মোঃ আব্দুল মান্নান: বাংলাদেশ দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় ইউনিয়ন লিমিটেড- মিল্কভিটার চেয়ারম্যান শেখ নাদির হোসেন লিপু বলেছেন, ‘বাংলাদেশ যে উন্নত বিশ্বের একটি দেশ হবে, সেই বীজ বপন করেছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ৭৫ এর ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হলেও বিদেশে থাকায় বেঁচে যান তাঁর দুই কন্যা। সেই দুই কন্যার একজন শেখ হাসিনা। এই শেখ হাসিনার হাত ধরে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নগুলো একে একে পূরণ হচ্ছে।’
ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির সৌজন্যে অনলাইন নিউজ পোর্টাল জুমবাংলার বিশেষ ফেসবুক লাইভের ১৩৩তম পর্বে মিল্কভিটার চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন উপলক্ষে ২৮ সেপ্টেম্বর রাতে এ লাইভ ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি ও জুমবাংলাডটকমের ফেসবুক পেইজ থেকে একযোগে সম্প্রচারিত হয়। অনুষ্ঠানের শিরোনাম ছিল ‘সংগ্রামে ও সাফল্যে শেখ হাসিনা’।
মিল্কভিটার চেয়ারম্যান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহুবার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। তাঁকে লক্ষ্য করে চালানো গুলি তাঁর কানের পাশ দিয়ে চলে গেছে। গ্রেনেড ছোঁড়া হয়েছে। এসব করা হয়েছে এ দেশকে একটি বিশেষ দেশের গোলামী রাষ্ট্রে পরিণত করার চিন্তা থেকে। যারা আমাদের ত্রিশ লাখ মানুষকে হত্যা করেছে, যারা আমাদের দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানি করেছে, এ দেশকে তাদেরই গোলাম বানিয়ে রাখতে চেয়েছিল শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টাকারীরা।’
শেখ নাদির হোসেন লিপু আরও বলেন, ‘বাংলাদেশকে উন্নত দেশের কাতারে উন্নীত করার বীজ বপণ করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধু যে বাংলাদেশ করতে চেয়েছিলেন সে বাংলাদেশ তাঁর কন্যার হাত দিয়ে সম্পন্ন হবে বলে হয়তো আল্লাহ তাঁকে বাঁচিয়ে রেখেছেন।’
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে এসে তাঁর সঠিক সিদ্ধান্ত, সঠিক নেতৃত্ব, বলিষ্ট পদক্ষেপ, সাহস, মেধা ও বুদ্ধি দিয়ে আজ বাংলাদেশকে এ পর্যায়ে নিয়ে এসেছে।’
মিল্কভিটার চেয়ারম্যান বলেন, ‘উন্নয়ন এখন দেশের ১৮ কোটি মানুষের প্রত্যেকের কাছে দৃশ্যমান। এই বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার যিনি কারিগর, যিনি নেতৃত্বদানকারী তিনি হচ্ছেন আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাকে আপনি কোন বিশেষণে বিশেষিত করবেন, তার নামের আগে কোন অ্যাডজেকটিভ দিয়ে আপনি তাকে ভূষিত করবেন সেটা আমি জানিনা। সত্যিকার অর্থে আমরা যদি আমাদের চারদিকে দৃষ্টিপাত করি তাহলে আমরা তার উন্নয়ন কর্মকান্ডগুলো দেখতে পারব।’
‘আজকে যে পদ্মা ব্রিজ হয়েছে সেইটাকে বন্ধ করে দিতে মিথ্যা দুর্নীতির অভিযোগ এনে দেশি-বিদেশি অনেকেই ষড়যন্ত্র হয়েছিল। সেটিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে নিজস্ব অর্থে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আজ তা বাস্তবায়ন করেছেন। কিছুদিনের মধ্যে এই ব্রিজ দিয়ে যান চলাচল শুরু হলে দক্ষিণাঞ্চলসহ পুরো বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাবে,’ যোগ করেন তিনি।
