৫২ এর ভাষা আন্দোলনের কারণে ফেব্রুয়ারি মাসের আলাদা গুরুত্ব আমাদের কাছে রয়েছে। এবার বসন্ত চলে আসলো এবং পাশাপাশি বইমেলা শুরু হয়ে গেল। যারা বই পড়তে ভালোবাসেন এবং যারা বই লিখতে ভালোবাসেন তারা একই জায়গায় মিলিত হচ্ছেন।
বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা, সমালোচনা, তর্ক-বিতর্ক হচ্ছে। এর মাঝে অন্য রকম আনন্দ ও সুখ রয়েছে। ৫ আগস্ট এর ঘটনার পর প্রথম বইমেলা হচ্ছে এবার। সাংস্কৃতিক আকর্ষণ থেকে বা সাংস্কৃতিক ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্তির মাধ্যমে বইমেলায় নতুন উদ্যম দেখা যাবে এমনটা আশা করা হচ্ছে।
বইমেলা শুরুর ইতিহাস স্বাধীনতার পরের বছর। দিনে দিনে মেলার পরিসর বেড়েছে। আমার শহরের বইমেলার প্রধান ফটকে রঙিন আলোর ঝলকানি থাকে। দূর থেকে চমক দেখতে পাওয়া যায়। ভেতরে একটা মঞ্চ থাকে। সেখানে হয় আবৃত্তি, গান, নাচ। আছে বইয়ের মোড়ক উন্মোচনের আয়োজন। এতো এতো বইয়ের দোকান আর মানুষের ভিড়। পড়ুয়ারা নতুন বইয়ের গন্ধ নিতে মেলায় আসে। রয়েছে খাবারের দোকানও। তার উল্টো দিকে আড্ডা জমান লেখকরা।
মেলা চলতে থাকে। রাত বাড়তে থাকে। আড্ডা ভাঙে, লেখক-পাঠক বাড়ি ফেরে। ২০১৫ সালে এমনই এক বইমেলায় আমি আর আমার বন্ধু বাড়ি ফিরব বলে হাঁটতে শুরু করলাম। অকস্মাৎ বিকট শব্দ শুনে পিলে চমকে গেছিল! মেলার প্রধান ফটকে গিয়ে বুঝতে পারি– সেটা ছিল পেট্রোল বোমা। আমরা মনে মনে এক দোকানিকে ধন্যবাদ জানালাম। কারণ, সেই দোকানি না ডাকলে আমরা হয়তো বোমার মুখেই পড়তাম। যাহোক, এরকম বই মেলা আমরা চাই না। সবার জন্য নিরাপদ একটা বইমেলা হোক, এটাও চাওয়া।
ইদানিং শহরে বা অন্য মেলাগুলোতে বইয়ের দোকান চোখে পড়ে না। দ্রুত গতিতে শপিং মল গজিয়ে উঠছে। সেখানেও থাকুক বই বিতান। বই কিনলে কেউ দেউলিয়া হয় না। বই সংগ্রহে রাখা যায়। কোনো কোনো বই বারবার পড়া যায়।
বইমেলা এলে বই নিয়ে বিজ্ঞাপন বাড়ে। পত্রপত্রিকায় বা অনলাইনে লেখিয়েদের আলাপ জমে বই বিষয়ে। এই অনুষঙ্গে বইমেলা মানুষের আরও আগ্রহের বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। এভাবে মেলা ক্রমশ বাড়তে থাকুক এবং বই পড়ার মাধ্যমে মানুষের মনের বিকাশ হোক। পাঠক-লেখক-প্রকাশক এগিয়ে যাক আনন্দ, সুখ আর নিজস্ব আকাঙ্ক্ষার দিকে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।