জুমবাংলা ডেস্ক : শীতের সবজির সরবরাহ বাড়ায় রাজধানীতে কমতে শুরু করেছে সবজির দাম। তবে বাজারে উত্তাপ ছাড়াচ্ছে মাংসের দাম। গরু ও খাসির মাংসের পাশাপাশি ব্রয়লার মুরগির ঊর্ধ্বমুখী দামে নাকাল মধ্য ও নিম্ন আয়ের মানুষ। এছাড়া চাল, সয়াবিন তেল ও ডালের দামও ঊর্ধ্বমুখী।
শুক্রবার (১৪ জানুয়ারি) রাজধানীর কারওয়ানবাজার, কাঁঠালবাগান ও হাতিরপুলসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে এবং ক্রেতা-বিক্রেতার সাথে আলাপকালে এমন তথ্য জানা গেছে। এছাড়া ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বাজার দরেও উঠে এসেছে এমন চিত্র।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ১৮৫ টাকা। গত সপ্তাহে যা ছিলো ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি। আর খুচরা পর্যায়ে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ক্ষেত্রভেদে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৫২০ টাকায়, পাকিস্তানি কক ২৮ টাকায়, সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৯০ থেকে ৩২০ টাকা। লাল লেয়ার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৪০ থেকে ২৫০ টাকা কেজি। গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫৯০ থেকে ৬০০ টাকায় ও খাসির মাংস ৯৪০ থেকে ৯৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কারওয়ানবাজার কিচেন মার্কেটে কথা হয় নিউ ইস্কাটন এলাকার মনোয়ার হোসেনের সঙ্গে। তিনি বিবার্তাকে বলেন, মাংসের বাজার দিনদিন লাগাম ছাড়িয়ে যাচ্ছে। গরু, খাসির মাংস কিনতে সাহস হয় না। ব্রয়লারের বাজারের অবস্থাও দিনদিন খারাপের দিকে যাচ্ছে। গলিতে ২০০টাকার নিচে কেজিতে ব্রয়লার পাওয়াই যায় না। এখানে (কারওয়ানবাজার) ২০-২৫ টাকা কমে পাওয়া যায়। তাই এখান থেকেই নিতে এসেছি।
ব্রয়লার মুরগির দাম কমছে না কেন? জানতে চাইলে কারওয়ানবাজার কিচেন মার্কেটের ঢাকা ব্রয়লার হাউজের মো. মাছুম বিবার্তাকে বলেন, দাম কেন কমছে না তা উপরওয়ালা জানেন। আমরা প্রায় কিনা দামেই বিক্রি করি। কেজিতে ৫টাকা লাভ করি। দাম বাড়লেও মানুষ কিনে খাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ভাই ভাই পোল্ট্রি হাউজের ইমন দোষ দিলেন বাজার সিন্ডিকেটের। তিনি বলেন, দাম বাড়ুক বা কমুক, আমাদের কিছু করার নেই। যারা বাড়ায় তারা কমালে ব্রয়লারের দাম কমবে। বাজারে বিক্রি আগের মতোই আছে বলে জানান তিনি।
সুশান্তের সঙ্গে মজার ও দুঃখের রাত ছিল সেটা : কৃতি শ্যানন
মাংসের পাশাপাশি চালের বাজার নিয়েও অস্বস্তিতে ক্রেতারা। বাজারে চাল-সরু (নাজির/মিনিকেট) কেজিতে ২ টাকা বেড়ে ৬০-৬৮ টাকায়, মোটা চাল (স্বর্ণা/চায়না/ইরি) ৪৬ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া সয়াবিন তেল ৫ লিটারের বোতল ১০ টাকা বেড়ে ৭১০-৭২০ টাকায়, সয়াবিন তেল (বোতল), ডাল-বড় দানা ৫ টাকা বেড়ে ১০০ থেকে ১০৫ টাকায়, ডাল-মাঝারি দানা ৫ টাকা বেড়ে ১০৫ থেকে ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে অপরিবর্তিত রয়েছে ছোট দানার ডাল।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, শীতের সবজির সরবরাহ বাড়ায় কমতে শুরু করেছে সবজির দাম। বাজারে প্রতি কেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকা, লম্বা বেগুন ৩৫-৪০ টাকা, টমেটো ৪০-৫০ টাকা, মুলা ৩০-৪০ টাকা, শালগম ৩০-৪০ টাকা। এছাড়া ফুলকপি প্রতি পিস ২৫ থেকে ৪০ টাকা, বাঁধাকপি ৩০-৪০ টাকা, চালকুমড়া প্রতি পিস ৩৫-৪০ টাকা, লাউ ৪০-৬০ টাকা ও মিষ্টি কুমড়া ৪০-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া বাজারে কমেছে আলুর দাম। প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ১৮ থেকে ২০ টাকায়। দেশি পেঁয়াজ কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫৫ টাকা, আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, আমদানি করা রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৭০ টাকায়।
এদিকে অপরিবর্তিত রয়েছে মাছের দাম। বাজারে প্রতি কেজি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ১২০০, আকারভেদে রুই ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা, কাতল বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩৪০ টাকা। চিংড়ি আকারভেদে বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা। আর দেশি শিং মাছ ৭০০ টাকা কেজি, কৈ ৫০০ টাকা, টাকি মাছ কেজিপ্রতি ২৫০-৩৫০ টাকায়। তেলাপিয়া বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৭০ টাকা এবং পাঙাশ মাছ কেজিপ্রতি ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে টিসিবির তথ্য মতে, চাল-সরু (নাজির/মিনিকেট), চাল মোটা, সয়াবিন তেল (বোতল), ডাল-বড় দানা, ডাল-মাঝারি দানা, পেঁয়াজ (আমদানি), রসুন (আমদানি) মানভেদে, শুকনা মরিচ (দেশি), আদা (দেশি), জিরা, এলাচ, ধনে, তেজপাতা, রুই, গরু, মুরগি (ব্রয়লার), ডিপ্লোমা (নিউজিল্যান্ড), ডিম (ফার্ম), শসা, আলু এর মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে আটা সাদা (খোলা), ময়দা (খোলা), পাম অয়েল সুপার, ডাল (নেপালি), মুগ ডাল (মানভেদে), পেঁয়াজ (দেশি), শুকনা মরিচ (আমদানি), আদা (আমদানি), ফ্রেশ, এম,এস রড (৪০ গ্রেড), কাঁচা মরিচের মূল্য হ্রাস পেয়েছে। এছাড়া অন্যান্য পণ্যের মূল্য অপরিবর্তিত রয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।