আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিপ্লবী ফিদেল কাস্ত্রোর দেশ কিউবায় এখন শত্রুদের দাপট। বিদেশি মুদ্রায় কেনাকাটা হচ্ছে পণ্য। বিদেশি মুদ্রায় পণ্য কেনার দোকানের সামনে ভোর থেকে লাইন করে দাঁড়িয়ে পণ্য কিনছে মানুষ। সপ্তাহের শুরুতে বিদেশি মুদ্রায় পণ্য কেনার দোকানগুলোতে খাদ্যসামগ্রি আর হাইজিন প্রোডাক্টস, অর্থাৎ জীবাণুমুক্ত করতে সহায়ক জিনিসগুলো বিক্রি হয়েছে৷তবে এখন প্রায় সব ধরনের পণ্যই পাওয়া যাচ্ছে৷
করোনাকালে পণ্যসামগ্রির চরম ঘাটতি দেখা দিয়েছিল সারা দেশের সব দোকানে৷ তাক আর রেফ্রিজারেটর ভর্তি নানা ধরণের পণ্য নিয়ে নতুন এই দোকানগুলো খোলায় কিউবার নাগরিকরা তাই প্রতিদিন ছুটে আসছেন এসব দোকানে৷তবে সবাই কিনতে পারছেন না৷যাদের কাছে ইউরো, ডলার বা অন্য কোনো বিদেশি মুদ্রা আছে, শুধু তারাই ডেবিট কার্ডে দাম পরিশোধ করে কিনতে পারছেন প্রয়োজনীয় সব পণ্য৷
সরকার এমন কিছু দোকান খোলার অনুমতি দিতে চলেছে যেখানে পণ্য কিউবার মুদ্রা পেসো দিয়ে কেনা যাবে না, কিনতে হবে বিদেশি মুদ্রার বিনিময়ে- এই খবরটা যখন প্রথম জানা গেল, বিশ্বাসই হয়নি কারো৷তবে পরে প্রেসিডেন্ট মিগুয়েল ডিয়াজ-কানেল বিষয়টি নিশ্চিত করলে সব সংশয় দূর হয়ে যায়৷
সরকারের এই পদক্ষেপ দ্বীপদেশটিতে অর্থনৈতিক বিভাজনকে স্পষ্ট করে তুলেছে৷ একদিকে রয়েছেন সরকারি চাকুরিজীবীরা, যারা বেতন পান কিউবান পেসোয়৷ অন্যদিকে রয়েছেন এমন কিছু মানুষ, যাদের প্রবাসী আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে টাকা পাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে৷
সমাজতান্ত্রিক দেশ কিউবা এমনিতে সবসময় শত্রুর (পুঁজিবাদী বিশ্ব, প্রধানত যুক্তরাষ্ট্রের) সঙ্গে প্রপাগান্ডা যুদ্ধে ব্যস্ত থাকে৷ এখন সেই শত্রুর মুদ্রাই কিউবার অস্তিত্ব রক্ষায় কাজে লাগছে, দেশের ব্যর্থ অর্থনৈতিক মডেলকেও সহায়তা করছে সেই মুদ্রা৷
দলীয় নেতারা এতদিন দেশের সার্বভৌমত্ব নিয়ে অহঙ্কার করতেন৷ এখন প্রকৃত অর্থে বাস্তবতার কাছে তারা হেরে গেছেন৷ নিজেদের মুদ্রা তো এখন স্রেফ রঙিন কাগজের টুকরোর মতো প্রায় মূল্যহীন৷ এই পরিস্থিতিতেও তারা ফোলা পেট নিয়ে সরকারি দপ্তরে বসে থাকতে পারছেন মূলত সবুজ রঙের ডলারের জোরে৷
এতদিন যে বিদেশি মুদ্রার সমালোচনা করে এসেছেন, এখন সেই মুদ্রাকেই আশা-ভরসা ভাবতে বাধ্য করা হচ্ছে৷ বলা হচ্ছে, বিদেশি মুদ্রায় পণ্য কেনার দোকানগুলোর আয় পেসোয় লেনদেন হয় এমন সরকারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সহায়তা করবে৷ শুধু এমন কথায় জনমনের অনাস্থা দূর করা মোটেই সহজ নয়৷
বিদেশি মুদ্রায় পণ্য কেনার মোট ৬২টি দোকান খোলা হয়েছে৷ কিউবার জনসংখ্যার (এক কোটি ১০ লাখ) শতকরা কতভাগ ওই সব দোকানে কেনাকাটা করতে পারছেন তা বলা কঠিন৷
কেনাকাটায় ব্যবহারের জন্য গত বছর ব্যাংক থেকে ১৫ হাজারেরও বেশি ডেবিট কার্ড ছেড়েছে সরকার৷
সূত্র : ডয়েচে ভেলে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।