জুমবাংলা ডেস্ক : ঘূর্ণিঝড় রেমালের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম অর্থনৈতিক সম্ভাবনার খাত চিংড়িতে। এবারের ঘূর্ণিঝড়ে খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরায় ভেসে গেছে হাজার হাজার ঘের। টাকার অঙ্কে যে ক্ষতি দাঁড়ায় ৩৩২ কোটি টাকারও বেশি। এতে চলতি অর্থবছরে চিংড়ি উৎপাদন নেমে আসতে পারে অর্ধেকে। যার বড় প্রভাব পড়বে রফতানিতেও। চাষিরা এ ক্ষতি পোষেবেন কী করে?
রোববার রাতে ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতের পর স্পষ্ট হতে থাকে উপকূলের ক্ষতচিহ্ন। দুর্বল বেড়িবাঁধ ভেঙে পানি ঢুকে পড়ে লোকালয়ে। আর সে পানিতে খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরায় তলিয়ে যায় হাজার হাজার চিংড়ি ঘের। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত খুলনার পাইকগাছা উপজেলা। এখানে চার হাজার ঘেরের মধ্যে আড়াই হাজারই তলিয়ে গেছে। কয়রায় ৭ হাজার ঘেরের মধ্যে তলিয়ে গেছে ৫ হাজার ঘের। সব মিলিয়ে খুলনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৯ হাজারের বেশি ঘের।
এছাড়া বাগেরহাটে ২ হাজার ৭০০ এবং সাতক্ষীরায় ৩ হাজার ৯০০ ঘের তলিয়ে গেছে। টাকার অঙ্কে ৩৩২ কোটি টাকারও বেশি ক্ষতি হয়েছে এ তিন জেলার চিংড়ি খাতে। নোংরা পানি ঢোকায় ঘেরে স্থির থাকা মাছগুলোও ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত চিংড়ি চাষিরা বলেন, ‘আমাদের সব ঘেরই তলিয়ে গেছে। লাখ লাখ টাকার গলদা বানে ভেসে গেছে। আমদের এখন পথে বসার উপক্রম। বর্তমানে কীভাবে ঋণ শোধ করবো, আর কীভাবে সংসার চালাবো, জানি না!’
আধা নিবিড় খুলনা চিংড়ি চাষি সমিতির সভাপতি এম এ হাসান পান্না বলেন, চাষিরা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবের পর এখানে আর কোনো মাছ পাওয়া যাবে বলে মনে হচ্ছে না। এ বছর লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেক চিংড়িও উৎপাদন হবে না। সরকারি সহযোগিতা ছাড়া চাষিদের বাঁচানো মুশকিল হবে।
এ বিষয়ে সি ফুড এক্সপোর্ট বাইং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক সুজন আহমেদ বলেন, ‘বায়ারদের সঙ্গে যে চুক্তি করেছি, তা থেকে আমরা এখন বঞ্চিত হবো। এতে আমাদের ব্যবসার ক্ষতি হবে। আর উৎপাদন কম হলে, বড় প্রভাব পড়বে রফতানি খাতে; বাদ যাবে না দেশের অর্থনীতিও।’
চাষিদের সহায়তায় বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে জানিয়ে খুলনা বিভাগ মৎস্য অধিদফতরের উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ক্ষতি পুষিয়ে নিতে চাষিদের তালিকা করা হয়েছে। তাদের যেন প্রণোদনা দেয়া যায়, সে বিষয়েও সুপারিশ করা হয়েছে।
গেলো অর্থবছরে খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরায় সোয়া লাখ মেট্রিক টন চিংড়ি উৎপাদন হয়েছিলো, যা রফতানি করে ২ হাজার ৪১২ কোটি টাকার বেশি আয় হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।