আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পুরো নাম তেজস্বী পোরাপাতি। ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের প্রকাসাম জেলার ওঙ্গোলে বাস তেজস্বীর। একটা সময় তার জন্ম-শহর ছিল ময়লা-আবর্জনায় ভরা। আর সেই শহর পরিষ্কার করে তিনি এখন সকলের নয়নের মণি।
তেজস্বী তখন বি টেক শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী। একদিন সংবাদপত্রে দেখেন, তার জন্মস্থান ওঙ্গোল অন্ধ্রপ্রদেশের তৃতীয় আবর্জনাময় অঞ্চল। বিষয়টি কোনভাবেই মেনে নিতে পারেননি তেজস্বী। অন্যদের মতো প্রশাসনকে দোষারোপ না করে নিজেই ঝাড়ু হাতে রাস্তায় নামার সিদ্ধান্ত নেন।
মেয়ের এমন কাণ্ডকারখানা দেখে মায়ের মাথায় বাজ পড়লেও বাবা তার কাজকে উৎসাহ দেন। এভাবেই এগিয়ে চলে তার কাজ। এরপর বাবার পরামর্শে তেজস্বী প্রথমে নিজের বন্ধুদের প্রস্তাব দেন শহরের আবর্জনা পরিষ্কারের। তার এই আহ্বানে অনেকই সাড়া দেন। আবার কেউ কেউ ঠাট্টা,মশকরাও করেন।
প্রথমে তারা ১০ জন মিলে ওঙ্গোলের একটি পার্কের ময়লা-অবর্জনা পরিষ্কারে লেগে পড়েন। এরপর আবার সেই পার্ক নোংরা হল।
দলবল নিয়ে আবারও সেই পার্কে হাজির হন তারা। যারা তার কাজ দেখে উপহাস করতেন, এখন তারাই রোজ পার্কে ঘুরতে যান এবং তেজস্বীর উদ্যোগের প্রশংসা করেন।
এখানেই থেমে থাকেননি তেজস্বীরা। প্রতি সপ্তাহে নতুন পার্ক, কোনও রাস্তা বা পাবলিক প্লেস বেছে নেন। তারপর ঝাড়ু-মোছা, ডাস্টবিন নিয়ে হাজির হয়ে সেটাকেও চলাফেরার যোগ্য করে তোলেন। জায়গাগুলো একবার পরিষ্কার করেই থেমে যান না তারা। মাঝে মাঝেই সে সমস্ত জায়গায় গিয়ে তদারকি করেন এবং প্রয়োজনে ফের তা পরিষ্কার করেন।
এই ভাবে শহরের ১২৫টি জায়গা পরিষ্কার করে ফেলেন তেজস্বীরা। তার দলের নাম ‘ভূমি ফাউন্ডেশন’। শুরু করেছিলেন মাত্র ১০ জন মিলে। আর এখন দলে সদস্য সাড়ে তিন হাজারের বেশি।
পড়াশুনা শেষ করে তেজস্বী এখন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। বাড়ি থেকে ৩৬০ কিলোমিটার দূরে তার অফিস। এজন্য অফিসের কাছেই ঘর ভাড়া নিয়ে থাকেন। প্রতি শুক্রবার বাড়ি ফিরে ভূমি ফাউন্ডেশনে বৈঠক করেন। পরের দু’দিন ফের ঝাড়ু হাতে নেমে পড়েন রাস্তায়।
আনন্দবাজার পত্রিকা জানায়, কাজের স্বীকৃতিস্বরুপ সম্প্রতি অন্ধ্রপ্রদেশ সরকার ওঙ্গোলকে পোস্টার-মুক্ত শহর ঘোষণা করে এবং চন্দ্রবাবু নাইডুর হাত থেকে তেজস্বী স্বচ্ছ অন্ধ্র অ্যাওয়ার্ড পান।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।