আমাদের সৌরজগতের দ্বিতীয় বৃহত্তম গ্রহ শনির কথা উঠলেই চোখের সামনে উজ্জ্বল বলয়বেষ্টিত এক গ্রহের ছবি ভেসে ওঠে। হাজার বছর ধরে কোটি কোটি বরফকণা আর ছোট পাথরের টুকরার সমন্বয়ে তৈরি এই বলয় আগামী বছরের শুরুতে পৃথিবী থেকে দেখা যাবে না বলে জানিয়েছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। তাঁদের দাবি, সাময়িক সময়ের জন্য শনি গ্রহের বলয় আমাদের সামনে থেকে অদৃশ্য হয়ে যাবে।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, বলয় দেখার বিষয়টি আসলে শনি গ্রহের প্রান্তিকীকরণের ওপর নির্ভরশীল। শনি গ্রহ ২৬ দশমিক ৭ ডিগ্রিতে কাত হয়ে অক্ষের ওপর ঘুরছে। গ্রহের অক্ষ অন্যদিকে কাত হলে বলয় আমাদের দৃষ্টি থেকে হারিয়ে যায়। এই পরিবর্তন অবশ্য অস্থায়ী। প্রতি ২৯ দশমিক ৫ বছরে শনি সূর্যকে প্রদক্ষিণ করার সময় এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়। ২০২৫ সালের মার্চের পরে বলয় আবার আবির্ভূত হবে। আবারও শনি গ্রহ অক্ষে কাত হওয়ার কারণে ২০২৫ সালের নভেম্বরে বলয় অদৃশ্য হয়ে যাবে। পূর্ণ বলয় ২০৩২ সালের মধ্যে সম্পূর্ণ দেখা যাবে।
যুক্তরাষ্ট্রের সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিদ ভাহে পেরুমিয়ান বলেন, প্রতি ১৩ থেকে ১৫ বছরে পৃথিবী থেকে শনির বলয়ের প্রান্ত দেখা যায়। তখন বলয় খুব কম আলোকে প্রতিফলিত করে। এ সময় বলয় দেখা খুব কঠিন হয়ে যায়।
শনির বলয়ের উৎপত্তি নিয়ে জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের মধ্যে বিতর্ক রয়েছে। ধারণা করা হয়, ৪০০ কোটি বছর আগে শনি গ্রহের কোনো চাঁদ মাধ্যাকর্ষণের কারণে ধ্বংস হয়ে এমন বলয় তৈরি হয়েছে। আবার কেউ কেউ ধূমকেতুর অবশিষ্টাংশ বলে মনে করে এই বলয়কে।
প্রাথমিকভাবে বরফের কণা, পাথুরে ধ্বংসাবশেষ আর মহাজাগতিক ধূলিকণা দ্বারা এই বলয় গঠিত বলে ধারণা করা হয়। বলয়ের কণা আকার ও অবস্থানের দিক থেকে ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হয়। শনির বলয় কাঠামো একক কোনো কঠিন সত্তা নয়। অনেক পর্যায়ের বলয় নিয়ে এই কাঠামো গঠিত। বলয়ের আকার ও ধরন শনি গ্রহের বিভিন্ন চাঁদের সঙ্গে মহাকর্ষীয় মিথস্ক্রিয়ার কারণে প্রভাবিত হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।