বলয়ের জন্য শনি গ্রহ বিখ্যাত। এর ৭টি মনোমুগ্ধকর বলয় আছে। সৌরজগতের দ্বিতীয় বৃহত্তম গ্রহ। সূর্য থেকে দূরত্বের দিক থেকে ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে। খালি চোখে দেখা যায়, এমন গ্রহের মধ্যে শনিই সবচেয়ে দূরে। পৃথিবী থেকে গ্রহটির দূরত্ব ১৫৯.০৬ কোটি কিলোমিটার।
প্রাচীনকাল থেকেই এ গ্রহের কথা জানতো মানুষ। ১৬১০ সালে টেলিস্কোপের সাহায্যে প্রথম গ্রহটি দেখেন গ্যালিলিও গ্যালিলি। ১৬৫৯ সালে শনির বলয়ের রহস্য ভেদ করেন ডাচ জ্যোতির্বিদ ক্রিস্টিয়ান হাইগেনস। রোমান কৃষিদেবতা স্যাটার্নের নামানুসারে গ্রহটির নাম রাখা হয়ে স্যাটার্ন বা শনি।
বর্তমানে শনির মোট উপগ্রহ ১৪৬টি। এর চেয়ে বেশি উপগ্রহ আর কোনো গ্রহের নেই। ভবিষ্যতে এ গ্রহের আরও উপগ্রহ আবিষ্কার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এটা অবশ্য নির্ভর করে উন্নত টেলিস্কোপ ও প্রযুক্তির ওপর। সৌরজগতের চারটি গ্যাসীয় গ্রহের মধ্যে একটি শনি। গ্রহটির বায়ুমণ্ডলের বেশির ভাগই হাইড্রোজেন, প্রায় ৯৬ ভাগ। এ ছাড়া রয়েছে কিছু হিলিয়াম ও অল্প পরিমাণে মিথেন ও অ্যামোনিয়া।
পৃথিবী থেকে শনির আয়তন প্রায় ৭৬০ গুণ বেশি। ভরও বেশি প্রায় ৯৫ গুণ। যেহেতু গ্রহটি গ্যাসীয়, তাই মঙ্গল বা পাথুরে গ্রহের মতো এ গ্রহে পর্বত বা গিরিখাত নেই।
ভর: ৫.৬৮৩ × ১০২৬ কেজি
ব্যাস: ১ লাখ ১৬ হাজার ৪৬০ কিলোমিটার
পরিধি: ৩ লাখ ৭৮ হাজার ৬৭৫ কিলোমিটার
পৃষ্ঠতল: ৪ হাজার ২৭০ কোটি বর্গ কিলোমিটার
বয়স: ৪৫০ কোটি ৩০ লাখ বছর
উপগ্রহ: ১৪৬
গ্রহের অবস্থা: গ্যাসীয়
বছর: ১০ হাজার ৭৫৯.২২ দিন
দিনের দৈর্ঘ্য: ১০ ঘণ্টা ৩৪ মিনিট
সূর্য থেকে দূরত্ব: প্রায় ১৪৫ কোটি কিলোমিটার (১০.৫৪ সৌরজাগতিক একক বা এইউ)
শনি সবচেয়ে সুন্দর বলয়ের কারণে। তবে শনি ছাড়া আরও তিনটি গ্রহের বলয় আছে! হ্যাঁ, ঠিকই শুনেছেন। বৃহস্পতি, ইউরেনাস ও নেপচুনের রয়েছে বলয়। কিন্তু তা অত্যন্ত পাতলা হওয়া দেখা যায় না। কিন্তু বলয় কী? অনেক বস্তু যদি একটা নির্দিষ্ট বড় বস্তুকে কেন্দ্র করে ঘুরতে থাকে, তাহলে সেগুলো দূর থেকে দেখতে বলয়ের মতো লাগে। গ্রহের চারপাশে ঘোরা এই অসংখ্য বস্তুগুলো হলো ছোট-বড় পাথর ও বরফখণ্ড। সেগুলোর আকৃতি টেনিস বল থেকে শুরু করে বিশালাকার বাসের মতো।
কিন্তু এগুলো কেন গ্রহের চারপাশে ঘোরে? কারণ, গ্রহের মহাকর্ষ বল। এ বল এতই শক্তিশালী যে ওই ছোট বস্তুগুলোকে তার চারপাশে ঘুরতে বাধ্য করে। এখন পর্যন্ত শনি গ্রহের উদ্দেশে চারটি রোবটিক নভোযান পাঠানো হয়েছে। ১৯৭৯ সালের সেপ্টেম্বরে পাঠানো হয়েছে পাইওনিয়ার ১১। এরপর ১৯৮০ ও ১৯৮১ সালে পাঠানো হয়েছে ভয়েজার ১ ও ২। সর্বশেষ ২০০৪ সালে শনির উদ্দেশে পাঠানো হয় ক্যাসিনি নভোযানকে। এই নভোযানের যাত্রা শেষ হয় ২০১৭ সালে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।