জুমবাংলা ডেস্ক : কোটা সংস্কার আন্দোলনে ১৯ জুলাই রাজধানীর রামপুরায় সহিংসতার শিকার হয়ে বিজিবির গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন রাসেল। স্বামীকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন কুমিল্লার তিতাস উপজেলার জিয়ারকান্দি গ্রামের মুকবুল সরকারের মেয়ে শারমিন আক্তার।
শারমিন বলেন, ১৯ জুলাই শুক্রবার দুপুরেই রাসেলের সঙ্গে আমার শেষ খাবার। স্বামীকে হারিয়ে বাকরূদ্ধ শারমিন কান্নাজড়িত ভাঙ্গা ভাঙ্গা কণ্ঠে স্বামী হারানোর কথা বর্ণনা করেন।
তিনি বলেন, রাসেল বিজ্ঞাপনের কাস্টিং ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করতেন। দুপুর সাড়ে ১২টার পর আমরা এক সঙ্গে খাবার খাই, খাবার শেষে রাসেল খিলগাঁও চৌরাস্তার বাসা থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় আমাকে বলে যায় জুমার নামাজ শেষে নিকেতনে যাবে পাওনা টাকা আনতে। এ কথা বলেই বের হয়ে যায় রাসেল, রামপুরা গিয়ে পৌঁছলে বিজিবির গুলিতে মারা যায় রাসেল। আজ আমার সব স্বপ্ন নিঃস্ব করে দিয়েছে বিজিবি। আমি আমার স্বামী হত্যার বিচার চাই। রাসেলের গ্রামের বাড়ি নরসিংদীর বোলতা দুলালকান্দি গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আনসর আলীর ছেলে।
স্বামীর শোকে বাকরূদ্ধ শারমিনের চোখে মুখে তাকালেই কান্না চলে আসে নিজের অজান্তে।
২০২১ সালের ৮ অক্টোবর পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় রাসেল ও শারমিনের। দাম্পত্য জীবনে তাদের সন্তান না থাকলেও খুব সুখেই কাটছিল তাদের দাম্পত্য জীবন।
রাসেলের এই মৃত্যু মেনে নিতে পারছেনা তার পরিচিতজনরা। এমন দুঃখ ফেসবুকে পোস্ট করেছেন তারা। সুমাইয়া শরিফ তার ফেসবুক আইডি থেকে রাসেলের মৃত ছবি দিয়ে লিখেছেন মো. রাসেল মিয়া, এই ভাইয়ার সঙ্গে লাস্ট কাজ করলাম হরলিক্সের ফটোশুটে, রোজার ঈদের ৪-৫ দিন আগে। মিডিয়াতে কাজ করার কারণে ওনার সঙ্গে কথাবার্তা হয়। আজ হঠাৎ দেখতে পাচ্ছি এই ভাইটা নাকি শহিদ হয়েছে, বিশ্বাস করতে পারছিলাম না।
কেয়া মারজান তার ছেলের সঙ্গে রাসেলের যুগল ছবি দিয়ে লিখেছেন, রাসেল মিয়া আর নেই, নিকেতন যাবার পথে রামপুরাতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। ওনি মিডিয়া কর্মী ছিলেন, আমার বাচ্চারা ওনার কাস্ট করা বেশ কিছু কাজ করেছেন। খুবই ভালোমনের মানুষ ছিলেন রাসেল। তবে তার এই মৃত্যু মেনে নেওয়ার মতো না।
শাহাদাৎ হৃদয় তার ফেসবুক আইডি থেকে রাসেলের সঙ্গে তার যুগল ছবি দিয়ে লিখেছেন, আমার সামনে যে ছেলেটিকে দেখছেন সে আমার ছোট ভাইয়ের মতো। তার নাম রাসেল মিয়া, কাস্টিং ডিরেক্টর। তার সঙ্গে আমার অনেক স্মৃতি আছে। ১৯ জুলাই জুমার নামাজের পর নিকেতন অফিসে যাওয়ার পথে বিজিবির গুলিতে নিহত হয়েছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। আমার এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না। তার এই অকাল মৃত্যু খুবই দুঃখজনক ব্যাপার।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।