জুমবাংলা ডেস্ক : আমদানি বিকল্প ফসল ডাল, তেলবীজ, মসলা জাতীয় ফসল ও ভুট্টা চাষ করার জন্য আগে থেকেই সুদ-ক্ষতি সুবিধার আওতায় ৪ শতাংশ রেয়াতি সুদে কৃষকদের ঋণ বিতরণ করছে ব্যাংকগুলো। করোনাভাইরাসের কারণে এখন থেকে আমদানি বিকল্প এসব ফসলের পাশাপাশি ধান, গমসহ সব দানা শস্য, অর্থকরী ফসল, শাক-সবজি ও কন্দাল ফসল চাষের জন্যও ৪ শতাংশ রেয়াতি সুদ হারে ঋণ পাবেন কৃষকরা।

গতকাল সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের কৃষিঋণ বিভাগ থেকে এসংক্রান্ত একটি স্কিম প্রণয়ন করা হয়েছে। এ স্কিমের নাম দেওয়া হয়েছে নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে সৃষ্ট সংকট মোকাবেলায় শস্য ও ফসল খাতে ৪ শতাংশ রেয়াতি সুদ হারে কৃষি ঋণ প্রদান।
প্রতিবছর কৃষি ও পল্লী ঋণ বিতরণের লক্ষ্য ঠিক করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। চলতি অর্থবছরে কৃষকদের জন্য ২৪ হাজার ১২৪ কোটি টাকা ঋণ বরাদ্দ রেখেছে ব্যাংকগুলো। এ ঋণের সর্বোচ্চ সুদের হার ৯ শতাংশ। কিন্তু মহামারি নভেল করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে সৃষ্ট সংকট মোকাবেলায় শস্য ও ফসল খাতে সুদহার কমিয়ে ৪ শতাংশ (রেয়াতি সুদ) নির্ধারণ করা হয়েছে। অর্থাৎ শস্য ও ফসল খাতেও গ্রাহক পর্যায় সর্বোচ্চ ৪ শতাংশ সুদ আদায় করতে পারবে ব্যাংকগুলো। অবশিষ্ট ৫ শতাংশ সুদ ক্ষতি বাবদ ভর্তুকি হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে প্রদান করবে। চলতি বছরের ১ এপ্রিল থেকে ৩০ জুন ২০২১ পর্যন্ত এ সুবিধা বলবৎ থাকবে।
এর আগে গত ১৩ এপ্রিল শস্য ও ফসল খাতের বাইরে মৌসুমভিত্তিক ফুল ও ফল চাষ, মৎস্য চাষ, পোল্ট্রি, ডেইরি ও প্রাণিসম্পদ খাতে ৪ শতাংশ সুদে ঋণ বিতরণের জন্য পাঁচ হাজার কোটি টাকার একটি পুনরর্থায়ন তহবিল গঠন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। যার নাম দেওয়া হয় কৃষি খাতে বিশেষ প্রণোদনামূলক পুনরর্থায়ন স্কিম। অর্থাৎ করোনার কারণে কৃষি খাতের ক্ষতি মোকাবেলায় মাত্র ৪ শতাংশ সুদে কৃষকদের ঋণ দেওয়ার ব্যবস্থা করল বাংলাদেশ ব্যাংক।
শস্য ও ফসল খাতে নতুন স্কিম প্রণয়ন নিয়ে সার্কুলারে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে আগামীতে খাদ্যের উৎপাদন ও খাদ্য সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে কৃষি খাতে শস্য ও ফসল চাষের জন্য কৃষক পর্যায়ে স্বল্প সুদে কৃষিঋণ সরবরাহ করা অত্যাবশ্যক।
আমদানি বিকল্প ফসল ডাল, তেলবীজ, মসলা জাতীয় ফসল ও ভুট্টা চাষ করার জন্য কৃষক পর্যায়ে ৪ শতাংশ রেয়াতি সুদ হারে কৃষিঋণ বিতরণের জন্য তফসিলি ব্যাংকগুলোর প্রতি নির্দেশনা রয়েছে। এখন আমদানি বিকল্প ফসলগুলোর পাশাপাশি কৃষি ও পল্লী ঋণ নীতিমালা ও কর্মসূচিতে উল্লিখিত ধান, গমসহ সব দানা শস্য, অর্থকরী ফসল, শাক-সবজি ও কন্দাল ফসল চাষের জন্যও সুদ-ক্ষতি সুবিধার আওতায় কৃষক পর্যায়ে প্রণোদনা হিসেবে ৪ শতাংশ রেয়াতি সুদ হারে কৃষিঋণ বিতরণের নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বিতরণকৃত ঋণের বিপরীতে ব্যাংকগুলোকে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রকৃত সুদ-ক্ষতি বাবদ ৫ শতাংশ হারে সুদ-ক্ষতি প্রদান করবে।
এতে আরো বলা হয়েছে, এ স্কিমের মেয়াদ হবে ১ এপ্রিল ২০২০ থেকে ৩০ জুন ২০২১ পর্যন্ত। কৃষক পর্যায়ে সুদের হার হবে সর্বোচ্চ ৪ শতাংশ। উক্ত সুদ হার চলমান এবং নতুন ঋণগ্রহীতা উভয় ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে। তবে ২০২১ সালের ৩০ জুনের পর চলমান ঋণের অবশিষ্ট মেয়াদের জন্য স্বাভাবিক সুদহার প্রযোজ্য হবে।
কৃষি ও পল্লী ঋণ নীতিমালা অনুযায়ী ব্যাংকগুলো আগের বছরের মতো নিজস্ব উৎস হতে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে নির্ধারিত তাদের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে কৃষক পর্যায়ে এই ঋণ বিতরণ করবে।
করোনাভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের জন্য গত ১২ এপ্রিল ভিডিও কনফারেন্সে বক্তব্যকালে বিশেষ প্রণোদনা ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর গত ১৩ এপ্রিল কৃষি খাতে চলতি মূলধন সরবরাহের উদ্দেশ্যে পাঁচ হাজার কোটি টাকার পুনরর্থায়ন স্কিম গঠন করে সার্কুলার জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ছয় মাস গ্রেস পিরিয়ডসহ ১৮ মাস মেয়াদি এ ঋণের সর্বোচ্চ সুদহারও হবে ৪ শতাংশ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



