চেনা গণ্ডির বাইরে বাংলাদেশের মধ্যে দারুণ কিছু ভ্রমণ গন্তব্য রয়েছে। এসব গন্তব্য যোগ হতে পারে আপনার এ বছরের ভ্রমণের তালিকায়। সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, মানসিকভাবে সুস্থ থাকার জন্য ভ্রমণ সবচেয়ে সহায়ক পথ্য হিসেবে কাজ করে। ভ্রমণ তাই যাপনের এক অপরিহার্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অন্যতর রোমাঞ্চের স্বাদ নিতে চলে যেতে পারেন এসব গন্তব্যে।
গারো পাহাড়ঘেরা শেরপুর জেলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ভ্রমণপিপাসুদের মুগ্ধ করে সব সময়। সুউচ্চ গারো পাহাড়, ঢেউ খেলানো সবুজের সমারোহ, ছোট নদী ঢেউফা, ভোগাই সঙ্গে গারো, হাজং, কোচ সম্প্রদায়ের আদিবাসীদের নিয়েই শেরপুর। ভারতের মেঘালয় রাজ্যের সীমান্তবর্তী প্রান্তিক এই জেলায় ছড়িয়ে–ছিটিয়ে রয়েছে অসংখ্য ছোট বড় টিলা, শাল–গজারির বন, পাহাড়ের নিচে বিস্তৃত সবুজ প্রান্তর।
আর এই সব পাহাড় ও টিলার মধ্যে অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয়দের সবচেয়ে বেশি আকর্ষণ করে রাজার পাহাড়। গারো পাহাড়ে যতগুলো পাহাড় আছে তার মধ্যে রাজার পাহাড়ের উচ্চতা সবচেয়ে বেশি। এ পাহাড়ের বৈশিষ্ট্য সিলেট বা বান্দরবানের পাহাড়ের মতো না হলেও, সবুজের ঐশ্বর্যে কারও চেয়ে কম নয়।
শেরপুর জেলার শ্রীবরদী পৌর শহর থেকে মাত্র ১৪ কিলোমিটার দূরে কর্ণঝোরা বাজারসংলগ্ন এলাকায় রাজার পাহাড়ের অবস্থান। শহুরে পর্যটকদের কাছে এখনো এই পাহাড় খুব পরিচিত না হলেও, স্থানীয় লোকজনের কাছে এটি জনপ্রিয় বিনোদন স্পট। বছরে প্রায় সব সময়ই শত শত মানুষ রাজার পাহাড়ের কোলে নির্মল পরিবেশে বেড়াতে আসেন।
কিংবদন্তি আছে, প্রাচীনকালে এখানে এক স্বাধীন রাজ্য ছিল; যার রাজা ছিলেন অত্যন্ত প্রতাপশালী। পরে তাঁর নামানুসারেই এ পাহাড়ের নাম হয় রাজার পাহাড়। পাহাড়ের পাশেই আছে আদিবাসী জনপদ বাবেলাকোনা। অসংখ্য উঁচু টিলায় ঘেরা অন্যবদ্য এই গ্রাম প্রকৃতির উজাড় করা সৌন্দর্যে ভরপুর। বাবেলাকোনায় গারো, হাজং ও কোচ অধ্যুষিত আদিবাসীদের বিচিত্র জীবন ও সংস্কৃতিতে সমৃদ্ধ। আদিবাসীদের সংস্কৃতি, সংরক্ষণ ও চর্চার জন্য আছে বাবেলাকেনা কালচারাল একাডেমি, জাদুঘর, লাইব্রেরি, গবেষণা বিভাগ ও মিলনায়তন। এখান থেকে আদিবাসীদের সম্পর্কে জানা যাবে অনেক কিছু।
রাজধানী ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ হয়ে শেরপুরে যাওয়াই সবচেয়ে ভালো। এ ছাড়া উত্তরবঙ্গ থেকে টাঙ্গাইল-জামালপুর হয়েও সড়কপথে যাওয়া যাবে শেরপুরে। দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে বাসে কিংবা গাড়িতে করে আসা যায় শেরপুর শহরে। এখান থেকে মাত্র ৩৪ কিলোমিটার দূরে শ্রীবরদীর কর্ণঝোরা বাজার। সেখান থেকে বাস, টেম্পোসহ অটোরিকশা নিয়ে চলে যাওয়া যাবে রাজার পাহাড় থেকে বাবেলাকোনায়।
রাজার পাহাড় এলাকার পাশেই পর্যটকদের থাকার জন্য আছে অবসর কেন্দ্র। সেখানে পূর্ণ নিরাপত্তাবেষ্টিত কয়েকটি আবাসিক ভবন আছে। এ ছাড়া শ্রীবরদী উপজেলা সদরের ডাকবাংলোতেও থাকতে পারবেন। যদিও এর জন্য আগে স্থানীয় ইউএনওর অনুমতি লাগবে। নইলে শেরপুর জেলা সদরে বেশ কয়েকটি উন্নত মানের আবাসিক হোটেল রয়েছে। যেখানে নিশ্চিন্তে রাত্রিযাপন করা যাবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।