লাইফস্টাইল ডেস্ক : আমাদের দেশে শীতের সময় অভিভাবকরা শিশুর ঠান্ডা লাগা নিয়েই উদ্বিগ্ন থাকেন, অথচ শীতে হঠাৎ বেড়ে যায় শিশুদের ডায়রিয়া। এ সময় বায়ুবাহিত ভাইরাস সংক্রমণের মাধ্যমেই ডায়রিয়া বেশি হয়।
শীতকালে শিশুর ডায়রিয়া হওয়ার অন্যতম কারণ রোটা ভাইরাস। এ ছাড়াও এডিনো ভাইরাস সংক্রমণে শিশুরা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়। এডিনো ভাইরাসে সর্দি-কাশি বা ঠান্ডা যেমন হয়, আবার ডায়রিয়াও হয়।
যেসব শিশু বুকের দুধ পান করে, আবার বারবার নরম পায়খানা করে, সেটি ডায়রিয়া নয়। পাতলা পায়খানার সঙ্গে যদি রক্ত মিশ্রিত থাকে, তবে সেটি আমাশয়। শীতের মধ্যে ডায়রিয়া মূলত সংক্রমণজনিত রোগ এবং এক্ষেত্রে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
শিশুদের ডায়রিয়া হলে করণীয়:
১. পানি ও স্যালাইন দেওয়া
ডায়রিয়ার কারণে শরীর থেকে অনেক তরল বের হয়ে যায়, যা ডিহাইড্রেশনের ঝুঁকি বাড়ায়। শিশুকে বারবার ওরাল ডিহাইড্রেশন সলিউশন (ওআরএস) খাওয়ান। একগ্লাস পানিতে সামান্য চিনি ও লবণ মিশিয়ে ঘরোয়া স্যালাইন তৈরি করেও খাওয়ানো যেতে পারে এতে করে ডায়রিয়া নির্মূল হবে। ডায়রিয়া বেশি হলে দশ মিনিট পরপর চার থেকে পাঁচ চামচ করে স্যালাইন খাওয়ান।
২. দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া
ডায়রিয়ায় বারবার পাতলা পায়খানা, তৃষ্ণা, মুখ শুকিয়ে যাওয়া, প্রস্রাব কম হওয়া ইত্যাদি লক্ষন বেশি দেখা দেয়। ডায়রিয়ায় নানা উপসর্গ দেখা দিয়ে থাকে যেমন -রক্ত মেশানো পায়খানা, উচ্চ জ্বর,অতিরিক্ত দুর্বলতা, শিশু বা বৃদ্ধ রোগী যাদের শরীর দ্রুত পানিশূন্য হয়ে পড়তে পারে। এরকম কিছু দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করা উচিত। বিশেষ করে ডায়রিয়ায় শিশু দুর্বল হয়ে পড়লে মোটেই সময় নষ্ট করা উচিত না, দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।
৩. সঠিক খাবার ও পুষ্টি নিশ্চিত করা
ডায়রিয়া হলে শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে পানি ও লবণ বের হয়ে যায়, যা শারীরিক দুর্বলতা সৃষ্টি করে। তাই ডায়রিয়ার সময় সঠিক খাবার ও পুষ্টি নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। হালকা,সহজপাচ্য খাবার যেমন- ভাতের মাড়, কলা, দই, স্যুপ খেতে দিন। নবজাতক হলে বুকের দুধ খাওয়ানো চলতে থাকবে। মুরগির স্যুপ বা সবজি দিয়ে হালকা ঝোল শরীরকে হাইড্রেট রাখতে সাহায্য করে এবং এটি সহজে হজম হয়। পাকা কলা খেতে দেওয়া যেতে পারে। এটি শক্তি দেয় এবং পটাসিয়াম সরবরাহ করে।
৪. পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা
ডায়রিয়া থেকে শিশুকে দূরে রাখতে শিশুর আশেপাশে ও খাবার প্রস্তুতিতে সর্বদা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা উচিত। শিশুকে সব সময় হাত ধোয়ার অভ্যাস করাতে হবে। শিশুর জামাকাপর, বিছানা পরিষ্কার পরিচ্ছন্নভাবে সুরক্ষিত রাখতে হবে।
৫. সংক্রমণ প্রতিরোধে সচেতনতা
শীতের সময় হোক আর যে সময়ই হোক, ডায়রিয়া থেকে মুক্ত থাকার প্রধান উপায় হচ্ছে সচেতনতা। এক্ষেত্রে সব সময় ফুটানো বা বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। খাবার ভালোভাবে এবং পরিষ্কার পরিছন্নভাবে রান্না করতে হবে ও বাইরের অস্বাস্থ্যকর খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। শীতে এসবের পাশাপাশি শিশুকে হালকা উষ্ণ গরম পানি খাওয়ানোর চেষ্টা করতে হবে। এতে করে শিশুর ঠান্ডা বা কাশি লাগবে না । ডায়রিয়া শিশুর জন্য মারাত্মক হতে পারে, তাই অবহেলা না করে সঠিক যত্ন নিন এবং প্রয়োজনে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।