নিজস্ব প্রতিবেদক : যেই শিক্ষার্থীদের রক্তবেদিতে দাঁড়িয়ে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হলো, সেই আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ‘টোকাই’ বলে কটাক্ষ করেছেন উত্তরায় টাকার বস্তাসহ আটক হওয়া কথিত ব্যবসায়ী কামরুজ্জামান সাঈদী সোহাগ।
ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে শত কোটি টাকা লুটকারী সোহাগ উত্তরায় টাকার বস্তাসহ আটক হওয়ার ঘটনা নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছে।
নিজের প্রোফাইলে কামরুজ্জামান সোহাগ লিখেছে, টাকা নিয়ে যাওয়ার পথে ‘ছাত্র নামধারী কিছু টোকাই তাকে আটকায়…………সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে পারে না। ৪০-৫০ হাজার টোকাই বাহিরে ছিল। তখন আমাদের সাথে বসে কথা বলে, হাত পিছনে করে ধরে গাড়ীতে তুলে তাদের ক্যাম্পে নিয়ে যায়।’
বুধবার বিকাল ৪টার দিকে রাজধানীর উত্তরায় মহাসড়কে শিক্ষার্থীদের তল্লাশিকালে প্রাডো গাড়িতে টাকার বস্তাসহ সেনাবাহিনীর হাতে আটক হন কামরুজ্জামান সাঈদী সোহাগ (সোহাগ খান)। পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এর পরের দিনই অস্ত্রসহ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর্স বিল্ডিংয়ে প্রবেশ করতে গেলে সেনাবাহিনীর সহায়তায় সোহাগের আগ্নেয়াস্ত্র জব্দ করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
ফাইভ এস ট্রেডিংসহ কয়েকটি কাগুজে ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের মালিক কামরুজ্জামান সাঈদী সোহাগ (কে এস সোহাগ খান)। মতিঝিলের কমলাপুর বাজার রোডে সাগুফতা ডি লরেল ভবনের তৃতীয় তলার একটি অফিস থেকে ১৪টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালায় সে। এগুলোর দৃশ্যমান কোন ব্যবসা নেই। মূলতঃ নিজের একটি প্রতিষ্ঠানের সাথে আরেকটি প্রতিষ্ঠানের ভুয়া লেনদেন দেখিয়ে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে অর্থ পাচার করছে সে। এক্ষেত্রে যেসব জমি মর্টগেজ হিসেবে দিয়েছে সেগুলোর অধিকাংশেরই কোন অস্তিত্ব নেই। এমনকি একই জমির কাগজ দুইটি ব্যাংকে দেয়ার ঘটনাও উদঘাটন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
মাত্র তিনটি ব্যাংকে অনুসন্ধান চালিয়েই ইতোমধ্যে ৭৮ কোটি টাকা ঋণ জালিয়াতির তথ্য পেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সবগুলো ব্যাংকে বিশদ তদন্ত চালালে কামরুজ্জামান সাঈদী সোহাগের আরো শত শত কোটি টাকা ঋণ লুটের তথ্য বের হয়ে আসতে পারে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ, ব্যাংক পরিদর্শন বিভাগ ও ডিপার্টমেন্ট অব অফসাইট সুপারভিশন বিভাগের কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা ইতোমধ্যে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে জানিয়েছেন, তার ঋণ জালিয়াতির বিষয়ে একটি ব্যাংকে তদন্ত করতে গেলে কামরুজ্জামান সাঈদী সোহাগ চেম্বারে এসে তাদের টিমকে শাসিয়ে গেছে।
বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা গেছে, কামরুজ্জামান সোহাগ বাংলাদেশ ব্যাংকের দুর্নীতিবাজ শীর্ষ কর্মকর্তা মাসুদ বিশ্বাসের ব্যবসায়িক অংশীদার। গত ৭ আগস্ট বিএফআইইউ প্রধান মাসুদ বিশ্বাসকে তার চেম্বার থেকে বের করে প্রধান ফটকে এনে ধাক্কা দিয়ে বের করে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ কর্মকর্তারা। এসময় তাদেরকে মাসুদ বিশ্বাসের বিপক্ষে বিভিন্ন স্লোগান দিতে শোনা যায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কামরুজ্জামান সোহাগের মাধ্যমে ঢাকার বিভিন্ন স্থানের বিপুল জমি কিনেছেন মাসুদ বিশ্বাস। বিভিন্ন ব্যবসায়ীর গ্রুপকে অবৈধ সুবিধা দিয়ে অর্জিত অর্থ দ্বারা এসব জমি কিনেছেন তিনি।
ইসলামী ব্যাংকে সর্ববৃহৎ ঋণ জালিয়াতি, ৩৪০০ কোটি টাকা এস আলমের পকেটে
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।