মনসুর আহম্মেদ, বাসস (রাঙ্গামাটি): পর্যটকের পদচারণার আবারও মুখরিত হয়ে উঠেছে পাহাড়ি কন্যা রাঙ্গামাটি। দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ কৃত্রিম লেক কাপ্তাই। পাহাড় ঘেরা এই প্রাকৃতিক নৈসর্গের অপরূপ সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে রাঙ্গামাটিতে এখন হাজারো পর্যটকের ভীড়।
শীতের শুরু থেকেই পর্যটকদের ঢল নেমেছে রাঙ্গামাটিতে। মুখরিত হয়ে উঠেছে প্রতিটি পর্যটন স্পট। শহরের হোটেল-মোটেলের কোন রুম খালি নেই বললেই চলে। অন্যদিকে জেলার সাজেকসহ অন্যান্য রিসোর্টগুলোও আগামী ১ মাস পর্যন্ত বুকিং করে রেখেছে পর্যটকরা। পর্যটকের আগমন বেড়ে যাওয়ায় স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও অনেক খুশি।
পর্যটকদের আগমন নিয়ে রাঙ্গামাটি পর্যটন ম্যানেজার সৃজন বিকাশ বড়–য়া বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থাকে (বাসস) বলেন, দীর্ঘদিন করোনা মহামারির নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে আবারো পর্যটকের আগমন বেড়েছে। পর্যটনসহ শহরের অন্যান্য হোটেল-মোটেলগুলোতে তিল ধরনের ঠাঁই নেই। এ ধারা অব্যাহত থাকলে করোনা পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিনের ক্ষতি অনেকটাই কেটে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
বরগুনা থেকে পরিবার নিয়ে বেড়াতে আসা পর্যটন সেলিম উদ্দিন বলেন, রাঙ্গামাটিতে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য দেখে আমি অভিভূত, এখানে না আসলে উপভোগ করতে পারতামনা এর সৌন্দর্য্য।
তিনি বলেন, আমি বরগুনা জেলার আমতলী উপজেলার কুয়াকাটায় বসবাস করি। সেখানেও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য থাকলে ও তা রাঙ্গামাটির মতো নয়। রাঙ্গামাটি এককথায় অপরুপ একটি এলাকা। তিনি এখানকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েও সন্তোষ প্রকাশ করেন। পর্যটকের আগমনে স্থানীয় হোটেল মোটেলের ব্যবসায়ীরাও অনেক খুশি।
রাঙ্গামাটি হোটেল মালিক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মোস্তফা কামাল বলেন, রাঙ্গামাটিতে পর্যটকের আগমন বেড়ে যাওয়ায় এখানকার হোটেল ব্যবসাসহ পর্যটন সংশ্লিষ্ট সকলের আয় অনেকটা বেড়েছে, একমাস আগে থেকেই সবগুলো হোটেল মোটেল ও গেস্ট হাউজ বুকিং হয়ে গেছে। কোথাও কোন সিট খালি নেই।
তিনি জানান, পর্যটকদের হয়রানী বন্ধ করাসহ তাদের সার্বিক নিরাপত্তাসহ সহযোগিতা করতে আমরা সমিতির পক্ষ থেকে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে রাঙ্গামাটিতে পর্যটকের আগমন আরো বাড়বে।
রাঙ্গামাটিতে ঘুরতে আসা পর্যটকরা ঘুরে বেড়াচ্ছে রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদসহ বিভিন্ন এলাকায়। লঞ্চ, বোটে করে পর্যটকেরা ঘুরে বেড়াচ্ছে কাপ্তাই হ্রদবেষ্টিত বিভিন্ন পাহাড়ী এলাকায়। পর্যটকের আগমন বেড়ে যাওয়ায় বোট ব্যবসায়ীরাও অনেক খুশি।
রাঙ্গামাটি পর্যটন ঘাটের বোট ইজারাদার মো. রমজান আলী বলেন, শীতের শুরু থেকেই রাঙ্গামাটিতে পর্যটকের আগমন অনেক বেড়েছে। পর্যটকের আগমন বেড়ে যাওয়ায় আমরা সাধারণ বোট ব্যবসায়ীদের আয় অনেক বেড়েছে।
বিজয় দিবসের টানা তিনদিনের ছুটিতে রাঙ্গামাটিতে পর্যটকদের আগমনে পরিপূর্ণ ছিল রাঙ্গামাটি। তবে শীত মৌসুমের শুরু থেকেই রাঙ্গামাটিতে পর্যটকরা আসতে শুরু হওয়ায় এখানে পর্যটকদের আগমন আরো বেড়ে গেছে। ঝুলন্ত ব্রিজ, অরণ্য, পাহাড়, ঝরনা আর হ্রদের শহর রাঙ্গামাটিতে বর্তমানে গড়ে উঠেছে নতুন-নতুন বেশ কিছু পর্যটন কেন্দ্র। তার মধ্যে রাঙ্গামাটি পুলিশ বিভাগের তত্ত্বাবধানে থাকা পলওয়েল পার্ক, সেনাবাহিনীর আরণ্যক রিসোর্ট, কাপ্তাই লেক ঘেষে গড়ে উঠা পর্যটন স্পট বেড়াইন্ন্যা, ডিভাইন রিসোর্ট অন্যতম।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।