বিশ্বের শীর্ষ আশ্চর্যগুলোর একটি হিসেবে পরিচিত Codex Gigas, যা অনেকের কাছে “শয়তানের বই” নামেই পরিচিত। এ বইয়ের অসাধারণ ও অলৌকিক কাহিনীগুলি পাঠকদের মধ্যে ভয়ের সঞ্চার করে। এর আকর্ষণীয় কাহিনী, অতিপ্রাকৃত ঐতিহ্য ও রহস্যের ঘেরা ইতিহাস নিয়ে আলোচনা করতে গেলে একজনের মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে, কেন এই বইকে ‘শয়তানের বই’ বলা হয়? আসুন, বিশদে জেনে নেওয়া যাক।
Table of Contents
Codex Gigas: শয়তানের বইয়ের ইতিহাস
Codex Gigas, সে সময়ের সবচেয়ে বড় হাতের লেখার বই, আজও অনেক গবেষকের কৌতূহলকে আকৃষ্ট করছে। বইটি ১৩০০ খ্রিস্টাব্দের দিকে চেক প্রজাতন্ত্রে লেখা হয়েছিল এবং বর্তমানের সুইডেনের জাতীয় গ্রন্থাগারে সংরক্ষিত রয়েছে। এই বিশাল পাণ্ডুলিপি বিশ্বজুড়ে তার শৈল্পিক ও ইতিহাসগত গুরুত্বের জন্য বিখ্যাত। এর প্রতিটি পৃষ্ঠায় রয়েছে বিস্ময়কর নিবন্ধ, বৈজ্ঞানিক তথ্য, চিকিৎসাবিজ্ঞান এবং ধর্মীয় বিষয়াবলী।
বইটির মোট ৩১০টির বেশি পৃষ্ঠা রয়েছে এবং এর ওজন প্রায় ৭৫ কেজি। পৃষ্ঠগঠন গাধার চামড়া থেকে তৈরি এবং সেগুলো একত্রিত করতে বহু শ্রম ও সময় ব্যয় হয়েছে। তবে, সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন হলো বইটির একটি পৃষ্ঠায় শয়তানের একটি বিশাল ও ভয়ঙ্কর চিত্র আঁকা রয়েছে, যা সত্যিই পাঠকদের কাঁপিয়ে দেয়।
বইটিকে ‘শয়তানের বই’ নাম দেওয়া হয়েছে কারণ এটি লিজেন্ড অনুযায়ী, এক সন্ন্যাসী শয়তানের সহযোগিতায় এটি লিখেছিলেন। সন্ন্যাসীটি মৃত্যুদণ্ডের মুখোমুখি হয়ে নিজের জীবন রক্ষার জন্য দাবি করেন যে, তিনি এক রাতে পৃথিবীর সমগ্র জ্ঞান নিয়ে একটি বই লিখে ফেলবেন। তবে, সে দায়ভার পালনে তিনি ধরে ফেলেন যে, এটি সম্ভব নয়; আর তখনই শয়তান তাকে সাহায্যের অফার দেয়।
বইটিতে আছে কী?
Codex Gigas-এ ধ্যানে, ধর্মীয় নীতি, ইতিহাস এবং জাদুবিদ্যা থেকে শুরু করে চিকিৎসাবিজ্ঞান পর্যন্ত বর্ণনা দিয়েছে। বইটির মূল অংশ হল বাইবেলের গল্পাবলী, যা কাঁচা সত্যের সাথে কারুকাজিত অঙ্কনের মাধ্যমে বিশালাকৃতির করে প্রকাশিত। এটি শুধুমাত্র কাহিনী নয়, বরং একটি মহৎ ইতিহাসকে জীবন্ত করে তুলে।
শেষ পর্যন্ত, বইটিতে লেখা বিষয়বস্তু এমন একটি অফুরন্ত তথ্যভাণ্ডার যা সময়ের সাথে সাথে পালটে গেছে। এতে অতীতের বিভিন্ন ধরণের চিকিৎসা ও রোগব্যাধির উল্লেখ রয়েছে, যা গবেষকদের জন্য একটি অমূল্য সম্পদ।
Codex Gigas-এর খোঁজ
বর্তমানে Codex Gigas রাখা হয়েছে সুইডেনের জাতীয় গ্রন্থাগারে। এটি ইতিহাসবিদদের জন্য একটি বিশেষ আবিষ্কার হিসেবে চিহ্নিত এবং এর কথা সাহিত্যিক ও বৈজ্ঞানিক গুরুত্ব অপরিসীম। গবেষকরা এটিকে ১৩শ শতাব্দীর পূর্ববর্তী Bohemia রাজ্যের ইতিহাস হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
এটি কি সত্যি?
