জুমবাংলা ডেস্ক : রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইলের ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ থেমেছে।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) বিকাল ৩টার দিকে মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের সামনে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থী, স্থানীয় বাসিন্দা ও উৎসুক জনতাকে দেখা গেছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেখানে সেনাবাহিনী, র্যাব, এপিবিএন ও পুলিশের কয়েক শ সদস্য রয়েছেন। তবে সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীদের আশপাশে দেখা যায়নি।
মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের ভেতরে সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল সরকারি কলেজের বেশ কিছু শিক্ষার্থী আটকা পড়েছে বলে জানা গেছে। তাদের উদ্ধারে বিকেল সোয়া ৩টায় যৌথ বাহিনী মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের ভেতরে প্রবেশ করতে চাইলে কলেজটির শিক্ষার্থীদের বাধার মুখে পড়েন। বিকাল পৌনে ৪টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কলেজের ভেতরে প্রবেশ করতে পারেনি যৌথ বাহিনী।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত ডিএমপির ওয়ারী বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ছালেহ উদ্দিন বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি, ভেতরে সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল কলেজের শিক্ষার্থীরা আটক আছেন।
আমরা তাদের উদ্ধারের জন্য ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু শিক্ষার্থীরা আমাদের ওপরে চড়াও হয়েছেন। পরে আমরা কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তাদের আমরা বিষয়টা অবগত করেছি।
বিকেল ৪টায় আমরা কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসব।’
এর আগে দুপুর ১২টার দিকে মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের সামনে ওই কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে মুহূর্তেই যাত্রাবাড়ী-ডেমরা সড়ক রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়েছেন।
এর আগে সকাল ১০টার দিকে লাঠিসোঁটা হাতে সোহরাওয়ার্দী কলেজের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণে জড়ো হন।
পরে তারা মিছিল নিয়ে কবি নজরুল কলেজের সামনে আসেন। এ সময় নজরুল কলেজের অধ্যক্ষ মাইকে শান্ত হওয়ার আহ্বান জানালে দুই কলেজের শিক্ষার্থীরা ‘ভুয়া, ভুয়া’ স্লোগান দিতে থাকেন।
পরে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ডেমরা সড়কসংলগ্ন মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে হামলা চালান। এ সময় মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থীরা তাদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান।
সোহরাওয়ার্দী কলেজ বন্ধ ঘোষণা
এদিকে সংঘর্ষের ঘটনায় সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ বন্ধ ঘোষণা করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। রবিবার (২৪ নভেম্বর) কলেজটির অধ্যক্ষের স্বাক্ষর করা বিজ্ঞপ্তিতে কলেজটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, অনিবার্য কারণবশত ২৫ ও ২৬ নভেম্বর কলেজের সব শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। তবে এই নোটিশ উপেক্ষা করেই আজ সোমবার (২৫ নভেম্বর) সকাল থেকে কলেজ গেটে অবস্থান নিয়ে সোহরাওয়ার্দী ও কবি নজরুলসহ সাত কলেজের হাজারও শিক্ষার্থী ডেমরার মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে তাণ্ডব চালিয়েছেন। এতে কলেজটির ব্যাপক অবকাঠামোগত ক্ষতি হয়েছে।
৬ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন
সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী-ডেমরা এলাকায় ৬ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
বিকেলে ৩ কলেজের সঙ্গে বসবে ডিএমপি
ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজ, কবি নজরুল ও সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনায় রাজধানীর যাত্রাবাড়ী রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। এ ঘটনায় এই তিন কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠকে বসবে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। সোমবার (২৫ নভেম্বর) বিকেলে ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
এদিকে সংঘর্ষের ঘটনায় আহত ১১ জনকে চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের অনেকেই মাথায় আঘাত পেয়েছেন।
যা বলছে সরকার
সংঘর্ষে না জড়িয়ে শিক্ষার্থীদের শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছে সরকার। এসব সংঘাতের পেছনে কোনো ধরনের ইন্ধন থাকলে তা কঠোর হাতে দমন করা হবে বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
আজ সোমবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যে সংঘাত-সংঘর্ষ হয়েছে, সরকার তার প্রতি নজর রাখছে।
আমরা ছাত্র-ছাত্রীদের কোনো ধরনের সংঘর্ষে না জড়িয়ে শান্ত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।’
সূত্র : কালের কণ্ঠ
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।