হিজরি সালের শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতটি মুসলমানরা শবে বরাত বা সৌভাগ্যের রজনী হিসেবে পালন করে থাকেন। এ রাতটি ‘লাইলাতুল বরাত’ হিসেবেও পরিচিত।
শবে বরাত বা লাইলাতুল বরাত হচ্ছে হিজরি শাবান মাসের ১৪ ও ১৫ তারিখের মধ্যবর্তী রাতে পালিত মুসলমানদের গুরুত্বপূর্ণ রাত।
এ রাত মহিমান্বিত এক রাত। এ রাতে অসংখ্য বান্দা মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে ক্ষমা ও কল্যাণ লাভ করেন। প্রতিবছর হিজরি ক্যালেন্ডারের শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতে শবে বরাত পালন করা হয়।
রসুলুল্লাহ সা. বলেন, এটা হলো অর্ধ শাবানের রাত (শবে বরাত)। আল্লাহ তায়ালা এ রাতে তার বান্দার প্রতি মনোযোগ দেন। ক্ষমাপ্রার্থনাকারীদের ক্ষমা করেন। অনুগ্রহপ্রার্থীদের অনুগ্রহ করেন আর বিদ্বেষ পোষণকারীদের ছেড়ে দেন তাদের অবস্থাতেই। (তাবারানি ১৯৪)
এ রাতে আল্লাহ বান্দাদের জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেন। মহানবী সা. বলেন, এ রাতে আল্লাহ তাআলা বনু কালবের ছাগলগুলোর পশমের চেয়ে বেশিসংখ্যক বান্দাকে ক্ষমা করেন। (ইবন মাজাহ ১৩৮৯)
শবে বরাতের নামাজের নিয়ম ও দোয়া নিয়ে কিছু কথা
শবে বরাতে নামাজের নিয়ম
শবে বরাতে রাত্র জেগে নফল নামাজ পড়তে বলেছেন নবীজি। এ রাতের আলাদা কোনো নামাজ নেই। নফল নামাজই যে যত পারি পড়বো। অন্যান্য নফল নামাজ যেভাবে পড়া হয়, এ দিন রাতেও যেভাবে নফল নামাজ পড়তে হবে। আলাদা করে কোনো নিয়ত করতে হবে না। আলাদা কোনো নিয়মও নেই।
শবে বরাতের দোয়া
শবে বরাতের সব ইবাদতই নফল ইবাদত। সাহাবায়ে কেরাম নবীজিকে বললেন আগেকার যুগের উম্মত দীর্ঘ হায়াত বা জীবন পেতো, আমরা তো অল্প কয়েকদিন বাঁচি, তারা ইবাদতের দিক দিয়ে আমাদের থেকে এগিয়ে যাবেন। তখন নবীজিকে আল্লাহ এমন কিছু রজনি দিয়েছেন, এ রজনীগুলোতে ইবাদত করলে অনেক অনেক সওয়াবের ভাগীদার হওয়া যায়।
তবে এ রাতে সবচেয়ে বেশি আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবে। কদরের রাত্রিতে একটা দোয়া পড়া হয় ক্ষমা লাভ করার জন্য। এ দোয়াটা এ রাতেও পড়া যায়। গুরুত্বপূর্ণ দোয়াটি হলো:-
للَّهُمَّ إِنَّكَ عَفُوٌّ تُحِبُّ الْعَفْوَ فَاعْفُ عَنِّى উচ্চারণ: আল্লাহম্মা ইন্নাকা আফুয়্যুন, তুহিব্বুল আফওয়া, ফাফু আন্নি। অর্থাৎ হে আল্লাহ, তুমি ক্ষমাশীল, ক্ষমা পছন্দ করো, অতএব আমাকে ক্ষমা করে দাও। এ ছাড়াও এ রাতে কোরআন তিলাওয়াত, জিকির, তাসবিহ পাঠ পর দিন রোজা রাখার অনেক অনেক ফজিলত রয়েছে।
শবে বরাতের রাতে করণীয়:
রাত জেগে ইবাদত-বন্দেগিতে কাটানো।
নামাজ, দোয়া, তাসবিহ, তিলাওয়াত ইত্যাদি করা।
ক্ষমা প্রার্থনা করা।
গরিব-দুঃখীদের সাহায্য করা।
শবে বরাতের রাতে এড়িয়ে চলতে হবে:
পাপাচার ও গুনাহের কাজ করা।
রাত জেগে গান বাজনা শোনা ও অন্য অনৈতিক কাজ করা।
অতিরিক্ত খাওয়া-দাওয়া করা।
উপসংহার:
শবে বরাত একটি বরকতময় রজনী। এ রাতে আল্লাহর অশেষ রহমত ও মাগফিরাতের সুযোগ বয়ে আসে। তাই এ রাতকে যথাযথভাবে কাটানো উচিত।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।