যদিও ইতিহাসবিদরা মনে করেন যে, বইটি বহু বছরের প্রচেষ্টায় লেখা হয়েছে, তথাপি বইয়ের লেখার ধরন, কালির ফর্ম এবং লেখার ফলে বেরিয়ে আসা মান সম্পূর্ণরূপে নির্দেশ করে যে, এটি সম্ভবত একজনই লেখক দ্বারা লেখা হয়েছে। তবে, এটি নিশ্চিত করাও একটি রহস্য। আজও গবেষকরা জানতে ইচ্ছে করে না, কীভাবে একজন ব্যক্তি এত বিশাল ও সুদক্ষ ভাবে বইটি লিখতে সক্ষম হলেন।
এখনো প্রশ্ন রয়েছে, সত্যিই কি শয়তান এই বইয়ে আলো ফেলেছিলেন বা এটি কেবল কিংবদন্তির অংশ?ইতিহাসের মুখোমুখি হওয়ার জন্য Codex Gigas বইটি এখনও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ এবং রহস্যময়।
আমরা আশা করি, Codex Gigas সম্পর্কে এই সংক্ষিপ্ত আলোচনা পাঠকদের মধ্যে আকর্ষণ তৈরি করবে এবং তারা এই ঐতিহাসিক বইটি সম্পর্কে আরও জানতে আগ্রহী হবে।
নতুন আইফোনের ডিজাইন নিয়ে আকরানোর রমরমা: ২০২৭-এর প্রযুক্তিগত বিপ্লবের আগমন
FAQs
1. Codex Gigas কি ধরনের বই?
Codex Gigas একটি বৃহৎ হাতের লেখা পাণ্ডুলিপি, যা নিরাপত্তা ও ধর্মীয় নিয়মনীতি নিয়ে তৈরি হয়েছে। এটি ইতিহাস, চিকিৎসাবিজ্ঞান, জাদুবিদ্যা এবং ধর্মীয় কাহিনী অন্তর্ভুক্ত করে।
2. কেন Codex Gigas-কে ‘শয়তানের বই’ বলা হয়?
এ বইয়ের একটি পৃষ্ঠায় শয়তানের ভয়ঙ্কর চিত্র রয়েছে এবং কিংবদন্তি অনুযায়ী, এক সন্ন্যাসী শয়তানের সাহায্যে বইটি শেষ করেছেন।
3. Codex Gigas কোথায় সংরক্ষিত আছে?
বর্তমান সময়ে Codex Gigas সুইডেনের জাতীয় গ্রন্থাগারে সংরক্ষিত রয়েছে যা ইতিহাসবিদদের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ।
4. Codex Gigas কি সত্যিই একজন মানুষ এক রাতে লিখেছিলেন?
গবেষকদের মতে, এটি একজন মানুষের বহু বছরের প্রচেষ্টায় লেখা হয়েছে। তবে এটি একটি রহস্যই রয়ে গেছে।
5. Codex Gigas-এর বিষয়বস্তু কি?
এতে ধর্মীয় নীতিগুলি, ইতিহাস, চিকিৎসাবিজ্ঞান এবং জাদুবিদ্যার সংমিশ্রণ রয়েছে।
6. Codex Gigas-এর লিখনশৈলী কেমন?
লিখনশৈলীটি এমনভাবে নির্দেশ করে যে, এটি সম্ভবত একজন অভিজ্ঞ লেখক দ্বারা লেখা হয়েছে। এর অলঙ্করণ এবং রচনার ধারার গুণ গ্রামের তথ্য প্রদান করে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।