেল।
নির্বাচনী আসন দুটি কংগ্রেসের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। তবে ২০১৯ সালে আমেথিতে বিজেপির প্রার্থী স্মৃতি ইরানির কাছে হেরে যান কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। কেরালার ওয়েনাডসহ আমেথি থেকে রাহুলের আবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সম্ভাবনা আছে।
এখন সবার দৃষ্টি রায়বেরেলির দিকে। আসনটি থেকে রাহুলের বোন ও কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর নির্বাচনী রাজনীতিতে অভিষেক হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
রায়বেরেলি আসনটি ছিল কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি সোনিয়া গান্ধীর। তিনি এখান থেকে টানা পাঁচবার জয়ী হন। আসনটি তিনি ছেড়ে দিয়েছেন। তিনি এখন রাজ্যসভার সদস্য।
উত্তর প্রদেশে সমাজবাদী পার্টির সঙ্গে আসন ভাগাভাগি ব্যবস্থার অংশ হিসেবে এখানকার ৮০টি আসনের মধ্যে ১৭টিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে কংগ্রেস। এখন তারা নয়টি আসনের জন্য দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে।
রাজ্যসভার সাংসদ দিগ্বিজয় সিংকে তাঁর সাবেক লোকসভা আসন মধ্যপ্রদেশের রাজগড় থেকে প্রার্থী করা হয়েছে। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে এই আসন থেকে জয়ী হয়েছিলেন তিনি।
২০১৯ সালের নির্বাচনে মধ্যপ্রদেশের ২৯টি আসনের মধ্যে মাত্র একটি জিতেছিল কংগ্রেস। ফলে রাজগড় আসন থেকে দিগ্বিজয়ের জয়ের চেষ্টা কঠিন হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
প্রবীণ কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় ২০১৯ সালের নির্বাচনে ভোপাল থেকে বিজেপির প্রার্থী প্রজ্ঞা ঠাকুরের বিরুদ্ধে লড়েছিলেন। এই নির্বাচনে দিগ্বিজয় সাড়ে তিন লাখের বেশি ভোটের ব্যবধানে হেরেছিলেন।
কার্তি চিদাম্বরমকে তামিলনাড়ুর শিবগঙ্গা আসনে প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে। এখানে তিনি ২০১৯ সালের নির্বাচনে জিতেছিলেন। তবে ২০১৪ সালের নির্বাচনে হেরেছিলেন। আসনটি চিদাম্বরম পরিবারের শক্ত ঘাঁটি। কার্তির বাবা পি চিদাম্বরম দীর্ঘদিন আসনটির সাংসদ ছিলেন।
মায়াবতীর নেতৃত্বাধীন বহুজন সমাজ পার্টিতে (বিএসপি) ছিলেন দানিশ। তিনি এই দল থেকে আমরোহা আসনের সাংসদ ছিলেন। একই আসন থেকে কংগ্রেসও তাঁকে মনোনীত করেছে। কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার মাত্র তিন দিন পর তিনি দলটির মনোনয়ন পেলেন।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে বিজেপি সাংসদ রমেশ বিধুরি লোকসভায় দানিশকে লক্ষ্য করে সাম্প্রদায়িক স্লোগান দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মহুয়া মৈত্রর সমর্থনে কথা বলায় গত ডিসেম্বরে দানিশকে বহিষ্কার করে বিএসপি।
কংগ্রেস–ঘোষিত তালিকায় আরও কিছু উল্লেখযোগ্য নাম হলো সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কান্তিলাল ভুরিয়া, বীরেন্দর রাওয়াত, মানিকরাম ঠাকুর।
কান্তিলাল মধ্যপ্রদেশের রাতলাম থেকে প্রার্থী মনোনীত করা হয়েছে। উত্তরাখন্ডের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী হরিশ রাওয়াতের ছেলে বীরেন্দরকে হরিদ্বার থেকে প্রার্থী করা হয়েছে। আর মানিকরাম লড়বেন তামিলনাড়ুর বিরুদ্ধনগর থেকে।
কংগ্রেস চতুর্থ দফায় ৪৬টি নির্বাচনী আসনের তালিকা প্রকাশ করেছে। তবে তারা ৪৫টি আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। এ নিয়ে চার দফায় কংগ্রেস মোট ১৮৩ জন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করল।
ভারতের লোকসভার ৫৪৩টি আসনে সাত দফায় ভোট হবে। নির্বাচন শুরু হবে আগামী ১৯ এপ্রিল। শেষ হবে ১ জুন। ভোট গণনা ও ফল প্রকাশিত হবে ৪ জুন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।