জুমবাংলা ডেস্ক : পৌষের মধ্যভাগে এসেও নেই অতীতের মতো কনকনে শীতের প্রকোপ। তবে আগামীকাল রবিবার থেকে রাতের তাপমাত্রার পারদ নামতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এরপর ক্রমে দেশের উত্তরাঞ্চলসহ বিভিন্ন জায়গায় জেঁকে বসতে পারে শীত। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা সামান্য কমেছে। দেশের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলে একদফা মৃদু শৈত্যপ্রবাহ ছাড়া এবারের শীতের আমেজ এখনো পুরোপুরি অনুভূত হয়নি। উত্তরাঞ্চলে শীতের প্রকোপ থাকলেও রাজধানীসহ দেশের বড় অংশে এখনো শরীর কাঁপানো শীতের দেখা মেলেনি।
শীতের তীব্রতা না থাকলেও গ্রামে এখন প্রভাত-সন্ধ্যায় কুয়াশাচ্ছন্ন থাকছে। এই কুয়াশা আজ থেকে বাড়তে থাকবে। ভারতের দিল্লি থেকে হারিয়ানা অবধি স্মরণকালের যে ভয়াবহ ঘনকুয়াশায় ঢাকা পড়েছে, তা বিহার, ঝাড়খণ্ড ও পশ্চিমবঙ্গ দিয়ে বাংলাদেশের রংপুর, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে প্রবেশের সম্ভাবনা রয়েছে। আমেরিকান গ্লোবাল ফরকাস্ট সিস্টেম চিত্রে অবলোকন করা যাচ্ছে-ভারত থেকে ঘনকুয়াশা অগ্রসর হচ্ছে বাংলাদেশের দিকেই।
আবহাওযা ও জলবায়ু গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত চিত্র বিশ্লেষণ করে বলেন, আজ শনিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত রাজশাহী, রংপুর, খুলনা, ঢাকা, বরিশাল, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের বড় বড় নদী উপকূলবর্তী জেলাগুলোর ওপরে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশায় ঢাকা পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আজ সবচেয়ে বেশি ঘনত্বের কুয়াশা পড়বে কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জে।
তিনি জানান, গতকাল শুক্রবার সকালে দেশের বেশির ভাগ জেলা ছিল কুয়াশামুক্ত। সামান্য পরিমাণে কুয়াশার উপস্থিতি দেখা গেছে সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের হাওর এলাকার জেলাগুলোর ওপরে। এছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগের ওপরে বিশেষ করে পাহাড়ি এলাকার পাহাড়ের মধ্যবর্তী এলাকায় কুয়াশার উপস্থিতি দেখা গেছে। ভারত থেকে ঘনকুয়াশার অগ্রসর হচ্ছে বাংলাদেশের দিকে।
আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক বলেন, আজ শনি ও আগামীকাল রবিবার দেশের উত্তরাঞ্চলে রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে। পরবর্তী পাঁচ দিনে রাত ও দিনের তাপমাত্রা আরো কমতে পারে। আজ মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের নদী অববাহিকার কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘনকুয়াশা এবং দেশের অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ জানান, জানুয়ারির শুরুতে তাপমাত্রা কমতে শুরু করতে পারে। দেশের কোনো কোনো অঞ্চলের ওপর দিয়ে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, বাতাসে জলীয় বাষ্প থাকায় গত কিছুদিন ধরেই ঢাকাসহ দেশের অনেক জায়গায় কুয়াশাচ্ছন্ন থাকছে। এই অবস্থা কেটে গিয়ে জানুয়ারির শুরুতে তাপমাত্রা কমে দেশে শীতের তীব্রতা বাড়বে। দেশের কোনো কোনো অঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যেতে পারে শৈত্যপ্রবাহ। বর্তমান তাপমাত্রা কমলেও রোদ থাকায় শীতের তীব্রতা কম। গতকাল শুক্রবার সকাল ৯টায় দেশের সর্বনিম্ন্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ১১.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর তিন ঘণ্টা আগে সকাল ৬টায় রেকর্ড করা হয় ১২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৭.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছিল। যা বৃহস্পতিবার ছিল ১৭.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের কারণে এ বছর শীত তেমন পড়বে না বলে আগেই আভাস দিয়েছিলেন আবহাওয়াবিদরা। ফলে ডিসেম্বরেও শীতের প্রকোপ নেই দেশে। বিগত কয়েক বছরের ডিসেম্বরেও রাজধানীর ঢাকার রাতের তাপমাত্রা থাকত ১২ ডিগ্রির আশপাশে। এখন তা ১৬ ডিগ্রির নিচে নামছেই না। কখনো কখনো থাকছে এর চেয়েও বেশি।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, গত বছরের ডিসেম্বরে বেশ কয়েকটি জায়গায় শৈত্যপ্রবাহ হলেও এবার কেবল দেশের সর্ব উত্তরের অঞ্চল পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা নেমেছিল ৯ এর নিচে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।