জুমবাংলা ডেস্ক : আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৮তম জন্মদিন আজ। ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় তার জন্ম। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছার বড় সন্তান তিনি।
শেখ হাসিনার শিক্ষাজীবন শুরু হয়েছিল টুঙ্গিপাড়ার এক পাঠশালায়। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়ে পরিবারকে ঢাকায় নিয়ে আসেন। তখন পুরান ঢাকার রজনী বোস লেনে ভাড়া বাসায় ওঠেন তারা। বঙ্গবন্ধু যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রিসভার সদস্য হলে সপরিবারে ৩ নম্বর মিন্টো রোডের বাসায় বসবাস শুরু করেন। শেখ হাসিনাকে ঢাকা শহরে টিকাটুলীর নারী শিক্ষা মন্দিরে ভর্তি করা হয়। এখন এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি শেরেবাংলা গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ নামে খ্যাত।
তিনি ১৯৬৫ সালে আজিমপুর বালিকা বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক, ১৯৬৭ সালে ইন্টারমিডিয়েট গার্লস কলেজ (বর্তমান বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা মহাবিদ্যালয়) থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করেন। ওই বছরই তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে অনার্সে ভর্তি হন এবং ১৯৭৩ সালে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন।
বঙ্গবন্ধুর আগ্রহে ১৯৬৮ সালে পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার সঙ্গে বিয়ে হয় হাসিনার। বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৯৭১ সালের ২৭ জুলাই শেখ হাসিনার প্রথম সন্তান জয়ের জন্ম হয়। আর কন্যা সন্তান পুতুলের জন্ম হয় ১৯৭২ সালের ৯ ডিসেম্বর।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সবাই হত্যাকাণ্ডের শিকার হলেও দেশের বাইরে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান শেখ হাসিনা ও তার ছোটবোন শেখ রেহানা।
এরপর প্রায় ছয় বছর জার্মানি ও ভারতে নির্বাসিত জীবনযাপনের পর ১৯৮১ সালে হাসিনা দেশে ফিরে আসেন। এর আগে তার অনুপস্থিতিতেই সম্মেলনের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। দেশে ফিরে তিনি দল পুনর্গঠনের কাজ শুরু করেন। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন শেখ হাসিনা। ২০০৮ সালে দ্বিতীয়বার, ২০১৪ সালে তৃতীয়বার, ২০১৮ সালে চতুর্থবার এবং চলতি বছরে পঞ্চমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হন তিনি।
রাজনীতির পাশাপাশি শেখ হাসিনা লেখালেখিও করেন। তার লেখা ও সম্পাদিত গ্রন্থের সংখ্যা ৩০টিরও বেশি। প্রকাশিত অন্যতম বইগুলো হচ্ছে—শেখ মুজিব আমার পিতা, সাদা কালো, ওরা টোকাই কেন, বাংলাদেশে স্বৈরতন্ত্রের জন্ম, দারিদ্র্য দূরীকরণ, আমাদের ছোট রাসেল সোনা, আমার স্বপ্ন আমার সংগ্রাম, সামরিকতন্ত্র বনাম গণতন্ত্র, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক উন্নয়ন, বিপন্ন গণতন্ত্র, সহে না মানবতার অবমাননা, আমরা জনগণের কথা বলতে এসেছি, সবুজ মাঠ পেরিয়ে ইত্যাদি।
২০০৮ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকাকালে প্রতি বছর বর্ণাঢ্য আয়োজনে শেখ হাসিনার জন্মদিন উদযাপন হয়ে এসেছে। তবে গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। সেই প্রেক্ষাপটে তার এবারের জন্মদিন ঘিরে নেই কোনো উচ্ছ্বাস বা আয়োজন। যদিও যথাযোগ্য মর্যাদায় দিনটি উদযাপনের জন্য সর্বস্তরের নেতাকর্মী, সমর্থক ও দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে আওয়ামী লীগ।
দলটির ফেসবুক পেজ থেকে এমন আহ্বান জানিয়ে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ু ও সুস্বাস্থ্য কামনা করে তার জন্মদিনে দেশের সব মসজিদ, মন্দির, প্যাগোডা, গির্জায় দোয়া ও প্রার্থনার আয়োজন করা হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।