শেখ লিপু বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ কোনদিন কল্পনাও করতে পারেনি বিদেশের মতো ঢাকায়ও মেট্রোরেল চলবে। এখন এটি সময়ের ব্যাপার মাত্র। কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে টানেল নির্মিত হচ্ছে যেটি কেবলমাত্র শেখ হাসিনার মতো একজন বলিষ্ঠ নেতৃত্বের মাধ্যমেই সম্ভব। ১০/১২ বছর আগে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ ছিল না, বিদ্যুতের অভাব ছিল। এখন ১ সেকেন্ডের জন্যেও বিদ্যুৎ যায় না। তিনি যে বঙ্গবন্ধুর মেয়ে সেটি তিনি তাঁর উন্নয়ন কর্মকান্ডের মাধ্যমে প্রমাণ করে দিয়েছেন।’
অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপপ্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মোহাম্মাদ আমিনুল ইসলাম আমিন।
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার জীবনটাকে কয়েকটি ভাগে বিভক্ত করা যায়। প্রথমটি হলো-তাঁর শৈশব ও কৈশোর। দ্বিতীয়টি – ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনের পর এক-দেড় বছরের জন্য একজন মন্ত্রীর মেয়ে। তৃতীয়টি- লাগাতার ১৩ বছর কারাগারে থাকা একজন মজলুম জননেতার মেয়ে। চতুর্থ- সাড়ে তিন বছর ক্ষমতায় থাকা বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির কন্যা। যখন তিনি একজন মজলুম জননেতার কন্যা ছিলেন, তখনো তিনি সংগ্রামের মধ্যেই ছিলেন।’
আমিনুল ইসলাম আমিন আরও বলেন, ‘এখন আমাদের চলমান রাজনীতির কথা ভাবুন। আমাদের যারা নেতা বা এমপি বা মন্ত্রী- তারা সন্তানদের বিদেশে পাঠিয়ে দেন। সেখানে সন্তানেরা সোনার চামুচ মুখে দিয়ে পড়াশোনা করে। তারপর নেতা-মন্ত্রী বাবা-মা মারা গেলে দেশে এসে তারাও অনেক কিছু হয়ে যাচ্ছে। শেখ হাসিনার সময়টা কিন্তু তেমন ছিল না। বঙ্গবন্ধু কিন্তু আমাদের সেই রাজনীতি শেখাননি।’
আওয়ামী লীগের এ কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, ‘স্বাধীনতা পূর্ববর্তী সময়ে বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতিতে ছাত্র ইউনিয়নের একটা দাপট ছিল। প্রায় সব কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসংসদ নির্বাচনে তারা জয়ী হতো। সেই সময়ে শেখ হাসিনা বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় মহিলা কলেজ ইডেন কলেজের ছাত্রসংসদের নির্বাচিত ভিপি ছিলেন। বলতে গেলে শেখ হাসিনার জীবনের পুরোটা সংগ্রামে ভরপুর।’
শেখ হাসিনার সাফল্যের বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরে আমিনুল ইসলাম আমিন বলেন, ‘ভবিষ্যতে অনেকেই রাষ্ট্রপতি হবেন, প্রধানমন্ত্রী হবেন কিন্তু আমি চ্যালেঞ্জ নিয়ে বলতে পারি, আগামী একশ বছরে বাংলাদেশ একজন শেখ হাসিনা পাবে না। তাই শেখ হাসিনা শুধু আমার কাছে একজন প্রধানমন্ত্রীই নন, বাঙালির কাছে তিনি শুধু একজন রাষ্ট্রনায়কই নন, শেখ হাসিনা বাঙালির কাছে অধরা এক স্বপ্নের নাম, আমাদের কাছে অন্তহীন এক অনুপ্রেরণার নাম।’
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা ন্যায় নীতির জায়গায় দাঁড়িয়ে সততার সাথে অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করা এক শক্তির প্রেরণার নাম। আমি ভারতের প্রয়াত রাষ্ট্রপতি এপিজে আবুল কালাম আজাদের একটি উক্তি দিয়ে শেখ হাসিনা সম্পর্কে বলতে চাই, স্বপ্ন সেটা নয় যেটা মানুষ ঘুমিয়ে দেখে, স্বপ্ন সেটাই যেটা মানুষকে ঘুমোতে দেয়না। তিনি বাংলার মানুষকে স্বপ্ন দেখান এবং সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য তিনি ঘুমান না, তিনি জেগে থাকেন। তিনি ঘুমান না বলেই আমরা শান্তিতে ঘুমাতে পারি।’
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির জনসংযোগ পরিচালক সাজেদ ফাতেমী।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



