নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর: গাজীপুরের শ্রীপুরে প্রতিপক্ষের লোকজন প্রাথমিকের এক স্কুলশিক্ষিকাকে বিদ্যালয়ে যেতে বাধা দিচ্ছেন ও অন্যত্র হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় নিজের নিরাপত্তা চেয়ে শ্রীপুর থানা ও সংশ্লিষ্ট শিক্ষা কর্মকর্তাদের কাছে মৌখিক ও লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি।
প্রতিপক্ষের দেওয়া হুমকির কারণে ওই স্কুলশিক্ষিকা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন এবং স্বজনদের পাহারায় প্রতিদিন বিদ্যালয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগে জানিয়েছেন। তবে, অভিযুক্তরা বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।
শুক্রবার দুপুরে শ্রীপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন লিজা আফরোজ নামের ওই স্কুলশিক্ষিকা। তিনি ভাংনাহাটি পশ্চিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা। ওই দিন শিক্ষা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদেরও মৌখিকভাবে অবহিত করেছেন তিনি। তিনি শ্রীপুর পৌরসভার ভাংনাহাটি গ্রামের মো. রুমান প্রধানের স্ত্রী।
অভিযুক্তরা হলেন একই গ্রামের মোস্তফা কামাল (৬০), মোফাজ্জল হোসেন (৪৫), শাকিল (৩৫), শাহীন (৩০) ও রুহুল আমিন (৬৫)।
থানায় লিখিত অভিযোগে ভুক্তভোগী স্কুলশিক্ষিকা লিজা আফরোজ বলেন, ‘আমি গত পাঁচ বছর ভাংনাহাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত আছি। আমার স্বামীর চাচাতো ভাই অভিযুক্ত মোস্তফা কামালদের সঙ্গে পূর্বে জমি বিরোধ ছিল। এর জেরে গত তিন মাস যাবৎ বিভিন্নভাবে আমাকে চাপ দিচ্ছে এবং অন্য বিদ্যালয়ে বদলি হয়ে চলে যাওয়ার জন্য হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। গত ১৪ জানুয়ারি স্কুলে গিয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে বলেছেন দ্রুত সময়ের মধ্যে এই বিদ্যালয় থেকে যেন আমি বদলি হয়ে চলে যাই। তখন প্রধান শিক্ষক জানতে চান আমার অপরাধ কি? এরপর তিনি উত্তেজিত হয়ে বলেন, অপরাধ বুঝি না, তাকে অন্য স্কুলে চলে যেতে হবে। যদি ভালোভাবে না যায়, তাহলে এর পরিণাম ভয়াবহ হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এরপর আমি বিষয়টি কয়েকজনকে অবহিত করলে, কিছুদিন বন্ধ থাকে। বর্তমানে আমি স্কুলে যেতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এ জন্য স্বজনদের পাহারায় স্কুলে যাচ্ছি। গতকাল আমার বাসায় এসে অভিযুক্তরা লাঠিসোঁটা নিয়ে এসে হুমকি দিয়ে গেছে। রোববার থেকে আমি কি করে স্কুলে যাই, তারা সেটা দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছে।’
এ বিষয়ে ভাংনাহাটি পশ্চিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মর্জিনা বেগম হুমকির বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘অভিযুক্ত মোস্তফা কামাল বিদ্যালয়ে এসে সহকারী শিক্ষক লিজা আফরোজকে চলে যাওয়ার বিষয়ে বলেছেন। এ ছাড়াও বিভিন্ন সময় লিজা আফরোজ হুমকির বিষয়টি আমাকে অবহিত করেছে।’
অভিযুক্ত মোস্তফা কামাল মোবাইল ফোনে বলেন, ‘আমি কোনো শিক্ষককে হুমকি দিইনি। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছে।’
শ্রীপুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ফাতেমা নাসরিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘হুমকির বিষয়টি আমাকে মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘অভিযুক্ত মোস্তফা কামাল এর আগে কয়েকবার আমার অফিসে এসে লিজা আফরোজের বিষয়ে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ করেছেন। কিন্তু আমি তদন্ত করে পাইনি।’
অভিযোগের বিষয়ে শ্রীপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবু রায়হান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করা হয়েছে। একটি ভিডিও পেয়েছি। কয়েকজন ছেলে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বাসার সামনে গিয়েছে। ভিডিও যাচাই-বাছাই করে প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।