রঞ্জু খন্দকার, গাইবান্ধা থেকে : ধীর পায়ে শীত এগিয়ে আসলেও বাজারে এখনো তার প্রভাব নেই। খেত থেকে ওঠেনি রবিশস্যের আবাদ। ফলে বাজারে সবজির দাম এখনো স্বল্প আয়ের মানুষের ধরাছোঁয়ার বাইরে। অবস্থা এমন, সবজির অভাবে আলুভর্তা খেয়ে দিন কাটানোরও উপায় নেই।
কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে গাইবান্ধার বাজারে আলুর দাম আরও বেড়েছে। কার্ডিনাল আলুর দাম খুচরা বাজারে ৬০ থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকা কেজি। বিলেতি আলুও কেজিতে বেড়েছে ৫ টাকা করে। বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা দরে।
সাঘাটা উপজেলার মিয়ার বাজারের ক্রেতা মোখলেছুর রহমান বলেন, তিনি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালিয়ে সংসার চালান। বাজারের যে অবস্থা, তাতে শীত যে চলে আসছে, বোঝারই উপায় নেই। এখনো বাজারে শীতের সবজি নেই। উপরন্তু আলুর দাম আরও বেড়েছে।
একই বাজারে গিয়েছিলেন মিজানুর রহমান। তিনি কামলা দিয়ে সংসার চালান। তিনি বলেন, আগে ঘরে তরিতরকারি না থাকলে অন্তত আলুভর্তা করে ভাত খাওয়া যেত। এখন সে উপায়ও নেই। আলুর দামই অনেক বেশি।
গাইবান্ধার কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে ফুলকপি নামলেও দাম ৭০ টাকা কেজি। মুলা এখনো ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বেগুন ৬০ টাকা কেজি।
পলাশবাড়ীর তালুকজামিরা বাজারে কথা হয় সঞ্চয় মাহমুদের সঙ্গে। তিনি তালুকজামিরা উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। তিনি বলেন, বাজারে কোনো কিছুতেই হাত দেওয়ার জো নেই। দাম শুনে নাভিশ্বাস ওঠে।
ব্যাগের নিচে পড়ে থাকা সামান্য বাজার দেখিয়ে সঞ্চয় বলেন, এইটুকু বাজার কিনতেই শ দেড়েক টাকা চলে গেছে।
একই বাজারের ব্যবসায়ী আনারুল ইসলাম জানান, এখন আগাম আলু লাগানোর মৌসুম। আলুর গুদামেও পর্যাপ্ত আলু নেই। ফলে বাজারে আলুর সংকট রয়েছে। এ কারণেই দাম বেশি।
একই উপজেলার চৌরাস্তা বাজারে গিয়ে দেখা যায়, কাঁচা মরিচের পোয়া ৩৫ টাকা। পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা কেজি।
এই বাজারের বিক্রেতা শফিকুল ইসলাম বলেন, তিনি পলাশবাড়ীর চতরা, সাদুল্যাপুরের ধাপেরহাটসহ বড় মোকাম থেকে পণ্য কিনে এনে বিক্রি করেন। এসব অঞ্চল রবিশস্যের বড় আবাদের জন্য পরিচিত। এসব এলাকায় শীতের সবজি নামতে আরও দেরি আছে। পাইকারি বাজারে মরিচ, পেঁয়াজেরও দাম বেশি।
এই বাজারের ক্রেতা শামসুল আলম বলেন, শুধু আলুভর্তা করতেও আলু, লবণ, মরিচ ও পেঁয়াজ লাগে। কিন্তু এর কোনোটিই ধরাছোঁয়ার মধ্যে নেই। মানুষ যে আলুভর্তা খেয়ে দিন কাটাবে, সেই উপায়ও নেই।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।