গত জুলাই আগস্টে ছাত্র জনতার গণ-অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতা বিরোধী অপরাধের মামলার পলাতক আসামী ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও গ্রেফতার সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন বিষয়ে পরবর্তী শুনানি সোমবার।
মঙ্গলকবার (১ জুলাই) বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ অভিযোগ গঠন বিষয়ে প্রসিকিউসন পক্ষে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
শুনানিতে তিনি আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আবেদন জানান। এরপর শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানির রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী সময় চাইলে ট্র্যাইব্যুনাল এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী সোমবার দিন ধার্য করেন।
ট্র্যাইব্যুনালে শেখ হাসিনার পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন।
আমির হোসেন বলেন, আগামী সোমবার (৭ জুলাই) আমরা এই মামলা থেকে শেখ হাসিনাকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন জানাব। আমার মক্কেলদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা সঠিক নয়। তাদের খালাস করার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করবো। পরবর্তী শুনানির দিন শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কমালকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করা হবে।
গত ১৬ জুন ট্র্যাইব্যুনাল-১ পলাতক শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালকে আগামী সাত দিনের মধ্যে হাজির হতে একটি বাংলা ও একটি ইংরেজি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেন এবং পরদিন দুটি পত্রিকায় শেখ হাসিনা ও কামালকে ৭ দিনের মধ্যে আত্মসমর্পণ করতে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়।
তবে বিজ্ঞপ্তি দেয়ার পরেও পলাতক দুই আসামী ট্র্যাইব্যুনালে হাজির না হওয়ায় ট্র্যাইব্যুনাল ১ জুলাই অভিযোগ গঠন বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য করেন।
সে ধারাবাহিকতা আজ শুনানি শেষে আদেশ দিলেন ট্র্যাইব্যুনাল-১।
জুলাই আগস্টে ছাত্র জনতার গণ-অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতা বিরোধী অপরাধের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গত ১ জুন আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফর্মাল চার্জ) আমলে নেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
শেখ হাসিনার পাশাপাশি এই মামলায় অভিযুক্ত সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগে মানবতা বিরোধী অপরাধের ৫টি অভিযোগ আনে প্রসিকিউসন।
এদিন প্রথম ট্র্যাইব্যুনালের ববিচারিক কার্যক্রম বিটিভিতে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করা হয়।
পুনর্গঠিত ট্রাইব্যুনালে গণ-অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতা বিরোধী অপরাধের অভিযোগে প্রথম মামলাটি (মিস কেস বা বিবিধ মামলা) হয় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে।
জুলাইকে গণজাগরণ ও ঐক্যের মাসে পরিণত করার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
এই মামলাটি ছাড়াও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা রয়েছে।
যার মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগ শাসনামলের সাড়ে ১৫ বছরে গুম-খুনের ঘটনায় তাকে আসামি করা হয়েছে।
অন্য মামলাটি হয়েছে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায়।
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন নির্মূলে আওয়ামী লীগ সরকার, তার দলীয় ক্যাডার ও সরকারের অনুগত প্রশাসনসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতা বিরোধী অপরাধ সংগঠিত করে বলে একের পর এক অভিযোগ জমা পড়ে।
জাজ্জ্বল্যমান এসব অপরাধের বিচার অনুষ্ঠিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।